এই মুহূর্তে জেলা

শাড়ির ভিতর থেকেই বেড়িয়ে এলো মা দূর্গা, রহস্য উন্মোচন চুঁচুড়ায়!

সুদীপ দাস, ২ ফেব্রুয়ারি:- দিন তিনেক আগেই চুঁচুড়ার তালডাঙ্গা গাঙ্গুলী পরিবার থেকে সোনার খোয়া যায় সোনার দুর্গা মূর্তি। ৭৮বছর আগে এক জমিদার তৎকালীন গৃহকর্তা হৈম কুমার গাঙ্গুলীকে ওই মূর্তি প্রদান করেন। তারপর থেকেই প্রতি বছর মহাসমারোহে এই বাড়িতে দুর্গা পুজা আয়োজিত হয়। বাড়ির ঠাকুর ঘরের সিংহাসন অলংকৃত করা দেবী মায়ের এই মূর্তি নিত্যদিনও পুজিত হতেন। গত ৩০তারিখ সন্ধ্যার পর থেকেই উধাও হয়ে যায় প্রায় ১০ইঞ্চি লম্বা ওই সোনার মুর্তি। এবিষয়ে অভিযোগ জানানো হয় চুঁচুড়া থানায়। অভিযোগ পেয়েই ময়দানে নামে চুঁচুড়া থানা। পুলিশের সন্দেহের বশে গতকাল আটক করে এই পরিবারের পরিচারিকা তথা তালডাঙ্গা বুড়োশিবতলার বাসিন্দা বছর ৪০-এর আলোবতি দাসকে। আলোবতি পরিচারিকার কাজে পুরাতন না হলেও তাঁর মা দীর্ঘ ২০বছর অত্যন্ত বিশ্বস্ততার সাথে এই বাড়িতে দ্বায়িত্ত সামলেছেন। মায়ের বয়স হয়েছে। তাই সেই কাজে যোগদান করেন আলোবতি। দীর্ঘদিনের পরিচয় তাই গাঙ্গুলি পরিবার আলোবতিকে কোনভাবেই সন্দেহ করেনি।

মায়ের মত মেয়েরও গাঙ্গুলি পরিবারের প্রতিটি ঘরে ছিলো অবাধ বিচরন। কিন্তু ৩০ তারিখের ঘটনার পর পুলিশের নজরে পরে আলোবতি। গতকাল তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সূত্রের খবর, সেখানে জেরার সময় হঠাৎ করেই চুরি যাওয়া দেবী মূর্তির একাংশ আলোবতির অগোচরেই তাঁর শাড়ির ভিতর থেকে নীচে পরে। সঙ্গে সঙ্গে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের। এরপর আলোবতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে শিব-দূর্গাে মূর্তিটির দূর্গার দিকের অংশ কেটে আলোবতির সুদের কারবারের সঙ্গী তথা তালডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা অন্ময় দাস(টুটাই)-কে দিয়েছে। সুদের কারবারে টুটাইয়ে প্রায় ৩লক্ষ টাকা দীর্ঘদিন ধরে আলোবতির কাছে আটকে রয়েছে। দেনা কমাতেই টুটাইকে মুর্তির একাংশ আলোবতি দিয়েছিলো বলে পুলিশকে জানায় সে। এরপর পুলিশ টুটাইকে তালডাঙ্গা থেকে আটক করে। জানা যায় টুটাই মুর্তির সেই অংশটি তালডাঙ্গারই একটি সোনার দোকানে দিয়েছে।

সেই সোনার দোকানের মালিকের ইমারতী দ্রব্যের ব্যাবসা রয়েছে। বাড়ি সংস্কারের জন্য সেখান থেকেই ইমারতি দ্রব্য নিয়েছিলো টুটাই। সেই ইমারতি দ্রব্যের মূল্য বাবাদ সোনার মুর্তির কিছুটা অংশ কেটে টুকরো টুকরো করে সোনার দোকানিকে দেয় টুটাই। সেইমত এদিন রাতেই পুলিশ আলোবতি ও টুটাইকে সঙ্গে নিয়ে তালডাঙ্গা মোড়ের একটি সোনার দোকানে হানা দেয়। সূত্রের খবর ওই দোকান থেকেই বাকি অংশটি উদ্ধার হয়েছে। তবে সেই অংশটি দোকানদার গলিয়ে ফেলেছে। এরপরই গ্রেফতার করা হয় আলোবতি ও টুটাইকে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে টুটাই নিজের বাড়ির সোনা বলে প্রতিবাশী ওই সোনার দোকান মালিককে মুর্তির অংশ দেওয়ায় দোকানিকে নির্দোষ হিসাবে ছাড় দেওয়া হয়। এদিন রাতেই পুলিশের জেরার মুখে অসুস্থ হয়ে যায় আলোবতি। তাই আলোবতিকে চুঁচুড়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যদিকে টুটাইকে আজ হেফাজতে চেয়ে চুঁচুড়া আদালতে তোলা হবে বলে জানা গেছে।