সুদীপ দাস , ৭ আগস্ট:- এই বাড়িতেই ছেলের প্রতিভার বিকাশ দেখে খুশি হয়ে বাবা পাঁচশত টাকা দিয়েছিল ছেলের হাতে । তার কাছে এটাই ছিল নোবেল এর থেকেও বড় উপহার । যে বাড়িতে বাবা-মা সকলের সঙ্গে দিনের পর দিন কাটিয়েছে সেই বাড়ি আজ উপেক্ষিত । তার ব্যবহৃত আরাম কেদারা ব্যবহার করছে অন্য কেউ । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ও পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাগান বাড়ি রয়ে গেছে অন্ধকারে সকলের নজর এড়িয়ে । আজ সেখানেই বেজে উঠলো নতুন করে রবীন্দ্রনাথের গান । পালন হল তার মৃত্যু দিবস , সরকারিভাবে নয় সাধারণ মানুষের উদ্যোগে ।
উদ্যোক্তাদের পক্ষে সপ্তর্ষি ব্যানার্জী বলেন ১৮৭৯ সালে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রকৃতির কোলে জীবন কাটাতে গঙ্গা পারে চুঁচুড়ার বড়বাজার এলাকায় এই দত্ত লজে ভাড়াটিয়া হিসাবে প্রবেশ করেন। সেই সুবাদেই দেবেন্দ্রনাথের ছেলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পদধুলি পরে এই বাড়িতে । গঙ্গাপথে বহুবার এই বাড়িতে এসেছিলেন বিশ্বকবি । এই বাড়িতেই বিশ্বকবি তাঁর পিতার হাত থেকে পুরস্কার স্বরূপ ৫০০ টাকা গ্রহন করেন । এই বাড়ির বারান্দায় বসে কবিগুরুর কলম থেকে বেশকিছু লেখা বেড়িয়েছিলো । কালক্রমে সে সময়ের দত্তরা এই বাড়ি অন্যের হাতে বিক্রি করে দেন । তবে সেই বাড়ি আজও বর্তমান চুঁচুড়ায় । বছর কয়েক আগে রবি ঠাকুরের স্বার্ধশতবর্ষে বাড়ির সামনের রাস্তায় পুরসভার পক্ষ থেকর একটি ফলক বসেছিলো বটে , কিন্তু মালিকানাধীন থাকায় আজও সরকারী উদ্যোগে দত্ত লজের রক্ষনাবেক্ষন করা হয়নি।
কালের নিয়মে তাই বাড়িটির আনাচে-কানাচে ফাটল ধরেছে । বিগত ৩ বছর ধরে এই বাড়িতে ভাড়া রয়েছেন চুঁচুড়ার আর এক দত্ত পরিবার । সেই পরিবারের পক্ষে সুলেখা দত্ত বলেন রবীন্দ্রনাথ যে বাড়িতে ছিলেন সেখানেই থাকার সৌভাগ্য আমাদের হয়েছে । এটা যে কত বড় প্রাপ্তি তা বলে বোঝাতে পারবো না । একই বক্তব্য সুলেখা দেবীর ছেলে অসীম দত্তেরও । তিনি বলেন বিশ্বকবি যে ঘর ব্যাবহার করেছেন সেখানে আমি রয়েছি । আমি চাই নব প্রজন্ম এই বাড়িটি সম্পর্কে জানুক। বর্তমান মালিক যদি এই বাড়িটি মেরামতির অনুমতি দেয় তাহলে আমি সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেবো। একদা কবির পদধুলি পরা এই বাড়ির রক্ষনাবেক্ষন করতে পারলেই সঠিকভাবে কবিপ্রনাম জানানো হবে !!