সুদীপ দাস, ২২ ফেব্রুয়ারি:- দুবারের চেষ্টাতেও দল রাজি হয়নি, অবশেষে হাইকোর্টের নির্দেশে ভোটাভুটি, রাতে প্রধানের বাড়িতে বোমা, বিকেলে পুলিশের লাঠিচার্জ, হুলস্থুল অবস্থাতেই ৯/৩ ভোটে হার প্রধানের। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি হুগলীর চুঁচুড়া-মগরা ব্লকের চন্দ্রহাটি ১নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের। এই পঞ্চায়েতে মোট আসন সংখ্যা ১৫। শেষবার পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি ৩টি আসন পেয়েছে। বাকি ১২টি আসনে জিতে পঞ্চায়েত দখল করে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রধান হিসাবে দ্বায়িত্ব গ্রহন করেন মিঠু দাস। উপ-প্রধান হন শক্তিপদ দাস। দু’জনেই তৃণমূল হলেও মতের মিল কোনদিনই হয়নি। ফলে বোর্ড গঠন হওয়ার পর থেকেই প্রধান-উপপ্রধানে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। যেই দ্বন্দ্ব মেটাতে ব্লক ছাড়িয়ে দলের জেলা নেতাদেরও হস্তক্ষেপ করতে হয়। তবে দলীয় নির্দেশকে অমান্য করে প্রধানের বিরুদ্ধে বারংবার মুখ খুলতে দেখা উপ-প্রধান গোষ্ঠীকে। বিগত দিনে দু’দুবার প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনলেও দলতা বাতিল করে দেয়।
কিন্তু দলীয় নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে উপ-প্রধান গোষ্ঠী কোলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। হাইকোর্টের অনাস্থা ভোটের পক্ষে রায় দেয়। আদালতের নির্দেশ মেনে মঙ্গলবার চন্দ্রহাটি ১ নম্বর পঞ্চায়েতে ভোটাভুটির আয়োজন করেন চুঁচুড়া-মগরা ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক প্রিয়াঙ্কা বালা। সেখানেই ২বিজেপি ও ১তৃণমূল সদস্য অনুপস্থিত থাকায় ৯/৩ ভোটে উপ-প্রধান গোষ্ঠী জয়ী। অর্থাৎ প্রধানের পদ থেকে মিঠু দাসের সরে যাওয়া এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা। তবে ভোটাভুটি নিয়ে বিগত কয়েকদিন ধরেই চন্দ্রহাটি ১নম্বর পঞ্চায়েত এলাকায় ছিলো চাপা উত্তেজনা। সোমবার গভীর রাত আড়াইটা নাগাদ মহিলা পঞ্চায়েত প্রধান মিঠু দাসের বাড়িতে বোমা ছোঁড়ার অভিযোগ ওঠে। কেউ হতাহত না হলেও বোমার আঘাতে প্রধানের জানালা-দরজার কাঁচ ভাঙে। মঙ্গলবার সকালে যা নিয়ে উপ-প্রধানের দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলেন প্রধান গোষ্ঠী। তবে সবকিছুকে উপেক্ষা করেই এদিন পঞ্চায়েতে ভোটাভুটি আয়োজিত হয়। দুপুরে উপ-প্রধান গোষ্ঠীর সদস্যদের আটকানোর অভিযোগে প্রধান গোষ্ঠীর সাথে তুলকালাম বাঁধে। পঞ্চায়েত অফিসের অদূরে সেই পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে লাঠিচার্জও করতে হয়। পরে চাপা উত্তেজনার মধ্যেই ১৫জনের মধ্যে মোট ১২জন সদস্য অনাস্থা ভোটে অংশগ্রহন করেন। ভোটের ফলাফল উপ-প্রধান ৯ এবং প্রধান ৩।