হুগলি, ৬ মে:- গরীব মানুষের রান্না ঘরের জিরেতে ১৮ শতাংশ জি এস টি আর বড়লোকদের হিরেতে জি এস টি ছাড়,এটাই বিজেপির উপহার দেশের মানুষকে, বিজেপিকে করা ভাষায় আক্রমণ শানালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। হুগলি জেলার পান্ডুয়া কোহিনুর রাইস মিলের মাঠে হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় এর সমর্থনে জনসভা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।এদিন গরমকে উপেক্ষা করেই অভিষেকের সভায় দেখা যায় জনজোয়ার।এদিন সভা শুরুর প্রথম থেকেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চরান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।এদিন সভা থেকে অভিষেক বলেন গত দশ বছরে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার কি করেছে সেটা সবাই দেখেছে,এখন প্রধানমন্ত্রী সভা করে বলছেন গত দশ বছরে ট্রেলার দেখেছে মানুষ,এবার নাকি পুরো সিনেমা বিজেপি দেখাবে। অভিষেক বিজেপির উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন বিজেপি সরকার গত দশ বছরে কি করেছে সেটা দেশের মানুষ দেখেছে।বিজেপি সরকার পেট্রোলের দাম বাড়িয়েছে, রান্নার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে, ডিজেলের দাম বাড়িয়েছে,গরীব মানুষের উপর জি এস টি বসিয়েছে,আবাস যোজনার টাকা আটকেছে, ১০০ দিনের টাকা আটকেছে মানুষকে আর কি দুর্দিন দেখাবে তারা। পান্ডুয়াতে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে জনসভা করতে এসে হুগলি লোকসভার প্রাক্তন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দিন তিনি বলেন বিগত পাঁচ বছর লকেট চট্টোপাধ্যায় এই লোকসভার সাংসদ ছিলেন গরিব মানুষের জন্য তিনি এবং তার দল ভারতীয় জনতা পার্টি কোন কাজ করেনি। গরিব মানুষের ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রেখেছে।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি তৈরির টাকা দেয়নি। একটা যেকোন ভিডিও দেখিয়ে দিন লোকসভা অথবা মন্ত্রীর কাছে লকেট চট্টোপাধ্যায় গরিব মানুষের পাওনা টাকা দাবিতে একটা বক্তব্য রেখেছে বা ডেপুটেশন দিয়েছে, দেখাতে পারবেন না। যদি দেখাতে পারেন আমি রাজনীতি করা ছেড়ে দেবো। রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে আমি এই লোকসভায় আর প্রচার করতে তাহলে আসবো না। লকেট চট্টোপাধ্যায়ের দলের কোচবিহারে নেত্রী বলছেন আগামী তিন মাসের মধ্যে লক্ষীর ভান্ডার বন্ধ হয়ে যাবে বলেছে। আপনারা লোকের চট্টোপাধ্যায় কে জিজ্ঞেস করুন। রাজ্যের বিজেপি নেতাদের স্টেজে বসিয়ে আপনাদের দলের নেত্রী বলেছেন লক্ষীর ভান্ডার বন্ধ করে দেবেন। এই বিষয়ে আপনার অবস্থান কি? সন্দেশখালি তে দেখলেন কিভাবে ষড়যন্ত্র করেছে আজকে তা প্রকাশ্যে চলে এসেছে। রাজনৈতিক স্বার্থে সন্দেশখালি তে বিজেপি বাংলার দশ কোটি মানুষকে ভারতবর্ষের ১৫০ কোটি মানুষের সামনে ছোট করে দিয়েছে। তাই যারা শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্বার্থে তৃণমূলকে ছোট করতে গিয়ে বাংলার মা-বোনদের সম্মান নিয়ে খেলা করছে। তাদের উচিত শিক্ষা দিয়ে দিতে হবে এই নির্বাচনে। বিগত লোকসভা নির্বাচনে জেতার পর আপনার এলাকার আবাসের টাকা বন্ধ হয়েছে, ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ হয়েছে, রাস্তার টাকা বন্ধ হয়েছে। এদের বাড়তে দিলে আলসার এবং পরবর্তী সময়ে ক্যান্সার পরিণত হবে। লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সাহস থাকলে বিগত পাঁচ বছরে তিনি এই হুগলি লোকসভার অন্তর্গত বিধানসভা এলাকাগুলিতে কোথায় কত টাকা নিয়ে এসেছিলেন কেন্দ্রের প্রকল্প তা প্রকাশ্যে আনুন।
