এই মুহূর্তে জেলা

চিকিৎসার গাফিলতিতে রুগীর মৃত্যুর অভিযোগ এসএসকেএমে, ট্রমা কেয়ার ভাংচুর, গ্রেপ্তার ৫।


সুদীপ দাস, ৫ ডিসেম্বর:- চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ এবার খোদ এসএসকেমের বিরুদ্ধে। রাজ্য সরকারের সর্বোচ্চ সুবিধাসম্পন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলল ব্যান্ডেলের মানসপুর বস্তির মানুষ। স্থানীয় সূত্রে খবর গত বুধবার দুপুরে এক বান্ধবীকে বাইকে চাপিয়ে কোলকাতার দিকে যাচ্ছিলেন ব্যান্ডেল মানসপুর বস্তির বাসিন্দা পেশায় অটো চালক মহঃ আরমান (২৬)। দিল্লী রোড ধরে যাওয়ার পথে শ্রীরামপুর বাঙ্গিহাটি মোড়ে একটি ম্যাটাডোর আরমানের বাইকের পিছনে ধাক্কা মারে বলে অভিযোগ। ঘটনায় রাস্তায় ছিটকে পরেন আরমান সহ তাঁর বান্ধবী। স্থানীয় পেয়ারাপুর ফাঁড়ির পুলিশ তড়িঘড়ি দু’জনকে উদ্ধার করে শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাঁদের শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ঘন্টাখানেক পরই ওয়ালস থেকে সোজা কলকাতার পিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় মহঃ আরমানকে। আরমানের বান্ধবীকে নিয়ে যাওয়া হয় কোলকাতার একটি বেসরকারী নার্সিং হোমে।

সেখানে তাঁর একটি পা বাদ যায়। অন্যদিকে বুধবার থেকেই পিজির ট্রমা কেয়ারে ভর্তি ছিলেন আরমান। গতকাল গভীর রাতে পিজির ট্রমা কেয়ারেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন আরমান। সোমবার সকালে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে পিজির ট্রমা কেয়ারে ভাঙচুর করা হয়। ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে হস্তক্ষেপ করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন অনেক টাকা খরচ করে ট্রমা কেয়ার বানিয়েছি, সেখানে ভাঙচুরের ঘটনা ঠিক হয়নি। পাশাপাশি সেসময় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও ট্রমা কেয়ারে সিনিয়র ডাক্তার কেন ছিল না সেবিষয়ে প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।

একই সাথে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে সুনিশ্চিত করেন তিনি। উত্তেজনার বশে পিজিতে যাই হোক না কেন এদিন ব্যান্ডেলের মানসপুর বস্তিতে কিন্তু গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে। আরমানের বাড়ির সামনে মানুষের থিকথিকে ভিড়। বাড়ির কাছে চেয়ারে বসে কথা হারিয়েছেন আরমানের বাবা। এদিন মৃত আরমানের বন্ধু দেব সিং মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন গোটা পশ্চিমবঙ্গের সেরা হাসপাতালে জুনিয়ার ডাক্তাররা ছিলেন। কিন্তু সিনিয়র ডাক্তারদের সেখানে থাকা উচিত ছিল। চিকিৎসার গাফিলতিতেই আরমান চলে গেল। আমাদের এখনও বিশ্বাসই হচ্ছে না যে আরমান আমাদের মধ্যে নেই। অন্যদিকে আরমানের প্রতিবেশী দিনেশ ঝাঁ বলেন পিজি হাসপাতালের প্রতি আমাদের অগাধ ভরসা। কিন্তু সেখানেই কিনা চিকিৎসার গাফিলতিতে আরমান চলে গেল।