হুগলি, ১০ অক্টোবর:- ইজরায়েলের হাইফা শহরে থাকেন উত্তরপাড়ার গবেষক দম্পতি। সোমোদয় হাজরা তার স্ত্রী জয়ীতা দত্ত হাজরা ও তাদের তিন বছরের মেয়ে সিন্ধুরাকে নিয়ে চিন্তিত সোমোদয়ের মা বাবা। সোমোদয়ের বাবা প্রাক্তন অধ্যাপক উদয় শঙ্কর হাজরা মা গৃহবধূ সোমা হাজরা। দু সপ্তাহ আগে ছেলের কাছ থেকে ফিরেছেন। সেসময় যুদ্ধের কিছু ছিলনা। হাইফা শহরে এখনো যুদ্ধের আঁচ লাগেনি। তবে স্কুল কলেজ সব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে সোমোদয়দের বিশ্ববিদ্যালয় খোলা আছে। সেখানে গবেষণার কাজ চলছে। স্নায়ূ তন্ত্র বিষয়ে গবেষণা করেন স্বামী স্ত্রী। সোমোদয় ইজরায়েল থেকে ভিডিও কলে জানান, সাইরেন বাজলে বাঙ্কারে ঢুকে যেতে বলা হয়েছে। বাহাত্তর ঘন্টার জন্য জল, খাবার, পোষাক মজুত করে রাখতে বলা হয়েছে। সোমোদয় জয়ীতা হাইফার টেকনিয়ন আইআইটি তে গবেষণা করছেন। কালিপুজোর আগে ৯ নভেম্বর উত্তরপাড়ায় আসার টিকিট কাটা আছে ছেলে বৌমার। তার আগেই ফেরার চেষ্টা করছে তারা। পাশাপাশি ইজরাইলে যুদ্ধে আটকে পরেছেন হুগলির বাঙালী গবেষক, দুশ্চিন্তায় পরিবার। ইজরাইলের তেল আভিভ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নায়ূ বিজ্ঞান (নিউরো সায়েন্স) অ্যালজাইমার রোগ নিয়ে গবেষণা করছেন সৌরভ কুমার। গত দের বছর তিনি ইজরাইলের বানিজ্য নগরী তেল আভিভে আছেন। কিন্তু এরকম পরিস্থিতি তৈরী হয়নি।
যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইজরাইলে আতঙ্ক রয়েছেন সৌরভের মত অনেক ভারতীয়। সৌরভের বাড়ি হুগলির ধনিয়াখালীর ভান্ডারহাটীতে। উত্তরপাড়ায় তার পরিবার রয়েছে। স্ত্রী অনিন্দিতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরপাড়া প্যারী মোহন কলেজের ফিজিওলজির অধ্যাপক। তাদের সাত মাসের মেয়ের নাম অর্না। অনিন্দিতা জানান খুবই দুশ্চিন্তায় আছেন। পুজোর আগে বাড়ি ফেরার কথা ছিল সৌরভের। ১৬ তারিখ বিমানের টিকিট কাটা আছে। যুদ্ধ বেধে যাওয়ায় এয়ার ইন্ডিয়ার সমস্ত ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইজরাইলে আটকে পরা ভারতীয়রা কি করে ফিরবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরিবার। ফোনে স্বামীর সঙ্গে কথা হচ্ছে অনিন্দিতার। সৌরভ তাকে জানাচ্ছেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরোতে পারছেন না। সাইরেন বাজলেই শেল্টার হোমে ঢুকে পরতে হচ্ছে। জল খাবার পেতে এখনো সমস্যা হয়নি। তবে দীর্ঘ দিন এই অবস্থা চললে কি হবে তা নিয়েই চিন্তা। মাঝে মাঝে বিস্ফোরনের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। হামাস জঙ্গীরা যেখানে সেখানে ঢুকে পরে হামলা চালাচ্ছে। ক্ষেপনাস্ত্র থেকে বোমা ফেলা হচ্ছে। মাঝে মধ্যে কানে আসছে শব্দ। অনিন্দিতা নিজেও ইজরাইলে গিয়েছিলেন কয়েক মাস আগে। সেখানে অনেক ভারতীয় এবং বাঙালী রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে তারা কি করে দেশে ফিরবেন জানা নেই। সৌরভের শ্বাশুড়ি শুভ্রা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, খুবই দুশ্চিন্তায় আছি। পুজোর আগেই জামাই এর বাড়ি ফেরার কথা ছিল। এখন এই পরিস্থিতিতে কি হবে জানিনা। ভারত সরকার যাতে সৌরভের মত আরো যারা ওখানে রয়েছে তাদের ফেরানোর ব্যবস্থা করুক।