এই মুহূর্তে জেলা

৪৮ ঘন্টায় ১৮০ ডিগ্রী ঘূর্ণন , অবাক পরিবর্তন চুঁচুড়ার বিধায়কের !

সুদীপ দাস, ১০ জানুয়ারি:- বেআইনীভাবে স্কুল খুলে রাখার বিরুদ্ধে আইনত ব্যাবস্থা হবে। বড়লোকের জন্য একরকম আইন আর গরীবের জন্য অন্যরকম আইন এটা তো হতে পারে না। শনিবার সকালে ইমামবাড়ার সন্নিকটে একটি বেসরকারী ইংরেজী মাধ্যম স্কুল চত্ত্বরে দাঁড়িয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এমনই মত প্রকাশ করেছিলেন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার। সোমবার বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠকের পর সেই অসিত মজুমদারই বললেন স্কুল খোলা ছিলো এটা ঠিক নয়, স্কুল খোলা ছিলো না। মাত্র ৪৮ ঘন্টাতেই নিজের অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রী ঘুরে গেলেন চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার। কোভিড ক্রমশ মাথা চাড়া দিতেই গত সোমবার থেকে রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু অভিযোগ সেই নির্দেশকে অমান্য করেই হুগলী ইমামবাড়া সংলগ্ন আইসিএসসি বোর্ডের বেসরকারি ওই ইংরেজী মাধ্যম বিদ্যালয় খুলে রাখা হয়েছিলো। বিদ্যালয়ে চলা দ্বাদশ শ্রেনীর প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা খারাপ হওয়ায় গত শুক্রবার দুই হাতের শিরা কেটে এক ছাত্রীর আত্মঘাতী হওয়ার প্রচেষ্টা চালানোর খবর প্রকাশ্যে আসতেই বিদ্যালয় খুলে রাখার বিষয়টি সকলের সামনে আসে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় চুঁচুড়া হাসপাতালে গিয়ে আহত ছাত্রীর খোঁজখবর নেওয়ার পরই শনিবার সকালে বেসরকারি ওই বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন বিধায়ক অসিত মজুমদার। সেদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বিদ্যালয় গেটের সামনে থেকেই কর্তপক্ষের সাথে ফোনে কথা বলেন অসিতবাবু। সেদিন তিনি বেআইনিভাবে স্কুল খুলে রাখার বিরুদ্ধে ফোনেই সরব হন। এরপর বিধায়ক সাংবাদিকদের বলেন আজ অর্থাৎ সোমবার বিদ্যালয়ের কর্নধারকে স্কুলে আসতে বলেছি। সদর মহকুমা শাসক থাকবেন। বেআইনিভাবে স্কুল খোলা নিয়ে সেদিনই ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। আজ সকালে সেইমত স্কুলে হাজির হন বিধায়ক। সঙ্গে ছিলেন পুর-প্রশাসক গৌরিকান্ত মুখার্জী, স্থানীয় কো-অর্ডিনেটর সুপর্না সেনরা। সদর মহকুমা শাসক না এলেও এদিনের বৈঠকে চুঁচুড়া থানার আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন বলে বিধায়কের দাবী। বৈঠক শেষে বাইরে বেড়িয়ে এসে বিধায়ক বলেন আহত ছাত্রীর পড়াশুনার ক্ষেত্রে যাতে কোন অসুবিধা না হয় সেবিষয়ে কথা হয়েছে। আর বেআইনিভাবে স্কুল খোলা নিয়ে কি কথা হলো?

এই প্রশ্নের উত্তরে বিধায়ক বলেন স্কুল খোলা ছিলো একথা ঠিক নয়! স্কুল খোলা ছিলো না! অবাক কান্ড স্কুল খোলা না থাকলে বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হলো কি করে? অসিতবাবু বলেন বোর্ডের পরীক্ষা। ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যতের দিকটাও তো দেখতে হবে! আরে বোর্ডের পরীক্ষা বলে সরকারী নির্দেশ না মানলেও চলবে! এ আবার কেমন কথা! চুঁচুড়া শহরে আইসিএসসি বোর্ডের অন্য বেসরকারি স্কুলও তো রয়েছে! সেখানে তো রাজ্য সরকারের নিয়ম অমান্য করে পরীক্ষা নেওয়া হয়নি! অসিতবাবু বললেন বোর্ড ৩১শে জানুয়ারির মধ্যে পরীক্ষা নিতে বলেছে! তাই ওরা নিয়েছে। আমি অন্য স্কুলগুলির সাথেও কথা বলছি। এ কথা বলে বিধায়ক বেড়িয়ে যান। এবার আপনারাই বলুন, শনি থেকে সোম মাত্র ৪৮ ঘন্টা! বিধায়কের কথামত এই সামান্য সময়েই খোলা স্কুল বন্ধ হয়ে গেলো! এই খবর দেখার পর নিন্দুকদের অবশ্য বিধায়কের শনিবারের ওই লাইনটি বেশ মনে পরবে, বড়লোকের জন্য একরকম………