আমিও প্রকাশ্য সভা থেকে তালিকা ঘোষণা করে যাচ্ছি এই এই জেলায় কোথায় কত টাকা লক্ষীর ভান্ডার, কন্যাশ্রী, মাইনরিটি স্কলারশিপ, সহ বেশ কিছু প্রকল্পের বরাদ্দ ঘোষণা করে যাচ্ছি। কয়েকদিন আগে দেশের প্রধানমন্ত্রী বলছেন মাছ খেলে তারা দেশবিরোধী। লকেট চট্টোপাধ্যায় এর দল বাঙালিকে দেশবিরোধী বলছে। যা কিছু হয় তার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করা হয়। তৃণমূল কংগ্রেসকে দায়ী করা হয়। সংবাদ মাধ্যমকে বলবো আজকের এই সবার ছবিটা তুলে মোদীজি কে পাঠাবেন যারা বাঙালিকে দেশবিরোধী বলছে তাদেরকে এই ছবিটা পাঠিয়ে বলে দিন। বাঙালি না থাকলে দেশ স্বাধীন হতো না। নেতাজি, রামমোহন রায়, ক্ষুদিরাম যদি না থাকতো তাহলে আজকে স্বাধীন ভারতবর্ষ হতো না। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মতো বাঙালিরা ছিল বলে অক্ষর জ্ঞান হয়েছে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না থাকলে এই লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মতো বিজেপির মহিলারাও যে বড় বড় কথা বলে সেই কথা বলার অধিকার পেতো না সিপিএমের সন্ত্রাসের কারণে। কেন্দ্রীয় সরকারের যদি সৎ সাহস থাকে তাহলে শেতপত্র প্রকাশ করুক কত টাকা আবাস যোজনায় দিয়েছে? লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মেরুদন্ড দেশের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বিক্রি করা আছে তাই তিনি প্রশ্ন করতে পারবেন না আমার বিরুদ্ধে সিবিআই ইডির একাধিক বার জেরা করেছে কিন্তু আমি অথবা আমার পরিবার মাথা নিচু করিনি বিজেপির কাছে। লকেট চট্টোপাধ্যায় কে হারিয়ে যদি রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় কে আপনারা জয় লাভ করান তাহলে আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই বাড়ি তৈরির টাকার প্রথম কিস্তি আমরা দিয়ে দেব। হুগলিতে পনেরশো শতাব্দীতে পর্তুগিজরা এসেছিল, তার ১০০ বছর পর ফরাসিরা এসেছিল আর এখন বর্গীরা এসেছে।
বিজেপির বর্গীরা এসেছে। আমি আজকে শুধু মায়েদের, ভাইয়েদের বলবো নিজেদের অধিকার কে সামনে রেখে লড়াই করুন। আপনারা দাবি করেছিলেন ৫০০ টাকা লক্ষীর ভান্ডার কে যেন হাজার টাকা করা হয়। আমরা তা করে দিয়েছি। বিজেপি যদি টাকা দেয় ভোটের জন্য আমি বলব টাকা নিয়ে নেবেন। দরদাম করে টাকা নিয়ে নেবেন। এই টাকা আপনাদের নিজেদের টাকা। তাই বলছি নিয়ে নেবেন। পদ্ম ফুলের থেকে টাকা নিয়ে জোড়া ফুলে ভোট দেবেন। আর আগামী ২০ তারিখ তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী দিদি নাম্বার ওয়ান রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় কে ভোট দেবেন এবং আপনারা জানেন সারা বছর রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় কিভাবে পিছিয়ে পড়া মহিলাদের নিয়ে কাজ করে তা আপনারা জানেন। একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাজার টাকা করে দিয়েছে আর আরেকদিকে মোদি গ্যাসের দাম হাজার টাকা করে দিয়ে আপনার থেকে নিয়ে গেছে টাকা। একজন টাকা দিয়েছে আরেকজন টাকা নিয়ে গেছে। আপনারা কাকে ভোট দেবেন আপনারা নিজেরাই ঠিক করবেন। আমি মানুষের চোখে মুখের ভাষা বুঝি মানুষ কেন্দ্রীয় সরকারের অত্যাচারে জর্জরিত অপেক্ষায় আছেন আগামী কুড়ি তারিখ মানুষ ওদের উচিত শিক্ষা দিয়ে দেবে। আপনারাই ১৪ সালে ইদুর কে বাঘ বানিয়েছেন আর এখন ২৪ সালে এসে সেই বাঘই আপনাদের খেতে যাচ্ছে তাই এই কাগজের বাঘকে আগামী কুড়ি তারিখ বিসর্জন দিতে হবে। আজ খুঁটিপুজো করে দিয়ে গেলাম আগামী ২০ তারিখ এদের বিসর্জন হবে। আগামী কুড়ি তারিখ অত্যাচারী স্বৈরাচারী গরিব মানুষকে যারা ভাতে মারতে চেয়েছে তাদের বিসর্জন হবে।