হুগলি, ১০ আগস্ট:- একদা পান্ডুয়া বিধানসভা সিপিএমের গড় বলে পরিচিত ছিল। ২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচনে পান্ডুয়া ব্লকের ১৬ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল করে তৃণমূল। যদিও সে সময় জেলার একমাত্র সিপিএম বিধায়ক ছিল পান্ডুয়া ব্লকে। ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে সেই গড় ফিকে হতে শুরু করে। বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের কাছে হারতে হয়েছিল সিপিএমকে। তারপরেই একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেন তারা। ২০২৩ এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএমের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় নিয়ে দখল করে পান্ডুয়ার জামনা পঞ্চায়েত। ওই পঞ্চায়েতের প্রধান হন বশির উদ্দিন ও উপপ্রধান হন অমিও টুডু। জামগ্রাম মন্ডলাই ও ইটাচুনা খন্যান গ্রাম পঞ্চায়েত ত্রিশঙ্কু হয়। জামগ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন সংখ্যা ১৬টি ।তার মধ্যে তৃণমূল পায় ৬ টি, সিপিএম পায়ে ৭ ও একটি আসন পায় তৃণমূল সমর্থিত নির্দল প্রার্থী। বৃহস্পতিবার বোর্ড গঠনের দিন নির্দলের সমর্থন পেয়ে জামগ্রাম মন্ডলাই পঞ্চায়েত দখল করে সিপিএম। ওই পঞ্চায়েতের প্রধান হন পিংকি রানী কর্মকার ও উপ প্রধান হন রহিমা বিবি। জেলার একমাত্র পঞ্চায়েত যেটি বাম কংগ্রেস জোট ভোট গঠন করল। ইটাচুনা খন্যান গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন সংখ্যা ২২ টি। তার মধ্যে তৃণমূল পায় দশটি, সিপিএম পায়ে নটি ও তিনটি আসলে জয় লাভ করে কংগ্রেস। আজ বোর্ড গঠনে ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রধান উপপ্রধান নির্বাচিত করা হয়।
১২ টি ভোট পেয়ে প্রধান নির্বাচিত হন সিপিএমের বাসন্তী হেমরম। কংগ্রেসের সুকান্ত বেড়া তিনিও বারটি ভোটে উপপ্রধান নির্বাচিত হন। এরপরে আবির খেলায় মেতে ওঠেন দুই দলের কর্মী সমর্থকরা। এদিন বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে ছিল পুলিশি নিরাপত্তা। সিপিএম নেতা সৌরেন বোসু বলেন, দীর্ঘ পাঁচ বছর পর বাম কংগ্রেসের জোট এই পঞ্চায়েত গঠন করল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে স্থানীয় স্তরে এই জোট হয়েছিল। বোর্ড গঠনের আগে রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া টাকার প্রলোভন দেখানো হয়েছে। কিন্তু জোটের প্রতিটি প্রার্থী তাদের সেই আবেদন বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেছেন। সিপিএমের দাবি উড়িয়ে তৃণমূলের ব্লক সভাপতির সঞ্জয় ঘোষ বলেন, সিপিএম যে অভিযোগ করছে তা পুরো ভিত্তিহীন। আমরা যদি মনে করতাম তিনটি পঞ্চায়েত দখল নেব তাহলে আমরা দখল নিতে পারতাম। আমরা গণতন্ত্রের মাধ্যমে ভোট করতে দিয়েছি। ভোটে হারজিত রয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নির্দলরাও মনোনয়ন তুলেছিল, আমরা কোন বাধা দিইনি। আগে ছিল রাম বাম এখন তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে কংগ্রেস। ছমাস বা আট মাস হোক এই তিনটি পঞ্চায়েত আমরা আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন দেখে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেবে এবং ভোট গঠন করবে। প্রবল তৃণমূল ঝড়েও তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত দখল নিল সিপিএম ও কংগ্রেস।