এই মুহূর্তে জেলা

ডেঙ্গু বিজয় অভিযানে প্রচারের কাজে ক্লাবগুলোকে টাকা অনুদান হাওড়া পৌরনিগমের।

হাওড়া, ৩০ সেপ্টেম্বর:- ডেঙ্গু বিজয় অভিযানে প্রচারের কাজে প্রত্যেক ওয়ার্ডের সকল রেজিস্ট্রার্ড ক্লাবগুলোকে সাড়ে তিন হাজার টাকা করে অনুদান দেবে হাওড়া পৌরনিগম। এর পাশাপাশি আগামী ৮ অক্টোবর হাওড়া পৌরনিগমের সব ওয়ার্ডে হবে ডেঙ্গু নিয়ে সচেতনতা র‍্যালি। যাতে ক্লাব সংগঠনগুলো যুক্ত হবে। শনিবার সকালে হাওড়া পৌরনিগমের উদ্যোগে শরৎ সদনে এক অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা করেন পৌরনিগমের মুখ্য প্রশাসক ডা: সুজয় চক্রবর্তী। তিনি বলেন, হাওড়ার ক্লাব সংগঠনগুলো সারা বছর ধরেই বিভিন্ন সামাজিক কাজ করে থাকেন। ডেঙ্গু সচেতনতায় পুরনিগমের অন্তর্গত হাওড়ার প্রত্যেক ক্লাবের সহযোগিতা আমরা চাইছি। ডেঙ্গুর প্রচারের কাজে প্রত্যেক ক্লাবকে সাড়ে তিন হাজার টাকা করে অনুদান ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আমরা দেব। ডেঙ্গু সচেতনতা নিয়ে ক্লাবগুলো পুরনিগমের নির্দেশিকা সম্বলিত ফ্লেক্স তৈরি করবে। তাতে সংশ্লিষ্ট ক্লাবের নাম উল্লেখ করা থাকবে। এছাড়া আগামী ৮ অক্টোবর গোটা পুরনিগম এলাকায় আমরা একটা কর্মসূচি নিয়েছি যেখানে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ডেঙ্গু সচেতনতা র‍্যালি হবে। ক্লাব সংগঠনগুলো তাতে অংশ নেবে।

এছাড়া ডেঙ্গু সচেতনতা প্রচারে যে ফ্লেক্সগুলো তৈরি করা হবে ক্লাবগুলো তা ডিসপ্লে করবে। ক্লাবে পুজো প্যান্ডেল থাকলে ওই ফ্লেক্সগুলো এমন স্থানে ডিসপ্লে করতে হবে যাতে তা আগত দর্শনার্থীদের নজরে আসে। এছাড়া ডেঙ্গু বিজয় অভিযানে বেস্ট পারফরম্যান্স এর জন্য ক্লাবকে পুরস্কৃতও করা হবে। মধ্য হাওড়া, শিবপুর, হাওড়া উত্তর এবং হাওড়া দক্ষিণ চার বিধানসভা কেন্দ্র ধরে এরজন্য ফর্ম দেওয়া হবে। তা পূরণ করে জমা দিতে হবে। এদিন হাওড়া পৌরনিগমের উপ মুখ্য প্রশাসক সৈকত চৌধুরী প্রস্তাব দেন, যে সমস্ত ক্লাব সংগঠন ডেঙ্গু সচেতনতা প্রচারে যুক্ত হবেন তাদের পৌরনিগমের উদ্যোগে সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে। প্রসঙ্গত, হাওড়া পৌরনিগমের ডেঙ্গু বিজয় অভিযান ক্লাবের সঙ্গে স্টেট আরবান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সহযোগিতায় শনিবার সকালে পুজোর আগে হাওড়ার প্রায় ৪০০ ক্লাব সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে ডেঙ্গু মোকাবিলায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো হাওড়ার শরৎ সদন ১ নম্বর হলে। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান পালন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী অরূপ রায়, জেলাশাসক দীপাপ প্রিয়া পি, হাওড়ার পুলিশ কমিশনার প্রবীণ কুমার ত্রিপাঠী, হাওড়ার সিএমওএইচ ডা: নিতাই চন্দ্র মন্ডল, হাওড়া পৌরনিগমের মুখ্য প্রশাসক ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী, পুর কমিশনার ধবল জৈন সহ স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা।

এদিন হাওড়ার সিএমওএইচ ডা: নিতাই চন্দ্র মন্ডল বলেন, ডেঙ্গু বেড়েই চলেছে। এর মোকাবিলায় ক্লাবগুলোর সহযোগিতা প্রয়োজন। এর পাশাপাশি পুরনিগমের ভেক্টর কন্ট্রোল টিমের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করছেন। মশার লেবার রুম আমরা নিজেরাই তৈরি করে থাকি। সামান্য জলই মশার আঁতুড়ঘর। সচেতন হলেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। মশার বংশবৃদ্ধির জন্য আমাদের অসচেতনতাই দায়ী। মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় অভিনব এই মিটিং। ডেঙ্গুর প্রকোপ এবার হাওড়ায় অনেক কম। ৪০০ ক্লাবের প্রতিনিধিদের এদিন ডাকা হয়েছে। আমরা আরও সচেতন হলে ডেঙ্গুর প্রকোপ কোথাও বাড়ত না। ক্লাবের কর্মকর্তারা আজকে এসেছেন। তাঁরা যদি পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে প্রচার করেন তাহলে আরও ভালো হবে। প্রত্যেক বাড়ির প্রত্যেক সদস্যকে এবিষয়ে সচেতন করতে হবে। এদিন হাওড়ার জেলাশাসক দীপাপ প্রিয়া পি বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে ঢিলেঢালা মনোভাব দেখালে চলবে না। মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। স্বাস্থ্য দপ্তর বা পুরনিগমের স্বাস্থ্য কর্মীদের সঙ্গে সহযোগিতা করুন। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে আগামী পুজোর দিনগুলোতে আমাদের ভালো কাটবে।