হুগলি, ৩০ মার্চ:- পুরসভায় যোগ দিয়েও টাকা না দিতে পারায় সেই চাকরি আর করতে পারেননি চুঁচুড়ার চয়নিকা আঢ্য। ২০১৯ সালে উত্তর ২৪ পরগনার টিটাগড় পুরসভায় চতুর্থ শ্রেনীর কর্মি নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করেন চুঁচুড়া ষন্ডেশ্বরতলার চয়নিকা আঢ্য। জাতীয় স্তরের যোগাসন চ্যাম্পিয়ান ভালো অ্যাথলিট চয়নিকা প্লেয়ার্স কোটায় সেই চাকরির পরীক্ষা দিয়ে ইন্টারভিউ এ ডাক পান। ইন্টারভিউ এর পর চাকরি হয়ে যায় তার। ১১ নভেম্বর ২০১৯ সালে জয়েনিং লেটারও দেওয়া হয় পুরসভার তরফে। চয়নিকা জানান, এক পুলিশ কর্মি একদিন তার বাড়িতে গিয়ে বলেন অয়ন শীলের অফিসে গিয়ে দেখা করতে চাকরির ব্যাপারে কথা আছে। চয়নিকা তার বাবাকে নিয়ে চুঁচুড়া জগুদাসপাড়ায় অয়ন শীলের অফিসে গিয়ে দেখা করেন। অয়ন তাদের বলেন চাকরির জন্য পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে। চয়নিকা জানান তিনি তো অয়ন শীলের ক্যান্ডিডেট নন তাহলে কেন টাকা দেবেন। আর অত টাকা তার কাছে নেই। সেদিন ফিরে আসার পর অয়ন শীলের লোক তার সঙ্গে আবার যোগাযোগ করে এবং সল্ট লেকের অফিসে যেতে বলে।সল্ট লেকের অফিসে বাবাকে নিয়ে গিয়েও ছিলেন চয়নিকা কিন্তু বেশ কয়েক ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকেও দেখা না পেয়ে ফিরে আসেন।
পরে জানতে পারেন প্রতারনার অভিযোগ হয়েছে অয়ন শীলের বিরুদ্ধে। সেসময় বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে সমস্যা চলছিল চয়নিকার।বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা মা, চাকরির খুব প্রয়োজন।তাই হাল না ছেড়ে টিটাগড় পুরসভায় গিয়ে কথা বলেন চেয়ারম্যানের সঙ্গে।হবে না হবে না করেও তাকে জয়েন করানো হয়। স্যালারির জন্য স্থানীয় বেসরকারি ব্যাঙ্কে জিরো ব্যালান্সে একাউন্ট খোলা থেকে এটিএম কার্ড সব করে দেওয়া হয়। ছয় দিন কাজও করেন পুরসভার চতুর্থ শ্রেনীর কর্মি হিসাবে। তারপর তাকে বের করে দেওয়া হয় পুরসভা থেকে। চয়নিকা বলেন, নিয়োগ তালিকায় তার ২২০ নম্বরে নাম ছিল। রাতারাতি সেই তালিকা পরিবর্তন করে যারা ছিল না তাদের নাম ঢু্কিয়ে দেওয়া হয়।সন্দেহ যারা টাকা দিতে পেরেছিল তাদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। আর চয়নিকার মত যারা নিজেদের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছিলেন তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে।এর পিছনে অয়ন শীল এবং নিয়োগ দূর্নীতি চক্র জরিত। অয়ন শীলের সংস্থা পানিহাটি সহ বেশ কয়েকটি পুরসভায় নিয়োগের পরীক্ষার দায়িত্বে ছিল। তার অফিস থেকে ইডি বিভিন্ন পুরসভায় নিয়োগের পরীক্ষার ওএমআর শিট উদ্ধার করেছে ইতিমধ্যে। হুগলির প্রাক্তন তৃনমূল যুব নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ প্রমোটার অয়ন শীল ইডি হেফাজতে রয়েছেন।তার বিরুদ্ধে স্কুল পুরসভা সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে নিয়োগের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলা ও বহু মানুষকে প্রতারিত করার অভিযোগ।