এই মুহূর্তে জেলা

৫১৫বছরের ইতিহাসে প্রথম বন্ধ মাছের মেলা , জিটি রোডের ধারেই মাছ নিয়ে বসলেন ব্যাবসায়ীরা !

সুদীপ দাস, ১৫ জানুয়ারি:- দীর্ঘ ৫১৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম বন্ধ হলো হুগলীর কৃষ্ণপুরের মাছের মেলা। কথিত আছে শ্রীমত স্বামী রঘুনাথ দাস গোস্বামীর ঘরে ফেরাকে ঘিরে ৫১৫বছর আগে হুগলীর দেবানন্দপুরের কৃষ্ণপুরে “উত্তরায়ন” নামে উৎসবের সুচনা হয়। এই উত্রসবকে ঘিরে দিনভর নামসংকীর্তনের পাশাপাশি এলাকা জুড়ে এক বিরাট মেলাও বসে। তবে এই মেলায় জিলিপি, পাঁপর ভাঁজা, নাগরদোলার থেকে মাছের আকর্ষনই বেশী। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মাছ ব্যাবসায়ীরা ১লা মাঘ এখানে হরেক রকম মাছ নিয়ে হাজির হন। সামান্য কয়েক গ্রাম থেকে শুরু করে কয়েকশো কেজির মাছ দেখতে ভিড় জমান বহু মানুষ। মেলা তাই দেখার পাশাপাশি কেনার সুযোগও মেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় একদা এই এলাকার জমিদার ছিলেন গোবর্ধন মজুমদার। গোবর্ধনবাবুর একমাত্র সন্তান রঘুনাথ দাস পরবর্তীকালে উপাধি পেয়ে রঘুনাথ দাস গোস্বামী হয়ে ওঠেন। তিনি মাত্র ১৫বছর বয়সে নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর দর্শনের জন্য পুরীধামে যাত্রা করেন। ফেরার পথে উত্তর ২৪পরগনার পানিহাটিতে উপস্থিত হন। সেখানে এত কম বয়সে সন্ন্যাস নেওয়ার জন্য রঘুনাথ দাসকে দন্ড হিসাবে বাড়ি ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। পানিহাটিতে আজও সেই দন্ড উৎসব পালিত হয়। যাই হোক বহুদিন পর ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসায় কৃষ্ণপুর এলাকা জুড়ে শুরু হয় উত্তরায়ন উৎসব। উৎসব উপলক্ষ্যে আয়োজিত মেলায় বহু মৎস্য ব্যাবসায়ী এখানে মাছ নিয়ে উপস্থিত হন। সেই থেকর প্রত্যেক বছর ১লা মাগ এখানে মাছের মেলা আয়োজিত হয়।

গতবছরও করোনা এই মেলাকে ছুঁতে পারেনি। কিন্তু এবছর করোনার জন্য পুলিশের অনুমতি না মেলায় বন্ধ এই মাছের মেলা। তবে কৃষ্ণপুরের মঠে নিয়ম মেনে পুজো-পার্বন অনুষ্ঠিত হয়। সকালে বহু মৎস্য ব্যাবসায়ী এই মেলা উপলক্ষ্যে জেলায় এলেও অদিসপ্তগ্রাম জিটি রোডে তাঁদের পথ আটকায় পুলিশ। এবছর কৃষ্ণপুর মাছের মেলা করা যাবে না বলে মৎস্য ব্যাবসায়ীদের জানিয়ে দেয় পুলিশ। বাধ্য হয়েই সপ্তগ্রামে জিটি রোডের ধারে ব্যাবসায়ীরা মাছ নিয়ে বসে পরেন। দিনভর সেখানেই যা কেনাকাটা হয়। ব্যাবসায়ীদের বক্তব্য মেলার মত কি আর বিক্রি হয়। তবে এত মাছ নিয়ে ফিরে যাওয়া যাবে না। তাই এখানেই বসে পরলাম। যেটুকু বিক্রি করা যায় আর কি!