কলকাতা এই মুহূর্তে

মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ , বিধানসভার আটটি চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা বিজেপির বিধায়কদের।

কলকাতা, ১৩ জুলাই:- মুকুল রায়কে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত করার প্রতিবাদে বিজেপির বিধায়করা বিধানসভার আটটি কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছে। বিধানসভায় আজ বিজেপির পরিষদীয় দলের এক বৈঠকের পর মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা সহ ৮ জন বিধায়ক অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে ইস্তফা পত্র তুলে দেন। পরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়করা রাজভবনে রাজ্যপালের কাছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নালিশ জানাতে যান। দলত্যাগ করার পরও বিধানসভায় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদে বসানো হয়েছে মুকুল রায়কে। অর্ধশতাব্দীর প্রথা ভাঙা নিয়ে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছে বিজেপি। মঙ্গলবার এরই প্রতিবাদে‌ মোট ৮টি কমিটি থেকে ইস্তফা দিলেন গেরুয়া শিবিরের বিধায়করা। ৬ জন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদ এবং দু’জন হজ কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেন।

তালিকায় রয়েছেন বিরোধী দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা, বিষ্ণু প্রসাদ শাস্ত্রী, মিহির গোস্বামী, আনন্দময় বর্মন, অশোক কীর্তনীয়া, নিখিল দে, দীপক বর্মন-সহ মোট আটজন। পদত্যাগ করেই স্পিকারের ঘর থেকে বেরিয়ে যান বিজেপির এই আট বিধায়ক। এরপরই তাঁদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানান অধ্যক্ষ। কিন্তু নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় তাঁরা। তাঁদের দাবি, যেখানে মুকুল রায়কে PAC চেয়ারম্যান করা হয়েছে, যেভাবে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছেন, তা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই মুকুল রায় PAC চেয়ারম্যান পদে থাকলে বিজেপি বিধায়করা নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়াবেন না। আগামী শুক্রবার ৪১ জন চেয়ারম্যানকে বৈঠকে ডেকেছেন অধ্যক্ষ। কিন্তু বিজেপির তরফে সেখানে কেউ থাকবেন না বলেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটি ও হাউস কমিটি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই শাসক-বিরোধী টানাপোড়েন চলছিল। বিরোধীদের দাবি ছিল, ১৫টি কমিটির চেয়ারম্যান পদ। ১০টির বেশি ছাড়তে রাজি হয়নি শাসক শিবির। সিদ্ধান্তে অনড় ছিল বিরোধীরাও। তবে দু’পক্ষের মধ্যে বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে PAC চেয়ারম্যান পদ নিয়ে। চেয়ারম্যান কে হবেন, তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়। এই কমিটির জন্য ছ’জন বিধায়কের নাম পাঠায় গেরুয়া শিবির। সেখানে মুকুল রায়ের নাম ছিল না। এর মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, মুকুল রায় যেহেতু বিজেপিরই বিধায়ক, তাই তাঁকেই চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হবে। বিধানসভা অধিবেশন চলাকালীন তা কার্যকরও করা হয়।