এই মুহূর্তে জেলা

বিজেপি প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট তৃণমূল নেতা , কর্মীদের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

হুগলি , ২ এপ্রিল:- বিজেপি প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট তৃণমূল নেতা। বিতর্কিত এই ঘটনাটি ঘটেছে হুগলি জেলার ১৯০ নং চুঁচূড়া বিধানসভা আসনে। বিজেপি প্রার্থী সাংসদ লকেট চ্যাটার্জির নির্বাচনী এজেন্ট হয়েছেন তাঁর দাদা সুশান্ত চ্যাটার্জি। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বিজেপি প্রার্থীর অনুগামী মহলেও ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। ক্ষোভ বিক্ষোভ নজরে পড়েছে জেলা বিজেপির অন্দরেও। অন্য দল থেকে এনে সেই দাদাকেই কেনও, প্রশ্ন উঠেছে প্রার্থীর কাছে দলীয় কর্মীদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে।যদিও গত লোকসভা নির্বাচনে সুশান্ত বাবুই ছিলেন লকেট চ্যাটার্জির নির্বাচনী এজেন্ট। তখন দলে তাঁকে নিয়ে কোনও ক্ষোভ বিক্ষোভ ছিলোনা। কারণ তিনি তখন বিজেপিতে ছিলেন এবং লকেট চ্যাটার্জির ছায়া সঙ্গী ছিলেন। কিন্তু পরিবর্তন হয়েছে গত সেপ্টেম্বরে মাসের ২৬ তারিখ। দক্ষিণেশ্বরে কৃষি বিলের বিরোধিতায় তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে আয়োজিত এক বিক্ষোভ কর্মসূচিতে হাজির হয়ে তৃণমূল কংগ্রেস যোগ দিয়েছিলেন সুশান্ত চ্যাটার্জি। কামারহাটি পুরসভার প্রশাসক গোপাল সাহার উপস্থিতিতে তাঁর হাতে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় পতাকা তুলে দিয়েছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র। সুশান্ত বাবু সেদিন বলেছিলেন, তিনি অনেক সামাজিক কাজে যুক্ত।

একাধিক ক্লাবের সভাপতি তিনি। আরও বেশি করে সামাজিক কাজ কর্মে যুক্ত হতে চান, যেটা বিজেপিতে থেকে সম্ভব হচ্ছে না। তৃণমূল কংগ্রেস অনেক বেশি জনমুখী তাই তিনি যোগ দিলেন। এর পরে কেটে গেছে ৬ মাস। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা একাধিক সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়। তখন বিজেপির সঙ্গে কোনও যোগ ছিলোনা সুশান্তর। হঠাতই আবার বিজেপি প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্টের ভূমিকায় প্রত্যর্পণ অবাক করেছে বিজেপি নেতা কর্মী এবং সমর্থকদের। কারণ দল ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টা সকলেরই জানা, কিন্তু তৃণমূল ছেড়ে পুনরায় বিজেপিতে প্রত্যর্পণের খবর তাঁদের কাছে অজানা ছিল। সুশান্ত বাবু নিজেও জানিয়েছেন, তিনি তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়েননি। কারণ মদন মিত্রর সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক। ওদিকে আবার চুঁচুড়ায় বিজেপির প্রার্থী তাঁর নিজের বোন। ফলত অনেকটাই দোটানায় পড়েছেন তিনি।

আগেও লোকসভা নির্বাচনে তিনি বোনের নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন। তাই এই নির্বাচনেও তাঁকে এজেন্ট থাকতে বলা হয়েছে। সুশান্ত বাবু আরও বলেন একদিকে মদন মিত্রর সঙ্গে গভীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক অন্যদিকে নিজের বোন। এছাড়াও বর্তমানে তিনি কাজ কর্ম নিয়ে খুবই ব্যস্ত, ইয়ার এন্ডিং চলছে তাই সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অসিত মজুমদার বলেছেন, কেনও ওদের দলে কারোর কি নির্বাচনী এজেন্ট হওয়ার যোগ্যতা ছিল না। নাকি উনি দলের কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। প্রার্থী থেকে নেতা কর্মী সবই, ওই দলটার গোটাটাই ধার করে চলছে। এখন দেখতে পাচ্ছি ওদের দলে নির্বাচনী এজেন্টও নেই। সেটাও ধার করে দিতে হচ্ছে। অসিত বাবুর অভিযোগ, চুঁচুড়া কেন্দ্রে প্রার্থী এবং তার নির্বাচনী এজেন্ট দুজনেই বহিরাগত। শুধু ভোট চাওয়ার সময় আসে, ভোট মিটে গেলে আর দেখা পাওয়া যায় না। গত নির্বাচনে জেতার পর কেন্দ্র ছেড়ে ছিলেন, তার পর গত দুবছর সাংসদের দেখা পায় নি সাধারণ মানুষ।