কলকাতা, ১৭ এপ্রিল:- একদিকে ডিজেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কা থেকে সাধারণ মানুষ ও বাসমালিকদের কিছুটা রেহাই দেওয়া। অন্যদিকে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে পরিবেশ দূষণে লাগাম টানা। এক ঢিলে এই দুই পাখি মারতে বড়সর পদক্ষেপ করল রাজ্য সরকার। সরকারি উদ্যোগেই রাজ্যে এই প্রথম বেসরকারি বাস রুটে সিএনজি চালিত বাস চলাচল শুরু হচ্ছে। চলতি মাসের শেষেই শহরে ৫টি এধরণের বাস চলাচল শুরু হবে বলে পরিবহন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। পরিবেশ বান্ধব এই বাস কেনার জন্য বেসরকারি বাস মালিকদের এককালীন অনুদান এবং সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া হবে। কয়েকদিনের মধ্যেই এব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জানা গিয়েছে ৩২ আসন বিশিষ্ট নতুন এই বতানুকুল বাস গুলি উল্টোডাঙার ১৫ নম্বর বাস স্ট্যান্ড থেকে করুণাময়ী হয়ে শাপূর্জি পর্যন্ত চলবে। ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির নিরিখে তুলনামূলক সস্তা এবং পরিবেশ বান্ধব সিএনজি চালিত বাস নামানোর রাজ্য সরকারের পরিকল্পনাকে বেসরকারি বাস মালিকেরা স্বাগত জানিয়েছেন। ১৯ এপ্রিল ইনডোর থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেবে বাসগুলি।
স্যাসি বানাচ্ছে ‘আইচার’ সংস্থা আর বডি বানাচ্ছে ‘অডি’ সংস্থা। বাসগুলি। রুটের দৈর্ঘ্য ১৭ কিলোমিটার। এই প্রথম বেসরকারি মালিকের হাতে সরকারি সিএনজি বাস চলবে। জানা গিয়েছে, বাসগুলি একদিকে যেমন পরিবেশবান্ধব, তেমনই সৌখিন, আরামদায়ক। খরচ ডিজেল চালিত বাসের থেকে কিছুটা কম। ডিজেলে এই বাস যত কিলোমিটার যায় তার থেকে কুড়ি শতাংশ বেশি সিএনজিতে। ডিজেলের লিটার ১০০ টাকা পেরিয়েছে, সেখানে সিএনজি ৭৪ টাকা প্রতি কেজি। এতে অনেকটাই আর্থিক সাশ্রয় হবে বলে ধারনা বাস মালিকদের। বাসের মালিকদের বক্তব্য, বাস রুটে না চালানো পর্যন্ত লাভ-ক্ষতির হিসাবটা তাঁরা জানতে পারছেন না। সিটি সুবারবার্ন বাস সার্ভিসের সাধারণ সম্পাদক টিটো সাহা জানান, ‘পরিবহণ মন্ত্রীর সদর্থক ভূমিকাকে স্বাগত জানাই।
পরিবহণ দফতর উল্টোডাঙ্গার ১৫ নম্বর সরকারি বাস স্ট্যান্ড ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। যাত্রীরা ওখান থেকেই এই বাস ধরতে পারবে।’ প্রতিটি বাসের ভিতর থাকছে সিসি ক্যামেরা। ৩২ জন যাত্রী বসতে পারবেন। একটি সিটের থেকে আরেকটি সিটের মধ্যে অনেকটাই পার্থক্য থাকছে। ফলে যাত্রীরা স্বচ্ছন্দে বসতে পারবেন। অনেক বাসেই পা রাখার ক্ষেত্রে অসুবিধা হয়, অর্থাৎ লেগ-স্পেস কম থাকে, কিন্তু এই বাসে লেগ-স্পেস যথেষ্ট! ওই রুটে সর্বনিম্ন ২০টাকা ও সর্বোচ্চ ৩৫ টাকা ভাড়া হবে। প্রতিটি বাসে ১৬.২ কেজি করে চারটি গ্যাসের ট্যাংক থাকছে। প্রতি কেজিতে বাস চলবে ৫-৫.৫ কিলোমিটার। ১০০ কিলোমিটার যেতে ১৫০০ টাকার গ্যাস লাগবে। কিন্তু ওই রাস্তা যেতে ২৫০০ টাকার ডিজেল লাগবে। অতএব এই বাসে জ্বালানি খরচ কিছুটা সাশ্রয় করে লাভের মুখ দেখতে পাবেন বলে আশা করছেন বেসরকারি বাস মালিকরা।