সুদীপ দাস, ১১ ডিসেম্বর:- একের পর এক বাজিমাত। বিজ্ঞান নিয়ে কেবল পড়াশোনাই নয়, হাতে কলমে বিজ্ঞানকে প্রয়োগ করে নিজের দক্ষতায় কিশোর পর্যায়ের চৌকাঠে দাঁড়িয়ে নতুন জিনিসকে নতুন করে জনসমক্ষে তুলে ধরার নিরন্তর প্রচেষ্টা। বছর তেরোতে কৈশোরের লক্ষ্মণ রেখায় দাঁড়িয়েই আবারও তাক লাগালো চুঁচুড়ার বাসিন্দা তথা হুগলি কলেজিয়েট স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র অভিজ্ঞান কিশোর দাস। ছোট থেকে বিজ্ঞানকে পাথেয় করেই অজানাকে জানার পাশাপাশি নতুনকে নতুন করে জনসাধারণের দরবারে তুলে ধরাই অভিজ্ঞানের একমাত্র নেশা। বিগত দিনে শহরাঞ্চলের মজে যাওয়া পুকুরকে সংস্কারের মডেল তৈরি করে স্বল্প দৈর্ঘের চলচ্চিত্র জনসমক্ষে এনে ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স ফেস্টিভ্যাল অর্থাৎ ভারতের আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান উৎসবে জল সংরক্ষণ বিভাগে প্রথম পুরস্কার জয় করেছে।
তবে স্রষ্টা কখনও থেমে থাকে না সৃষ্টির অমোঘ আনন্দেই তাঁর আত্মতৃপ্তি। সেই তৃপ্তি পেতেই এবার ঊনবিংশ শতাব্দীর আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ মধুসূদন গুপ্তকে নিয়ে আরও একটি তথ্যচিত্র বানিয়ে ফেললো খুদে অভিজ্ঞান। পাশাপাশি এ বছর ভারতের আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান উৎসবের অন্যতম বিভাগ বিজ্ঞান বিষয়ক চলচ্চিত্র উৎসবে সেই তথ্য চিত্রটি প্রদর্শনের জন্য নির্বাচিত হওয়ায় অভিজ্ঞান পাড়ি দিয়েছে গন্তব্যে। আজ ১০ই ডিসেম্বর। গোয়ার রাজধানী পানাজিতে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান উৎসব। আর আগামী এগারোই ডিসেম্বর সূচনা হবে ভারতের আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান চলচ্চিত্র উৎসবের। সপ্তম বর্ষে পদার্পণ কারী এই উৎসব সমাপ্ত হবে আগামী তেরোই ডিসেম্বরে। যে উৎসবের উদ্যোক্তা কেন্দ্রীয় সরকারের ভূবিজ্ঞান মন্ত্রক এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক।
এই উৎসবে সত্তরটির বেশি দেশের সাত একশো চল্লিশ টি চলচ্চিত্র থেকে বেছে নেওয়া হয়েছে মাত্র পঞ্চান্ন টিকে যেগুলির মধ্যে স্থান পেয়েছে অভিজ্ঞান পরিচালিত আধুনিক ভারতের সুশ্রুত পণ্ডিত মধুসূদন গুপ্ত। একদা চুঁচুড়ার বাসিন্দা ভারতের শোষিত পণ্ডিত মধুসূদন গুপ্তকে কেন্দ্র করেই শেষ খ্রিষ্ট এই তথ্যচিত্রটিতে রয়েছে চুঁচুড়া লঞ্চঘাট, ঘড়ির মোড়, ডিএম অফিস, হুগলি মহসিন কলেজ, হুগলি কলেজিয়েট স্কুল, চুঁচুড়া মাঠ, জেলা হাসপাতাল, খরুয়া বাজার, গোরস্থান সহ চুঁচুড়ার বিভিন্ন জায়গার পরিচয়। এই তথ্যচিত্রটি বিজ্ঞানের পাশাপাশি চুঁচুড়ার ইতিহাসকেও যে বিশ্ব দরবারে সমানভাবে সমৃদ্ধ করবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এদিন এ বিষয়ে অভিজ্ঞানের বক্তব্য শল্য চিকিৎসক হিসাবে বহু মানুষই সুশ্রুত পণ্ডিত মধুসূদন গুপ্তের নামই এখনো জানেন না।
তবে এই স্বর্ণর চিকিৎসায় তাঁর অবদান ঠিক কতখানি জনসাধারণকে সেই বিষয়ে অবগত করাতেই তাঁর এই প্রচেষ্টা। এবং সেটিকে সফল করতে অভিজ্ঞানের নিরলস প্রচেষ্টা ও তাঁর বাবা অনিন্দ্য কিশোর দাশ ও মা প্রিয়াঙ্কা দাসের সহযোগিতার পাশাপাশি যথেষ্ট অবদান রয়েছে তাঁর শিক্ষকদের। যারা প্রতিনিয়ত তাঁকে পড়াশোনায় উৎসাহ প্রদানের পাশাপাশি নিজের জ্ঞানের পরিধিকে বিস্তার করতে সর্বদা বটচ্ছায়ার ন্যায় প্রশান্তি প্রদান করে চলেছেন। অন্যদিকে অভিজ্ঞানের এই কর্মকাণ্ডে খুশি প্রকাশ করেন অভিজ্ঞানের মা প্রিয়াঙ্কা দাস। পাশাপাশি আগামী দিনে অভিজ্ঞানের আরও সাফল্য কামনা করেন তিনি।