প্রদীপ সাঁতরা ,১০ এপ্রিল:- কলকাতা সহ বিভিন্ন অঞ্চলের রাস্তাঘাটে পুলিশ- প্রশাসন, বিভিন্ন মানুষ, সমাজসেবী সংগঠনগুলি নানাভাবে মানুষকে সচেতন করে চলেছেন করোনা ভাইরাস-এর বিরুদ্ধে। গত 23 মার্চের পর থেকে একটি অভিনব সচেতনতা দৃশ্য দেখা যাচ্ছে কলকাতা ও শহরতলীর পথেঘাটে। মাথার হেলমেটে করোনা ভাইরাসের আকৃতির মডেল বানিয়ে মাথায় পরে বিভিন্ন অলিগলিতে ঘুরে যাচ্ছে ই এম বাইপাস সংলগ্ন এলাকার কয়েকজন যুবক। এক যুবক জানালেন, তারা এটা করছেন মানুষ যাতে বোঝেন করোনা রুখতে আতঙ্ক নয়, বাইরে বেরনোটাই উচিত নয়। লকডাউন ঘোষণার পর থেকে তারা লক্ষ্য করেছেন, কিছু কিছু জায়গাতে মানুষ যেন ছুটি কাটাচ্ছেন। ছুটির মেজাজে কেনাকাটা, খাওয়া-দাওয়া, গল্প-গুজব করে যাচ্ছেন। অথচ এই লকডাউন সময়কালটি ছুটি কাটানোর সময় নয়। বরং করোনা ভাইরাস-এর মত প্রাণঘাতী ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচার জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার একটি পদ্ধতি মাত্র। লকডাউন মানলে বাইরে অযথা না বেরিয়ে ঘরের ভেতর থাকলে করোনা ভাইরাস-এর আক্রমণ থেকে শুধু নয়, ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার হাত থেকেও অব্যাহতি পাওয়া যাবে। তারা লক্ষ্য করেছেন, অনেকে ক্যারাম খেলছে, ফুটবল খেলছে, তাস খেলছে, বন্ধুবান্ধব আত্মীয়স্বজন মিলে বাড়িতে প্রায় হুল্লোড় পার্টি বসিয়ে দিচ্ছে।
একশ্রেণীর মানুষ সুযোগের সদ্ব্যবহার করে প্রতিদিন বাজারে যাচ্ছে। চুটিয়ে খাওয়া-দাওয়া সারছে এবং খোশগল্পে মেতে উঠছে। গল্পগুজবের বিষয়বস্তু করোনা ভাইরাস হলেও সচেতন না হয়ে বিষয়টিকে হাল্কাভাবে নিচ্ছে। যার ফলে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পথ প্রশস্ত হচ্ছে। তাই তারা এইরকম ভাবে হেলমেটে করোনা ভাইরাস-এর মডেল বানিয়ে বিভিন্ন এলাকায় তাদের অন্যান্য সঙ্গী যুবকদের দিয়েছেন। তারা নিজের নিজের এলাকাতে মানুষকে সচেতন কররেন। মানুষ যাতে ঘর থেকে না বেরয়। মানুষদের থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন জানতে চাইলে তারা জানালেন, অনেকের থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন তারা। অনেকেই সচেতন হচ্ছেন। নিজেদের ভুল বুঝতে পারছেন। কথা দিচ্ছেন বিনা জরুরি প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের হবেন না। তাদের এরকম প্রচেষ্টাকে কেউ তির্যক মন্তব্য করছেন কিনা সে প্রশ্নের উত্তরে তারা জানালেন, তাদের নিজেদের বাড়ির লোকজনদের আপত্তি সত্ত্বেও তারা বের হচ্ছেন। ভালো কাজে কেউ কাউকে পাগল বা অন্য কিছু বললেও তাতে তাদের কিছু যায় আসে না। তারা মানুষকে সচেতন করবেন করোনা ভাইরাস-এর বিপদ সম্পর্কে বোঝাবেন। মানুষ যাতে লকডাউন সময়কালে বাড়ির বাইরে না বেরয় সে প্রচেষ্টা করবেন।
তারা আরও জানালেন, ট্রাফিক আইনের নিয়ম মেনে মোটরসাইকেল বা স্কুটারে এই অভিনব হেলমেট মাথায় দিয়েই বের হচ্ছেন। হেলমেটগুলিকেই তারা করোনা ভাইরাস-এর রূপ দিচ্ছেন। তাদের এই অদ্ভুতদর্শন হেলমেট দেখে অনেকেই উৎসাহিত হচ্ছেন। তাতে করে তাদের প্রচারের সুবিধা হচ্ছে। কলকাতা এবং আশেপাশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের সঙ্গীদের মধ্যে এ ধরনের বেশ কিছু হেলমেট তারা দিয়েছেন। আরও তৈরি হচ্ছে। ঘরে থাকবেন, সুস্থ থাকবেন – এই কথাটি ঘরে ঘরে জনে জনে গিয়ে বলা সম্ভব নয় তাই তারা এভাবেই সচেতনতার কাজ করে যাচ্ছেন অভিনব এই প্রচারে মানুষদের থেকে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে এমনকি কলকাতা পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ যথেষ্ট সহযোগিতা করছেন, জানালেন যুবকরা।