এই মুহূর্তে কলকাতা

মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমায় কেন্দ্রের শিক্ষা অধিকার আইনকে দায়ী করলেন শিক্ষামন্ত্রী।

কলকাতা, ২৩ ফেব্রুয়ারি:- বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। প্রথম ভাষার পরীক্ষা দিয়ে শুরু হল ২০২৩ সালের মাধ্যমিক। এ বছর প্রায় ৬ লক্ষ ৯৮ হাজার ৬২৮ জন পড়ুয়া পরীক্ষায় বসছেন। বিক্ষিপ্ত কয়েকটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ছাড়া মাধ্যমিকের প্রথম দিনের পরীক্ষা নির্বিঘ্নেই শেষ হয়েছে। পরীক্ষা ঘিরে কোথাও কোনওরকম গোলমালের ঘটনা ঘটেনি। প্রশ্নপত্র নিয়েও কোনও অভিযোগ মেলেনি। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন প্রথম দিনের পরীক্ষা নির্বিঘ্নে শেষ হয়েছে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গাঙ্গুলি প্রথম দিনের পরীক্ষা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এর জন্য অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, রাজ্যের মোট ২৮৬৭ কেন্দ্রে পরীক্ষা ভালোভাবেই হয়েছে। বাকি ৬ দিনও একইভাবে পরীক্ষা হবে বলে তাঁর আশা। এদিন সকালে হরিণঘাটায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয় এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। জলপাইগুড়িতে হাতির হামলায় মৃত্যু হল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। একটি দলছুট দাঁতাল পিষে দেয় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কিশোর অর্জুন দাসকে। এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পূর্বস্থলীর সমুদ্রগড়ের এক পরীক্ষার্থী ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর জখম হয়। পরীক্ষা দিতে গিয়ে পরিক্ষা কেন্দ্রেই অসুস্থ হয়ে পড়ে বারুইপুরের এক পরীক্ষার্থী।

আরও বেশ কয়েকটি জেলা থেকে কয়েকজন পরীক্ষার্থীর অসুস্থ হওয়ার খবর এসেছে। তবে সকলেই নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিতে পেরেছে বলে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দাবি। এরই মধ্যে বিকেলে মেদিনীপুরের পাঁচখুড়ি এলাকায় মারুতি ভ্যান উল্টে গুরুতর জখম হয় পাঁচ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। এক সাইকেল আরোহীকে বাঁচাতে গিয়ে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। বারুইপুরের পদ্মপুকুর মধ্যবিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে এক মাধ্যমিক ছাত্র। স্কুল কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি তাকে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে। ছাত্রটি হাসপাতালের বেডে শুয়েই পরীক্ষা দেয়। এই দুঃখজনক ঘটনাগুলো বাদ দিয়ে সার্বিকভাবে নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হয়েছে প্রথম দিনের মাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষার্থীদের জন্য রাস্তায় ছিল পর্যাপ্ত পরিমাণে বাস লোকাল ট্রেন। পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতাও ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রথম দিনের প্রশ্নপত্রও খুশি করেছে পরীক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের অন্যদিকে এবছর মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম হওয়ার জন্য কেন্দ্রের শিক্ষার অধিকার আইন কে দায়ী করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

মন্ত্রী জানিয়েছেন শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী বয়সসীমা বেঁধে ভর্তি করার জন্যই এই বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অন্যান্য বছরের তুলনায় কম। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কম হওয়ার ক্ষেত্রে অন্য কোনও কারণ নেই বলেই জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এই বছর মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থী কম হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে কোর্টে। এই বিষয়ে মন্তব্য করেছেন খোদ বিচারপতি নিজেও। পাশাপাশি বিরোধীরাও সরব হয়েছেন এই ইস্যুতে। শিক্ষা মন্ত্রী বলেন শিক্ষা অধিকার আইন অনুযায়ী ২০১৩-১৪ সালে শুধুমাত্র ছয় বছরের শিশুরাই ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হয়েছিল। আগে ছয় এবং পাঁচ যেকোনও বয়সের শিশুরাই ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হতে পারত। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে যে ২০১৩-১৪ সালে ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হয় প্রায় ছয় লাখ ৪০ হাজার পড়ুয়া। সেই ছাত্র ছাত্রীরাই এই বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছে। এর ফলে যারা ভর্তি হয়েছিল শুধুমাত্র তারাই পরীক্ষা দিচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে কোভিড কোনও সমস্যা নয় বলেই জানানো হয়েছে।