এই মুহূর্তে কলকাতা

১ ডিসেম্বর থেকে রাজ্যজুড়ে বাণিজ্যিক গাড়ির পারমিট ও পুননবীকরণের কাজ সপূর্ণ অনলাইনেই হবে।

কলকাতা, ৭ সেপ্টেম্বর:- চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে রাজ্যজুড়ে যাবতীয় বাণিজ্যিক গাড়ির নতুন পারমিট এবং পারমিট পুনর্নবীকরণ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অনলাইনে হবে। দালালচক্রের অবসান ঘটিয়ে এই প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে পরিবহন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। এতদিন এই সমস্ত পারমিট পরিবহন দফতরের আঞ্চলিক অফিসে (আরটিও) এসেই নিতে হত সাধারণ মানুষকে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ উঠছিল এই কাজে আরটিও অফিসগুলি দুর্নীতির বাসা হয়ে উঠেছে। ঘুষ দিয়েই মিলত পারমিট। অভিযোগ পেয়েই নড়েচড়ে বসে নবান্ন। অবশেষে যাবতীয় পারমিট প্রক্রিয়া অনলাইনে করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পরিবাহন দফতরকে। অবশেষে রাজ্য়ের দীর্ঘদিনের পারমিট রীতি বদল হচ্ছে এই সিদ্ধান্তের ফলে। ২০২৬-১৭ অর্থবর্ষ থেকেই ‘বাহন’ এবং ‘সারথি’ নামে দু’টি সফটওয়্যার চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

যার মাধ্যমে গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পেতে আবেদনকারীকে আর সরকারি অফিসে হত্যে দিয়ে পড়ে থাকতে হচ্ছে না। এবার পারমিটের ক্ষেত্রেও অনলাইন প্রক্রিয়া চালু হলে আঞ্চলিক দপ্তরগুলিতে ভিড় অনেক কমবে। করোনা আবহে সংক্রমণ রুখতে যা অত্যন্ত কার্যকরী বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, যে কোনও বাণিজ্যিক গাড়ি নির্দিষ্ট রুটে নামানোর জন্য পরিবহণ দপ্তরের কাছে পারমিটের জন্য আবেদন করতে হয়। বিভাগীয় কর্তারা তা খতিয়ে দেখে ১৮০ দিনের মধ্যে ছাড়পত্র দেয়। বিভিন্ন গাড়ির পারমিট ফিও আলাদা আলাদা। মেয়াদ থাকে পাঁচ বছর। এদিকে, অনলাইন পারমিট ব্যবস্থা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনগুলি। অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় স্বাগত জানিয়েছেন এই পদক্ষেপকে। তাঁর কথায়, আগে চার হাজার টাকার পারমিট বের করতে ৪০ হাজার টাকা দালালকে দিতে হতো।

শুধু তাই নয়, দূরদূরান্ত থেকে আবেদনকারীরা হাজিরা দিতেন আঞ্চলিক পরিবহণ দপ্তরে। গোটা ব্যবস্থা অনলাইন হয়ে গেলে দালালদের খপ্পর থেকে মুক্তি মিলবে। পাশাপাশি বাড়িতে বসে পারমিটের আবেদনও করা যাবে। যদিও এতে বেশকিছু অসুবিধার কথা জানিয়েছেন সিটি সুবারর্বান বাস সার্ভিসেসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা। তাঁর দাবি, গোটা প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয় হওয়ায় ফি মকুব বা এধরনের কিছু সুবিধাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে সমস্যা হবে। রাজ্য়ের পরিবহন দফতরের দায়িত্ব নেওয়ার পরই পরিকাঠামো ঢেলে সাজাতে উদ্য়োগী হয়েছেন পরিবহনমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি দায়িত্ব নিয়েই বলেছিলেন পরিবহন দফতরে স্বচ্ছতা নিয়ে আসাই তাঁর প্রথম লক্ষ্য। মন্ত্রীর নির্দেশে পরিবহন কর্তারা ব্য়বস্থা নিতে শুরু করেন। এবার সিদ্ধান্ত হয়েছে অনলাইনে আবেদন করতে হবে যাবতীয় নতুন গাড়ির পারমিটের জন্য। এমনকি যে সমস্ত গাড়ির পারমিট রিনিউ করার সময় এসেছে তাঁদেরকেও অনলাইনে আবেদন করতে হবে। কাগজপত্র সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে অনলাইনেই মিলবে পারমিট। এই প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অবকাশ থাকবে না বলেই মনে করছেন পরিবহন কর্তারা।