হুগলি, ২ জানুয়ারি:- অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে ব্যাপক মারধর ও পেটে লাথি মারার অভিযোগে গ্রেফতার তৃনমুল অঞ্চল প্রধান। ধৃত ওই অঞ্চল প্রধানের নাম আশিক ইকবাল। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলি জেলার খানাকুলের পোল ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের চকভেদুয়া গ্রামে। অভিযোগ প্রধানের ফরমান অগ্রাহ্য ও মানতে না পারায় এক ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ কে ব্যাপক হারে মারধর ও তার পেটে লাথি মারা হয়।এই ঘটনার জন্য অভিযোগ তীর এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান আশিক ইকবালের বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের দাবী প্রধান ও তার দলবলের আক্রমনে আক্রান্ত ঐ অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর অবস্থা আশঙ্কা জনক হয়ে ওঠে। তার পেটের সন্তানের অবস্থাও অত্যন্ত আশঙ্কা জনক বলেই জানিয়েছে চিকিৎসকেরা। শুধু তাই নয়, আক্রান্ত ঐ গৃহবধূর স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ী ও দেওরকেও বেধড়ক পেটানো হয়। তাতে সরাসরি অভিযুক্ত হয়ে পড়েন তৃণমূলের এই প্রধান আসিক ইকবাল। ঘটনার জেরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত ঐ অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর নাম আলেনুর খাতুন। আক্রান্ত হন তার স্বামী সেখ মহঃ ইয়াসিন, তার মা সাহিদা বেগম ও ভাই সেখ মহঃ মহসীন। আক্রান্ত এই পরিবারে অভিযোগ স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের ফরমান মেনে চলতে হবে। তারই কথা শুনে চলতে হবে, তারই কথা মত থাকতে হবে। আর তিনি যা বলবেন সেটাই করতে হবে। বাড়ির মহিলা দেরও তার কথা মত চলতে হবে। আর তা না হলে, না মানতে পারলে, আর না মেনে চললে কপালে দুর্ভোগ আছে। প্রধানের এমনই ফরমানে অতিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা। অভিযোগ প্রধানের এই ফরমান মানতে পারবেন না বলে তার প্রতিবাদ করায় নৃশংস ভাবে মার খেতে হল এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে। তার পেটে লাথি মারেন প্রধান আসিক ইকবাল।
প্রধানের লাথি তে মারাত্মক জখম হন ঐ গৃহবধূ। অসহ্য পেটের যন্ত্রণা নিয়ে তাকে প্রথমে খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু এখানেও অবস্থার অবনতি হলে তাকে বর্ধমান মেডিকেল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। পাশাপাশি ঐগৃহবধূর শ্বশুর, শাশুড়ী ও দেওর কেও ব্যাপক ভাবে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার জেরে আক্রান্ত পরিবার খানাকুল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। যদিও এই বিষয়ে পোল ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আসিক ইকবাল নাকি গোটা ঘটনার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি নাকি জানান, এটা একটা পারিবারিক বিবাদ। তার সাথে এই ঘটনার কোন যোগাযোগ নেই। তিনি কাউকে আঘাত করেননি বলে জানান। তার নামে মিথ্যা অপবাদ করা হচ্ছে।তবে স্থানীয় মানুষের আরও অভিযোগ এই ভাবেই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান লাগাতার ভাবেই এলাকায় অত্যাচার করে বেড়ান। এই বিষয়ে খানাকুল বিধানসভার তৃনমুল নেতা মুন্সি নজিবুল করিম জানান, বিষয়টি শুনেছি। সত্য মিথ্যা যাচাই প্রশাসন করবে। যদি কেউ অপরাধ করে থাকে তাহলে প্রশাসন কড়াপদক্ষেপ নেবে। দল এই সব কাজের অনুমোদন দেয় না।আক্রান্ত পরিবারের পক্ষ থেকে খানাকুল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে পুলিশ গ্রেপ্তার করে অভিযুক্ত তৃনমুল প্রধানকে। এই বিষয়ে আরামবাগের এসডিপিও অভিষেক মন্ডল জানান, নিদিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পোল টু অঞ্চলের প্রধানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।