কলকাতা, ১ ফেব্রুয়ারি:- এবারের কেন্দ্রীয় বাজেট দিশাহীন বলে সমালোচনা করলেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তিনি বলেন এই বাজেট শুধুমাত্র ধনীদের দিকে তাকিয়ে তৈরি। যেখানে কৌশলে বঞ্চিত করা হয়েছে সাধারণ মানুষকে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের পর এক ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে বাজেটের তীব্র সমালোচনা করেন অমিত মিত্র। তিনি বলেন, ‘এই বাজেটে কর্মসংস্থানের কোন দিশা নেই। কিভাবে বেকাররা বাঁচবে? গরিব মানুষের জন্য কিছু নেই। মুদ্রাস্ফীতি কমানো, কৃষি, শিল্প সহ সার্বিক উন্নয়নের কোন কথা নেই বাজেটে। শুধু বড় বড় কথা বলা হয়েছে।’ অমিত আরও বলেন, ‘এই বাজেট কার জন্য সেটাই বুঝলাম না। সমাজের কোন ক্ষেত্রের মানুষের উপকারে লাগবে না এই বাজেট। বাস্তবের সঙ্গে কোন মিল নেই কেন্দ্রের বাজেটের।’ তাঁর বক্তব্য, অর্থনৈতিক উন্নয়নের যে কথা বলা হয়েছে তা পূরণে কোন দিশা নেই বাজেটে। মানুষের হাতে টাকা তুলে দিয়ে বাজারে চাহিদা বাড়ানোর কথা বাজেটে বলা হয়নি।
অথচ বাংলায় মানুষের হাতে টাকা তুলে দিয়ে বাজারে চাহিদা বাড়ানো হয়েছে। বিশ্বের বড় বড় দেশগুলি এটাই করছে। ১০০ দিনের কাজে বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ কমানো হয়েছে এবারের বাজেটে। যা মারাত্মক বিষয়। সুকৌশলে ৯৮ হাজার কোটি টাকা থেকে বরাদ্দ কমিয়ে ৭৩ হাজার কোটি টাকা করা হল। সাধারণ মানুষের নজর এড়িয়ে যাবেদেশের মানুষ এখন কোভিডের দরুন সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ। অনেক মানুষ তাঁদের নিকট স্বজনকে হারিয়েছেন। তাঁদের জন্য কোনও ক্ষতিপূরণ বা প্রকল্প চালুর কথা ঘোষণা করা হয়নি। যে পরিযায়ী শ্রমিকেরা কোভিডের জন্য সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাঁদের জন্য একটি শব্দও খরচ করেননি দেশের অর্থমন্ত্রী। লকডাউনে যারা চাকরি হারিয়েছেন তাঁদের জন্যও এই বাজেটে কোনও কথা বলা হয়নি।
যারা চাকরি খুঁজেও পাচ্ছেন না তাঁদের জন্যও কোনও প্রকল্পের কথা বলা হয়নি। প্রবীণ মানুষদের জন্য কোনও প্রকল্পের কথা ঘোষণা করা হয়নি। যে সব ব্যবসায়ীরা লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাঁদের ব্যবসা চাঙ্গা করার জন্য কোনও আর্থিক প্যাকেজের উল্লেখ নেই এই বাজেটে। সব থেকে বেশি উপেক্ষিত হয়েছে গ্রামের মানুষ। এই সরকার ভুলে গিয়েছে গ্রামের অর্থনীতিই ভারতের অর্থনীতির মূল স্তম্ভ। সেখানে মানুষের হাতে নগদ নেই। দেশের অর্থবিদরা বারভ বার বলছেন আমজনতার হাতে সরাসরি নগদের যোগান বাড়িয়ে বাজারে তাঁদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে। কিন্তু সেই বিষয়ে কিছুই ঘোষণা করলেন না নির্মলা। উল্টে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে বরাদ্দ অর্থ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রাম থেকে শহর, তরুণ থেকে প্রবীণ, নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত কারোর জন্য এই বাজেটে কিছু নেই। আছে শুধু ধনীদের কথা।