হাওড়া,২৩ ডিসেম্বর:- বন্ধুর বোনকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় বন্ধুর হাতেই নৃশংসভাবে খুন হল এক যুবক। রবিবার রাতে হাওড়ার জগাছা থানা এলাকার জিআইপি কলোনির সাতাশি এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ওই যুবককে। এলাকার বাসিন্দারা তাকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে এলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম চন্দন বেরা(২৫)। হাওড়ার জিআইপি কলোনি এলাকার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। অভিযুক্ত বন্ধু সুরজিৎ কর্মকার ঘটনার পর থেকেই পলাতক। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বোনকে নিজের বোনের মর্যাদা দিতেন চন্দন। রবিবার রাতে সেই বোনের উদ্দেশ্যে মদ্যপ অবস্থায় সুরজিতের অশালীন মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করে চন্দন। বন্ধু চন্দনের প্রতিবাদে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সুরজিৎ। তা গড়ায় হাতাহাতি পর্যন্ত। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যস্থতায় তখনকার মতো উভয়পক্ষ শান্ত হয়। ঝামেলা এড়াতে চন্দন বাড়ি চলে যায়।
গভীর রাতে তাঁকে ফোন করে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য ডাকতে থাকে সুরজিৎ। প্রথমে যেতে না চাইলেও বারংবার ফোন করায় শেষে কিছুটা বিরক্ত হয়ে আবার বেরিয়ে সুরজিতের সঙ্গে দেখা করতে যায় চন্দন। চন্দনের সঙ্গে দেখা হলে সুরজিৎ তাকে ধারাল অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, রাস্তায় কিছু পড়ে যাওয়ার আওয়াজ পেয়ে দরজা খুলে দেখেন রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে চন্দন । তার পায়ের শিরা কাটা। নিন্মাংশ দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তিনি স্থানীয় একটি ক্লাবে খবর দিলে ক্লাবের ছেলেরা এসে সুরজিৎকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত চন্দনের মা উর্মিলা বেরা বলেন, চন্দন বাড়ি আসার পর থেকেই তাকে বারবার ফোন করে ডাকতে থাকে সুরজিৎ। প্রথমে যাব না বললেও পরে বারবার ফোন করায় বেড়োয় দেখা করতে। তারপর আর ফেরেনি। পরে হাওড়া হাসপাতাল থেকে ফোন আসায় সেখানে গিয়ে দেখতে পাই ছেলের মৃতদেহ। অনুমান ওই বন্ধুই খুন করেছে।স্থানীয় আরেক বাসিন্দা বিশ্বজিৎ বলেন, মদ খেলেও এলাকায় চন্দনের কোন বদনাম ছিল না। এদিন চন্দনের কোন এক বন্ধুর বোনকে ফোন করে কটুক্তি করেছিলেন সুরজিৎ। তারই প্রতিবাদ করায় চন্দনকে বেধড়ক মারধর করা হয়। স্থানীয় এক বাসিন্দা তখন চন্দনকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এরপরেই গভীর রাতে এই ঘটনা ঘটে। তিনি আরও জানান, ঘটনার আগে কাউকে ছুরি আনতে বলেছিল বলে শুনেছিলেন তিনি। এদিকে, এই ঘটনার পর স্থানীয় জগাছা থানায় মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত সুরজিৎ পলাতক। এই ঘটনায় অভিযুক্তের সঙ্গে কেউ যুক্ত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।