এই মুহূর্তে জেলা

বাসুমতি চালের জায়গা নিতে চলেছে হুগলি জেলার চুঁচুড়ামতি।

হুগলি, ১৪ সেপ্টেম্বর:- বাসমতি চালের জায়গা নিতে চলেছে এবার হুগলি জেলার চুঁচুড়ামতী।বিরিয়ানি হোক বা ফ্রায়েড রাইস সব ক্ষেত্রেই দরকার বাসমতি চালের। আর সেই চালের গন্ধ ও গন্ধেই মন ভরে ওঠে মানুষের। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের বাজারেও এখন সুগন্ধি চালের বিশেষ চাহিদা।এই পরিস্থিতিতে বিখ্যাত বাসমতি চালের বাজারে থাবা বসাতে আসছে রাজ্যের নিজস্ব চাল চুঁচুড়ামতী চাল। রাজ্য ও জাতীয় স্তরে একাধিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে স্টেট ভ্যারাইটি রিলিজ কমিটিতে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে চুঁচুড়া ধন্য গবেষণা কেন্দ্রের নতুন ধান। এর সুগন্ধ হিমালয় সংলগ্ন রাজ্যগুলোতে উৎপাদিত বাসমতির তুলনায় কিছুটা কম হলেও স্বাদ এবং ফলন অনেকটা বেশি। এই রাজ্যে বাসমতির ফলন যতটা হয় তার থেকে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেশি ফলন হবে চুঁচুড়ামতির।আর এর ফলে দাম থাকবে মানুষের নাগালের মধ্যেই। বাসমতি চাল মূলত ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, হিমাচলপ্রদেশ, জম্মু কাশ্মীরে উৎপাদিত হয়।

বিভিন্ন ধরনের বাসমতি ধানের গুণগত অনুযায়ী দামের তফাৎ আছে।কলকাতায় ৯০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা কেজি বাসমতি চাল পাওয়া যায়। তবেই ধানের রাজ্যে চাষ করলে তেমন গন্ধ যেমন থাকে না, তেমনি ফলন অনেক কম হয়। তাই চাষীরা এই ধান চাষে বেশি উৎসাহ দেখায় না। সেই কারণে বাসমতী চালের মত রাজ্যের নিজস্ব একটি জাত তৈরির চেষ্টা দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল ২০০৮ সাল থেকে চুঁচুড়া ধন্য গবেষণা কেন্দ্র নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করে। ইতিমধ্যেই স্টেশন ট্রায়াল,মাল্টি লোকেশন ট্রায়াল, ফ্রাম ট্রায়ালের ধাপ পেরিয়ে এসেছে চুঁচুড়ামতি। সর্ব ভারতীয় স্তরেও পরীক্ষায় পাশ করেছে হুগলি জেলার এই ধান। আর কিছুদিনের মধ্যেই রাজ্যের ভ্যারাইটি রিলিজ কমিটির কাছে ছাড়পত্রের জন্য পাঠানো হবে।

আর প্রাথমিক ভাবে এর নাম রাখা হয়েছে চুঁচুড়ামতি ১। এই বিষয়ে এক কৃষি বিজ্ঞানী বলেন খরিফ ও বোরো মরশুমে রাজ্যের যে কোনো প্রান্তে এই ধান চাষ করা যাবে। বাসমতি এই রাজ্যে চাষ করলে প্রতি হেক্টরে প্রায় তিন টন ফলন হয়।আর এই চুঁচুড়ামতি খরিফে সাড়ে চার টন ও বোরো ৫.৮৯ টন ফলন দিচ্ছে।কিছু জায়গায় উৎপাদন আরো বেশি। আর পশ্চিমবঙ্গে চাষ হওয়া বাসমতির তুলনায় চুঁচুড়ামতীর গন্ধ অনেকটা বেশী হবে। ধন্য গবেষণা কেন্দ্রের এক কৃষি অধিকর্তা বলেন আমাদের গবেষকরা বাসমতি জাতের নতুন ধান চুঁচুড়ামতি ১ উদ্ভাবন করেছেন। এর ছাড়পত্রের জন্য রাজ্য ভ্যারাইটিজ কমিটির কাছে যাবতীয় তথ্য পাঠাবো।তা পাওয়ার পর নিয়ম মেনে চাষীদের জন্য বীজ তৈরি হবে। আর চাষীদের এই বীজ হাতে পেতে আর অন্তত তিন বছর সময় লাগবে। তবে রাজ্যের নিজস্ব চুঁচুড়ামতি চাল যে বাসমতি চালের বাজারে ভালো রকমের থাবা বসাবে সেটা এককথায় বলাই যায়।আর রাজ্যের মুকুটেও জুরবে নতুন পালক।