এই মুহূর্তে কলকাতা

নির্মাণ শ্রমিকদের মাথার ওপরে পাকা ছাদের বন্দোবস্ত করতে উদ্যোগী রাজ্যের শ্রম দপ্তর।

কলকাতা, ১৬ অক্টোবর:- বাংলার নির্মাণ শ্রমিকেরা অনেকের মাথার ওপরে পাকা ছাদ গড়ে দিলেও তাঁদের অনেকেরই কিন্তু মাথার ওপর পাকা ছাদ নেই। অনেকের নিজের বাড়িও নেই। কেউ তাঁদের সেই বাড়ি গড়ে দেওয়ার কথা ভাবে না। কিন্তু এবার এই ছবির পরিবর্তন ঘটাতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশেই এবার রাজ্যের নির্মাণ শ্রমিকদের মাথার ওপরে পাকা ছাদের বন্দোবস্ত করতে উদ্যোগী হল রাজ্যের শ্রমদফতর। আর সেটাও সম্পূর্ণ নিখরচায়। রাজ্য শ্রমদফতরের নির্মাণ শ্রমিক কল্যাণ বোর্ড এব্যাপারে সিদ্ধান্তও নিয়েছে। বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের বক্তব্য, এখনও চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি হয়নি এই প্রকল্পের। তবে নানা প্রস্তাব বোর্ডের বিবেচনাধীন। জানা গিয়েছে, বোর্ডের কোষাগারে বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা রয়েছে। সরকারের কোষাগারের ওপর কোনও বাড়তি চাপ না আসার ফলে অর্থের সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন আধিকারিকরা। প্রথম দফায় অন্তত ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগনো হবে। পরে ফি বছর এই খাতে মোটা টাকা খরচ করারও প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হবে। প্রসঙ্গত, প্রায় ৪০ লাখ নির্মাণ শ্রমিক এখনও পর্যন্ত দফতরের চালু করা বিনামূল্যে সামাজিক সুরক্ষা যোজনার পোর্টালে নাম লিখিয়েছেন। তবে তাঁদের মধ্যে সাড়ে ১৭ লক্ষের আধার সহ যাবতীয় নথি আপ-টু-ডেট করা রয়েছে। ফলে আবাসন প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে এঁরাই অগ্রাধিকার পাবেন।

নির্মাণ শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের সদ্য নিযুক্ত চেয়ারম্যান তথা আইএনটিটিইউসি’র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে জানিয়েছেন, ‘কন্যাশ্রী সহ একাধিক সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প চালু করে দেশে পথিকৃৎ হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলা। সমাজের আর সব মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই তৈরির কারিগর নির্মাণ শ্রমিকরা। কিন্তু তাঁদের অধিকাংশেরই নিজস্ব থাকার ঘর নেই। বিষয়টি ভাবিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। তাঁরই ইচ্ছায় আগামী দিনে বাসস্থানের সন্ধান পেতে চলেছেন বাংলার নির্মাণ শ্রমিকরা। দেশের মধ্যে প্রথম এই প্রকল্প চালু হতে চলেছে মূলত মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনার ফলশ্রুতিতে। শ্রমিক পিছু এই খাতে বোর্ড লাখ পাঁচেক টাকা পর্যন্ত খরচ করতে পারে। যে সব শ্রমিকের গ্রামে নিজস্ব জমি রয়েছে, তাঁদের বাড়ি তৈরির জন্য টাকা দেওয়া হবে। যাঁদের জমি নেই, তাঁদের জন্য গ্রামে সরকারি জমিতে বহুতল ফ্ল্যাট করা হতে পারে। প্রয়োজনে শহরেও এমন ফ্ল্যাট গড়ে দিতে পারে বোর্ড। তবে ঘর তৈরি বা পাওয়ার অন্যতম শর্ত হিসেবে পাঁচ বা দশ বছরের মধ্যে তা বিক্রি বা অন্য কাউকে ভাড়া না দেওয়ার অঙ্গীকার আদায় করে নেবে বোর্ড। অনলাইন আবেদনের মাধ্যমে ‘আগে এস, আগে নাও’ নীতিতে টাকা বা ফ্ল্যাট বিতরণের পথেই হাঁটবে বোর্ড।’