কলকাতা , ৯ মার্চ:- মৃতদেহ নিয়ে রাজনীতির অভিযোগ বিজেপির। সোমবার সন্ধ্যায় কলকাতায় পূর্বরেলের সদর দপ্তরে অগ্নিকাণ্ড ও প্রাণহানীর ঘটনায় রাজনীতির রঙ লেগেছে।ওই ঘটনার দায় কার তা নিয়ে তরজা শুরু হয়েছে রাজ্যের শাসক ও বিরোধীদের মধ্যে। উত্তপ্ত তর্ক বিতর্কের আগুনে গতি সঞ্চার করেছে জোড়ালো ভোটের হাওয়া। রাজ্য রাজনীতির বিশ্লেষকরা অবশ্য এতে নতুনত্ব কিছু দেখছেন না। তাদের মতে যে কোন ঘটনায় রাজনৈতিক রঙ লাগানোটা এরাজ্যে চিরকালীন দস্তুর। তাই মুখে দূর্ঘটনা নিয়ে রাজনীতি না করার কথা বললেও ভোটের মুখে এই মর্মান্তিক ঘটনাকে পুঁজি করার লোভ সামলানো কঠিন যে কোন রাজনৈতিক শিবিরের পক্ষেই। সোমবারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সেকথাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। সোমবার সন্ধে ছটা নাগাদ বিধ্বংসী আগুন লাগে পূর্ব রেলের সদর দফতরের ১৩ তলায়। ১০ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।তবে প্রাণ গেছে ৯ জনের।
সেই মৃত্যুর দায় নিয়ে শাসক বিরোধী তরজা চরমে উঠেছে।ঘটনার দিন একটু বেশি রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।দমকল ও পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলার পর রেলের ভূমিকা নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি।যদিও মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘দুর্ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না। ’তবুও তার বক্তব্যে রাজনীতির সুরই ধর পড়েছে অধিকাংশের কানে। তিনি দাবি করেন, আগুন নেভানোর কাজে রেলের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়নি।’ এতবড় একটি ঘটনায় রেল কর্তাদের অনুপস্থিতি নিয়ে বিস্ময়ও প্রকাশ করেন মমতা।স্ট্র্যান্ড রোডের অগ্নিদগ্ধ বিল্ডিংয়ের সামনে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটা পুরোটাই রেলের জায়গা। কিন্তু এখনও তাঁরা কেউ আসেননি। দমকলের পক্ষ থেকে একটা ম্যাপ চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটাও দেওয়া হয়নি।’ রেলের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার সুর স্পষ্ট ধরা পড়ল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়।এদিকে স্ট্র্যান্ড রোডের অগ্নিকাণ্ডের ১৮ ঘন্টা পর ঘটনাস্থল দেখতে এসে বিজেপির শীর্ষ নের্তৃত্ব অগ্নিমাত্রা পাল, মুকুল রায়, স্বপন দাশগুপ্তর মতো বিজেপি নেতারা পাল্টা তোপ দাগেন মমতাকে। তাঁকে নিশানা করে বলেন, এটা নির্বাচনী প্রচারের জায়গা নয়।
মুখ্যমন্ত্রী এখনও অন্যের জায়গা দেখছেন। গাঁফিলতি খুঁজছেন। তবে গাফিলতি নিশ্চয়ই ছিল, না হলে এত বড় মৃত্যু হতে পারে না। তবে এখন দোষ না দেখে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সময়।’পাশাপাশি অগ্নিমিত্রা পাল এদিন বলেছেন, আমি এখানে রাজনীতি করতে আসিনি। আগুনের জন্য ৯ টি প্রাণ গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে, এটা ভাবা যায় না। চলতি বছরে এটা প্রথম অগ্নিকাণ্ড নয়, কিছুদিন আগে রাজারহাটে এবং উত্তর কলকাতাতেও আগুন লেগেছিল। কেন এই আগুনগুলি লাগছে, কেন প্রতিবারই দমকল এত দেরীতে পৌছাচ্ছে কেন দমকলে জল পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে না। কাল রাতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মৃতদেহ নিয়ে রাজনীতি করছেন।’এদিন দুপুরে ঘটনাস্থলে আসেন সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী। তিনি রেলের গাফিলতির পাশাপাশি, দমকলের উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকারও অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, এখানে রাজনীতি করা উচিত নয়। ঘটনায় রেল ও রাজ্য- উভয়েরই গাফিলতি রয়েছে।