এই মুহূর্তে জেলা

ট্রেনের চাকা বন্ধ হতেই পেটে টান পড়েছে রেলের হকারদের।

হুগলি,২৫ এপ্রিল:- কোভিড ১৯ এর মোকাবিলায় লক ডাউনে ট্রেনের চাকা বন্ধ হতেই পেটে টান পড়েছে রেলের হকারদের।ব্যবসাপত্র বন্ধ হতেই থমকে গিয়েছে সংসার।কাজ হারিয়ে পরিবারের পেট চালাতে গিয়ে ব্যবসার সামান্য পুঁজি ও শেষ।সব মিলিয়ে টানা লক ডাউনে হাহাকার শুরু হয়েছে রেল হকারদের পরিবারে।পূর্ব রেলের হাওড়া বর্ধমান শাখায় প্রায় হাজারের উপর হকার প্রতিদিন হাওড়া বর্ধমান ট্রেনের কামড়ায় হকারি করেন।সেফটিপিন থেকে গৃহস্থের টুকুটাকি। মুখোরোচক খাবার থেকে মুখশুদ্ধি সব কিছু নিয়েই হকারেরা ট্রেনের কামড়ায় যাত্রীদের সামনে হাজির হন। কিন্তু ট্রেন বন্ধ হতেই ব্যবসা লাঠে উঠেছে তাদের।লক ডাউনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হতেই ঘর ভাড়া বাকি পড়েছে হুগলি মোড়ের বাসিন্দা ছড়াকার ভাই দাসের।প্রায় ২৪ বছর ধরে হাওড়া বর্ধমান শাখায় ঘুরে ঘুরে মজার মজার ছড়াগান গেয়ে নিজের লেখা চটি বই বিক্রি করে কোন রকমে স্ত্রী সন্তান নিয়ে সংসার চালান।কিন্তু ২২ মার্চ থেকে ট্রেন বন্ধ হতেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে ভাই দাসের।এ দিন তিনি বলেন,

There is no slider selected or the slider was deleted.

                                                                                                                                                                                                                                         এত বছর ধরে টেণে হকারি করছি কিন্তু কখনো এমন পরিস্থিতিতে পড়িনি।ট্রেনে হকারি করতে গিয়ে ট্রেণ বিভ্রাতে কোথাও আটকে পড়েছি।রাতে বাড়ি ফিরতে পাড়িনি এমন হয়েছে।কিন্তু টানা এতদিন ট্রেন বন্ধ থাকেনি।তিনি বলেন, ট্রেনে হকারি করেই রুজিরুটি জোটাই। কিন্তু ট্রেন বন্ধ হতেই আয়ের রাস্তা বন্ধ হয়েছে।পারায় ঘুরে বই বিক্রি করা সম্ভব নয়।ব্যবসার সামান্য যে পুঁজি সেতাও এই কয়দিনে বাড়িতে বসে থাকায় শেষ হয়ে গিয়েছে।বাড়িতে মা,স্ত্রী ও দশ বছরের মেয়ে রয়েছে।ট্রেন বন্ধ থাকলে এরপর আর ভাত জুটবে না।মানুষের থেকে হাত পেতেও কিছু নিতে ইচ্ছে করে না। চুঁচুড়ার ময়নাডাঙায় থাকেন বছর ৫৬ এর দেবাশিষ রায়।হাওড়া ব্যান্ডেল শাখায় প্রায় ২০ বছর ধরে আনারদানা,আমলকি,মুখশুদ্ধি বিক্রি করেন। কিন্তু এতদিনের ব্যবসায়িক জীবনে কখনো এরকম পরিস্থিতি পরেন নি।দেবাশিষের কথায়,আমাদের ব্যবসা ট্রেনের উপরেই নির্ভরশীল।লক ডাউনে ট্রেন বন্ধ হতেই ব্যবসা বন্ধ হয়েছে।কল্যানী থেকে ব্যবসার জিনিষ কিনে আনতাম।সেই কারখানা ও বন্ধ।এখন বেকার হয়ে ঘরে বসে আছি।পরিবারে ৪জন সদস্য।জানিনা লক ডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি পেলে কী অবস্থা হবে।আদিসপ্তগ্রামের নামাজগড়ে থাকেন সুভাষ বিশ্বাস ।৪০ বছর ধরে ট্রেনে হাওড়া বর্ধমান মেন শাখায় হকারি করে সংসার চালিয়ে আসছেন।

There is no slider selected or the slider was deleted.

                                                                                                                                                                                                                                             কিন্তু ট্রেন বন্ধ হতেই অবস্থা শোচনীয় গোটা পরিবারের।একমাত্র রোগেরের রোজগার বন্ধ হতেই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ৬৫ বছরের সুভাষ।তিনি বলেন, অবস্থা এতই খারাপ ল্ক ডাউনের পর নিজের বাড়ি ছেড়ে ভদ্রেশ্বরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে পরিবার নিয়ে উঠেছি।বৈচি গ্রামের সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ২৩ বছর ধরে ট্রেনে হকারি করি।সেখান থেকেই বিয়ে করেছি।স্নগসার হয়েছে।সকাল ৫টা ৪০ এর ডাউন ট্রেনে উঠে  বেলা ১২টায় বাড়ি ফিরতাম।দুপুরে খাওয়া শেষ করে আবার বিকেল ৪টে থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ট্রেনে লজেন্স বেচতাম.৩০০ টাকার মতো গড়ে আয় হত।সেই আয় দিয়েই পরিবারের চাহিদা পূরন করতাম।কিন্তু লক ডাউনে চরম বেকায়দায় পড়েছি।সংসারের খরচ তো আছেই তাঁর উপড়ে দাদা অসুস্থ।ট্রেন চালু না হলে ব্যবসা শুরু করতে পারব না।অন্য কোন কাজ এই বয়সে করতে পারব না।চোখ বন্ধ করতেই ভবিষ্যতের কথা ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছি।

There is no slider selected or the slider was deleted.