এই মুহূর্তে জেলা

তিন নদীর বাঁধ উপচে প্লাবিত আরামবাগের বিস্তৃন এলাকা।


মহেশ্বর চক্রবর্তী , ৩১ জুলাই:- অবশেষে আশঙ্কাই সত্যি হলো।দ্বারকেশ্বর, মুন্ডেশ্বরি, দামোদর নদীর জল বাঁধ উপচে প্লাবিত হলো আরামবাগের বিস্তৃন এলাকা। কয়েক হাজার মানুষ জলবন্দি হলো আরামবাগে।পাশাপাশি বিঘার পর বিঘা জমির ধান জলে তলায়। বর্ষাকালীন আমন ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মাথায় হাত চাষীদের জানা গিয়েছে আরামবাগ মহকুমায় বহু মাটির বাড়ি বন্যার জলে পড়ে গিয়েছে। বাড়ির ভেতর বন্যার জল ঢুকে পড়ায় আতঙ্কে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন বন্যা দুর্গতরা।বৃষ্টির জল বন্ধ হলেও দুর্ভোগ কাটেনি। আরামবাগ পৌরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বন্যার জলে প্লাবিত। জানা গিয়েছে শুক্রবার রাত থেকেই দ্বারকেশ্বর নদীর জল বাড়তে থাকে।বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইতে থাকে। অবশেষে নদীর জল কালিপুর এলাকাকে প্লাবিত করে। অধিকাংশ মাটির বাড়ি পড়ে যায়। বন্যা দুর্গতদের উদ্ধার করে ত্রান শিবিরে রাখা হয়েছে।

কয়েকশো মানুষ জলমগ্ন হয়ে পড়ে। পানীয় জলের টিউবয়েলগুলো বন্যার জলে ডুবে যাওয়ায় সমস্যায় রয়েছে কালিপুর এলাকার মানুষ। তবে প্রশাসন তৎপরতার সঙ্গে বন্যা দুর্গতদের সাহায্য করে। পাশাপাশি আরামবাগের আরও বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়। ড্রেনের দুর্গন্ধ যুক্ত জল আর বন্যার জল মিলে মিশে একাকার। আর এতে করেই দুর্ভোগ বাড়ে শহরবাসীর। অপরদিকে গ্রামের চিত্র আরও ভয়াবহ আকার নিয়েছে। এই মহকুমার ছয়টি ব্লকের মধ্যে কম বেশি সব জায়গাতেই বন্যা জলে প্লাবিত। এই বিষয়ে আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গুনোধর খাঁড়া জানান, শুক্রবার রাত থেকেই দ্বারকেশ্বর নদী ভয়াবহ আকার নেয়। নদীবাঁধ এলাকা প্লাবিত হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা দুর্গতদের জন্য ত্রাণ শিবির করা হয়েছে। তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রশাসন সুত্রে জানা গিয়েছে, গোঘাটের বালি, কোটা, পশ্চিমপাড়া, খাটোগ্রাম, মান্দারনঅঞ্চল, খানাকুলের কিশোরপুর এক ও দুই অঞ্চল, ঠাকুরানী চক, ঘোষপুর, জগৎপুর, মাড়োখানা, শাসবলসিংহপুর, চিংড়া, নতিবপুর, আরামবাগের সালেপুর এক ও দুই নম্বর অঞ্চল এবং পুড়শুড়া ব্লকের ছয়টি অঞ্চলে হাই অ্যালাট জারি হয়। এই সব অঞ্চলে বন্যা দুর্গতমানুষদের স্কুল বাড়ি ও সরকারি ত্রান শিবিরে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই বিষয়ে আরামবাগের বিডিও জানান, বন্যা দুর্গত মানুষদের তৈরি করা খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ২৪ ঘন্টা কন্ট্রোল রুম খোলা রয়েছে। দ্বারকেশ্বর নদীর জল বাড়ছে। আমরা এলাকার মানুষকে সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছি।অন্যদিকে খানাকুল দুই নম্বর ব্লকের বিডিও জানান, মাড়োখানা, জগৎপুর ও শাসবলসিংহপুর অঞ্চলের মানুষকে বেশি করে সতর্ক করা হয়েছে। এখনও পযন্ত বড়ো কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সবমিলিয়ে আরামবাগ মহকুমার ওপর দিয়ে প্রভাবিত নদীগুলির জল বাড়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন জলবন্দি মানুষ।