কলকাতা,হাওড়া,১ এপ্রিল:- বুধবার সকালে বেলঘরিয়ার করোনা আক্রান্ত প্রৌঢ়ের মৃত্যু হল। বিটি রোডের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে এদিন সকাল সাড়ে নটা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। করোনা পজিটিভ ওই প্রৌঢ় ডায়াবেটিস ও কিডনির ওষুখেও ভুগছিলেন। গত ২৬ মার্চ থেকে তিনি ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এরপর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ভেন্টিলেটরে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। মঙ্গলবারই তাঁর লালারসের রিপোর্টে করোনা ধরা পড়ে। তিনি বেলঘরিয়া রথতলা এলাকায় রোল-চাউমিনের দোকান চালাতেন। ফলে চিন্তায় পড়েছেন স্থানীয় প্রশাসনের কর্তারা। যদিও ৫৭ বছরের ওই প্রৌঢ়ের ভিন রাজ্য ও বিদেশ যাওয়ার কোনও নজীর নেই। ফলে এই ব্যাপারে কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কর্তাদের। বেলঘরিয়ার ওই বেসরকারি হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বেঁধে দেওয়া নিয়ম মেনেই ওই প্রৌঢ়েক দেহ সংরক্ষণ করা হয়েছে। এরপর নিয়ম মেনেই দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করবে প্রশাসন। হাওড়ায় ফের করোনা আক্রান্তের মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। মধ্য হাওড়ার রাজবল্লভ সাহা সেকেন্ড বাই লেনের বাসিন্দা ওই প্রৌঢ় ( ৫৭ ) করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি ছিলেন গোলাবাড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই মঙ্গলবার তাঁর মৃত্যু হয়।
রাতেই রিপোর্ট আসে তাঁর করোনা পজিটিভ ছিল। মৃত ব্যক্তি কলকাতার বড়বাজার এলাকার ব্যবসায়ী ছিলেন বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিনি সম্প্রতি বিদেশ থেকে ফিরেছিলেন। যদিও এই খবরের সত্যতা জানা যায়নি। হাওড়ার কালিবাবুর বাজার এলাকার ফ্ল্যাটের চারতলায় স্ত্রী’কে ( ৪৭ ) নিয়ে থাকতেন তিনি। ফ্ল্যাটের তিনতলায় থাকতেন প্রৌঢ়ের সম্পর্কে ভাই ( ৫৯), ভাইপো ( ২৯ ) ও ভাইপো’র স্ত্রী ( ২৪ )। পরিবারের এই চার সদস্যকেই ডুমুরজলার কোয়ারেন্টিন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, গত ২৯ তারিখ থেকে ওই প্রৌঢ় অসুস্থ ছিলেন। তাঁকে পরে ভর্তি করা হয়েছিল গোলাবাড়ি এলাকার এক বেসরকারি হাসপাতালে। করোনার উপসর্গ থাকায় তাঁর লালারসের নমুনা পাঠানো হয়েছিল কলকাতায়। রিপোর্ট আসে পজিটিভ। কিন্তু তার আগেই প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয় বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। এদিকে, এই ঘটনার পর হাওড়ার ওই বেসরকারি হাসপাতাল জীবাণুমুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। মৃতের বাড়িও জীবাণুমুক্ত করা হবে বলে জানা গেছে। এর পাশাপাশি, স্বাস্থ্য দফতরের নিয়ম মেনে দেহ অন্ত্যেষ্টির কাজ করা হবে বলেও জানা গেছে। এদিকে, হাওড়া পুরসভার যে ওয়ার্ডে ওই প্রৌঢ় থাকতেন সেই ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের ওয়ার্ড সভাপতি শৈলেন দাস দাবি করেন, গত ২১ তারিখে মালয়েশিয়া থেকে ওই প্রৌঢ় ফিরেছিলেন। এরপর তারা কলকাতায় কোথাও কয়েকদিনের জন্য ছিলেন। ২৬ তারিখ রাতে এরা পরিবার নিয়ে হাওড়ায় তাদের ফ্ল্যাটে ফিরে আসেন। এই খবর জানার পরই আমরা তখনই প্রশাসনকে বিষয়টি জানাই। হাওড়া পুরসভার স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফ থেকেও তাদের বাড়িতে বারবার ভিজিট করা হয়। যদিও তারা শারীরিক অসুস্থতার খবর ও অন্যান্য তথ্য গোপন করেন। এরপর আমরা খবর পাই গত ৩০ তারিখ তিনি উত্তর হাওড়ার গোলাবাড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরপর মঙ্গলবার তার মৃত্যু হয়। এই খবরের পরে আমরা এলাকার মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছি আপনারা কেউ ঘরের বাইরে বেরবেন না। সবাই বাড়িতে থাকুন। যদি খুব প্রয়োজন হয় তাহলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আমরা যতটা সম্ভব আপনাদের বাড়িতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দেব। এবং যাতে এই এলাকায় স্যানিটাইজারের কাজ করা হয় এবং এলাকাকে জীবাণুমুক্ত করা হয় আমরা সেই অনুরোধ প্রশাসনের কাছে রাখব।