এই মুহূর্তে কলকাতা

রাজ্যে বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় শস্যহানি রুখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ রাজ্যের।

কলকাতা, ১০ জানুয়ারি:- চলতি সপ্তাহে রাজ্যে বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় শস্যহানি রুখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রাজ্য সরকার জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে। মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এব্যাপারে রাজ্যের সব জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন। পাশাপাশি জেলা কৃষি অধিকর্তাদেরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ফসলের সুরক্ষায় কৃষকদের বেশ কিছু দেওয়া হয়েছে। এই সময় বৃষ্টি এবং শিলা বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় ক্ষতি এড়াতে পরিণত ফসল আগেই তুলে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আলু সবজি তৈলবীজ সহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেতের জমা জল বের করে দিতে জমিতে নালা কেটে দিতে বলা হয়েছে। বৃষ্টি ও স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় আলুর নাবি ধ্বসা এবং ছত্রাক ঘটিত রোগ ঠেকাতে উপযুক্ত কীটনাশক ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কীট পতঙ্গের আক্রমন রুখতে ব্লকের কৃষি আধিকারিকদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন চাষিরা। ডিসেম্বরে একপ্রস্থ বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে মাঠে থাকা ধান, আলু, সব্জির। ফের ঝড়-জলের সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় মাঠ ভরা রবি শস্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে আতঙ্কিত চাষিরা। শুক্রবার আবহাওয়া দপ্তর সতর্কবার্তা জারি করে বলেছে, মাঠে থাকা ফসল ও সব্জি যা পরিপক্ক হয়ে গিয়েছে, তা দ্রুত তুলে নিতে হবে। তাছাড়া জমি থেকে জল বের করার ব্যবস্থা করতে হবে। যাঁরা এখন জমিতে সার, কীটনাশক দেওয়ার কথা ভাবছিলেন, তাঁরা আর ক’দিন সবুর করুন। না হলে বৃষ্টির জলে ধুয়ে যাবে সব। এবার বহু জায়গায় সবে আলু লাগানো হয়েছে। সেই আলু বীজের কী দশা হবে, তা নিয়ে চিন্তায় চাষিরা। মাঠে এখন আলু ছাড়াও শীতের নানা রকম সব্জি, গম, ডাল, তৈলবীজ সহ বিভিন্ন রবি ফসলের চাষ চলছে। বোরো ধানের বীজতলা তৈরির কাজও শুরু হয়েছে।

আমন ধান ওঠার পর শুকানোর প্রক্রিয়া চলছে অনেক জায়গাতেই। কৃষি বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি আবহাওয়াবিদরাও অসময়ের বৃষ্টির প্রভাব নিয়ে চিন্তিত। আলিপুর হাওয়া অফিসের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানিয়েছেন, এই বৃষ্টিতে তো আর বন্যা হবে না। কিন্তু চাষের ক্ষতি হতে পারে। তাই ক্ষতি সামাল দেওয়ার জন্য আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে কৃষকদের। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় বৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু এবারের ঝঞ্ঝা গতবারের তুলনায় শক্তিশালী। স্বভাবতই তার দাপটও থাকবে বেশি। ঝঞ্ঝার প্রভাবে তৈরি ঘূর্ণাবর্তটি এবার পূর্ব ভারত পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। এই সুযোগে বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প ঢুকবে বায়ুমণ্ডলে। মঙ্গল ও বুধবার মূলত পশ্চিমের জেলাগুলিতে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার বৃষ্টির কেন্দ্র হবে গাঙ্গেয় বাংলা। আবহাওয়া অধিকর্তা জানিয়েছেন, এই তিন-চারদিন সব মিলিয়ে ৩০-৪০ মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বুধ থেকে শুক্রবার পর্যন্ত হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। তবে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।