এই মুহূর্তে জেলা

ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে বিনা পয়সায় গৃহ শিক্ষকতা গোঘাটের সফিকের।

হুগলি, ২১ সেপ্টেম্বর:- বিনা পয়সার ডাক্তার দেখা গেলেও বিনা পয়সার শিক্ষক সচরাচর দেখা যায় না। কিন্তু ব্যতিক্রম ঘটনার সাক্ষী হুগলির গোঘাট গ্রামের মানুষ। ১৪ বছর ধরে বিনা পারিশ্রমিকে পড়াচ্ছেন গৃহ শিক্ষক শেখ আব্দুল সফিক। তিনি আবার বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন। কেবল সমাজের ভবিষ্যৎ গড়ার নেশায় এবং শিক্ষকতার টানেই শারীরিক বাধা, আর্থিক বাধা উপেক্ষা করে গৃহশিক্ষকতা করে চলেছেন সফিক। জানা যায়, কেবলমাত্র নিজের সংসার চালানোর জন্য মধ্যবিত্ত বাড়ির ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে সামান্যতম বেতন নেয়। তিনি ভূগোল এবং দর্শন বিষয়ে পড়াশোনাও করিয়া আসছেন। বর্তমানে তার ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৩০০ থেকে ৩৫০ জন। প্রত্যন্ত গ্রাম গোঘাটের সাওড়া পঞ্চায়েতের চকমমরেজ গ্রামের বাসিন্দা তিনি। বিশেষভাবে সক্ষম। শারীরিক বাধা কাটিয়ে পড়াশোনা করে এলাকার শিক্ষকতাকে ব্রতী করে এগিয়ে চলেন জীবনের পথে। প্রায় ১৪ বছর ধরে বাড়ি থেকে আরামবাগ ও কামারপুকুরে পঠন পাঠন করাতে যান তিনি। পড়াশোনা এবং শিক্ষকতা পেশাকে ভালবাসেন। তাই বিনা পারিশ্রমিকে নির্দ্বিধায় এলাকার ছাত্রছাত্রীদের পড়িয়ে চলেছেন তিনি। ছাত্রদের ভালবাসেন, স্নেহ করেন।

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করেই তিনি হয়ে উঠেছেন সম্পূর্ণ শিক্ষক। ছাত্রছাত্রীদের ভালোবাসা দিয়ে তাদের খুবই কাছের হয়ে উঠেছেন শফিকবাবু। তাঁর বাড়ির পরতে পরতে দারিদ্রতার ছাপ। তা সত্ত্বেও শিক্ষকতা ছাড়েননি তিনি। এই বিষয়ে এক ছাত্র বলে, ‘স্যার আমাদের আদর্শ। উনি সব সময়ই আমাদের সাহস জোগান। পড়াশোনায় উৎসাহ দেন। এমনকী গরীব ও দুঃস্থ ছেলে-মেয়েদের এক টাকা পর্যন্ত নেন না। প্রতিবছরই বেশ সকলেই ভাল রেজাল্ট করে স্যারের কাছ থেকে। অন্যদিকে গৃহ-শিক্ষক জানান, ‘কয়েক বছর ধরে বিনা পারিশ্রমিকে পড়াশোনা করিয়ে আসছি ছাত্র-ছাত্রীদের। বর্তমান দিনে অনেক ছেলে মেয়ে আর্থিক অনটনে রয়েছে। তাঁরা মেধাবী হলেও টাকার অভাবে ভাল জায়গায় যেতে পারে না তাই সে সমস্ত ছেলেমেয়েদের বিনা পারিশ্রমিকে পড়াচ্ছি। তাঁদের মধ্যে যাদের একটু অবস্থা ভাল বাড়িতে সংসার চালানোর জন্য ন্যূনতম বেতন নেওয়া হয়।’ সব মিলিয়েগ্রামবাসী থেকে ছাত্রছাত্রীরা এরকম এক গৃহশিক্ষককে কাছে পেয়ে খুবই খুশি।