এই মুহূর্তে কলকাতা

হাউসহোল্ড খাতে অর্থ বরাদ্দ নিয়ে রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের মধ্যে পুনরায় সংঘাতের পরিস্থিতি।

কলকাতা , ২৮ সেপ্টেম্বর:- রাজভবনের দৈনন্দিন খরচ বা হাউসহোল্ড খাতে অর্থ বরাদ্দ নিয়ে রাজ্যপাল রাজ্য সরকারের মধ্যে পুনরায় সংঘাতের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। রাজভবনের দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন বাড়তি প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার বেশি অর্থ মঞ্জুরের আরজি রাজ্য সরকার নাকচ করে দিয়েছে। কোভিদ মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের বিপুল খরচের কারণ দেখিয়ে এখন বাড়তি টাকা দেয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে নবান্ন। এই নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ফের তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে হাউজহোল্ড খাতে বরাদ্দ অর্থ প্রায় নিঃশেষিত হয়ে যাওয়ায় নবান্নের কাছে তিনটি খাতে অতিরিক্ত ৫৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা চেয়ে আবেদন করেছিলেন রাজ্যপাল ধনখড়ের সচিব সতীশ তেওয়ারি। সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার জানিয়েছে, অতিরিক্ত টাকা দিতে তারা ‘অপরাগ’ ২৫ সেপ্টেম্বর রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন ব্যানার্জি রাজভবনে চিঠি লিখে জানান, করোনার কারণে ব্যয় সঙ্কোচের পথে হাঁটছে রাজ্য সরকার। তাই কোনও দফতরকেই এখন অতিরিক্ত বরাদ্দ করা সম্ভব নয়।

অর্থ দফতর সূত্রে খবর, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে রাজভবনের জন্য সাড়ে ১৬ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ হয়েছিল। করোনা পরিস্থিতিতে অর্থ দফতর বেতন-পেনশন ছাড়া সব খাতের খরচ ৫০ শতাংশ ছাঁটাই করেছে। সেই তালিকা থেকে বাদ যায়নি রাজভবনও। ২২ সেপ্টেম্বর রাজ্যপালের সচিব সতীশ তেওয়ারি স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন ব্যানার্জিকে চিঠি লিখে জানান, একাধিকবার জানানো সত্ত্বেও অর্থ বরাদ্দের ব্যাপারে কোনও উচ্চবাচ্য করেনি সরকার। রাজভবনের উত্তরে স্বরাষ্ট্র সচিব জানান, ব্যয় সঙ্কোচ চলছে, তাই রাজভবনের জন্য এখনই অর্থ বরাদ্দ করা সম্ভব নয়। জানা যাচ্ছে, রাজ্যের কাছে গেরস্থালি পরিচালনা, বিনোদন খাত এবং অন্যান্য চুক্তিমূলক খাতের জন্য সব মিলিয়ে ৮৭ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা চেয়ে পাঠায় রাজভবন। তার মধ্যে ব্যয় সঙ্কোচের ফলে বাজেট কাটছাঁট করার পরেও প্রায় ৩৪ লক্ষ টাকা রাজভবনের পাওনা বলে নবান্নে পাঠানো চিঠিতে দাবি করা হয়েছে। নবান্ন অবশ্য জানিয়েছে এই টাকা দেওয়া এখন সম্ভব নয়।

রাজ্যপাল ধনখড় বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া দিয়ে বলেন, গত কয়েকমাস ধরে রাজভবনকে বিভিন্ন উপায়ে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। রাজভবনে এখন একজন আইএএস এবং একজন ডব্লিউবিসিএস অফিসার কাজ করেন। ৫০ শতাংশ কর্মী নেই। তারপরেই ধনখড় জানান, এই তহবিল নিয়ে যুক্তিযুক্ত সমাধানের জন্য তিনি ‘যথাস্থানে’ আলোচনা করবেন। সরকার পক্ষের প্রশ্ন, করোনা পরিস্থিতিতে যখন বেতন ও পেনশন ছাড়া সমস্ত খাতে ব্যয় বরাদ্দ কাটছাঁট করা হয়েছে সেখানে রাজভবন কী ভাবে অতিরিক্ত অর্থ চেয়ে পাঠায়? তৃণমূল শিবিরের কটাক্ষ, কেন্দ্র রাজ্যের প্রাপ্য অর্থ দিয়ে দিলেই রাজভবনের দাবি নবান্ন মিটিয়ে দেবে। রাজ্যপাল বরং কেন্দ্রীয় অর্থের জন্য দিল্লিতে তদ্বির করুন।