হুগলি, ২৫ জুলাই:- ডেঙ্গু আক্রান্ত বাড়ছে হুগলি জেলায়, এখনো মৃত্যু না হলেও তিনশ ছুঁয়েছে আক্রান্ত, মোকাবিলায় একাধিক ব্যবস্থা প্রশাসনের। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক্রমা ভূঁইয়া জানিয়েছেন, গত বছর হুগলিতে সাত হাজারের বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত ছিল। চলতি বছরে জানুয়ারী মাস থেকে জুলাই পর্যন্ত হুগলি জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩০০ ছাড়িয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২০ জন। হুগলির শ্রীরামপুর, চন্দননগর, চুঁচুড়ায় আক্রান্ত বাড়ছে। পুরসভা গুলোর পাশাপাশি চন্ডীতলার মত গ্রামীন এলাকাতেও ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই। সাধারণত পুজোর আগে সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যায়। এবার আগে থেকেই ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। ডেঙ্গু মোকাবিলায় একাধিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হুগলি জেলা শাসক পি দীপাপ প্রিয়া। জেলা শাসক জানান, শ্রাবণ মাসে তারকেশ্বরে শ্রাবণী মেলা শুরু হয়েছে। এই সময় বহু পুণ্যার্থী বৈদ্যবাটি থেকে জল নিয়ে পায়ে হেঁটে তারকেশ্বর যান। দীর্ঘ পথে সিঙ্গুর হরিপাল তারকেশ্বরে রাস্তার পাশে পুণ্যার্থীরা বিশ্রাম নেন। সেখানে খাওয়া দাওয়া করেন। প্লাস্টিক, কাপ, বিভিন্ন ধরনের কন্টেনার বর্জ্য ফেলা হয় রাস্তার পাশে। এই সময় হালকা ও মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে। সেই বৃষ্টির জল ফেলে রাখা বর্জ্যে জমে লার্ভা থেকে মশা জন্মাতে পারে।
তাই বৈদ্যবাটি থেকে তারকেশ্বরে যাত্রাপথের দু দিক পরিষ্কার করা হচ্ছে নিয়মিত। যে সমস্ত খাল ও জলাশয় গুলো বর্জ্যে ভর্তি ছিল সেগুলোকেও সংস্কার করা হচ্ছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের চাষ করা গাপ্পি মাছ ছাড়া হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। এসএইচজি এবং ভিআরপিদের দিয়ে গ্রামের মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। পুরোসভার ক্ষেত্রে লাগাতার প্রচার চালানো হচ্ছে। স্বাস্থ দপ্তরের কর্মিরা ড্রেন পরিষ্কার আছে কিনা, কোথাও জল জমছে কিনা তা দেখছেন। ছবি তুলে আপলোড করছেন পোর্টালে। এর জন্য একজন করে সুপারভাইজার রয়েছে। পতঙ্গ বিদরা দেখছেন জমা জলে ডেঙ্গি লার্ভা আছে কিনা। কোন নতুন এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিললে সেই এলাকাকে চিহ্নিত করে সতর্কতা বাড়ানো হচ্ছে। জেলা প্রশাসন থেকে যে বিষয় গুলির উপর জোর দেওয়া হয়েছে ডেঙ্গি মোকাবেলায় সেগুলি হল, বৃষ্টির জল যাতে কোথাও জমে না থাকে সেটা দেখা, সচেতনতা বৃদ্ধি করা, কোথাও আবর্জনা জমে থাকলে সেগুলোকে পরিষ্কার করা।হাসপাতালগুলোতে ফিভার ক্লিনিকের ওপর জোর দেওয়া, জ্বরের উপসর্গ নিয়ে কেউ হাসপাতাল এলে তার রক্ত পরীক্ষা করা। চুঁচুড়া পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে মশা নাশক স্প্রে করার পাশাপাশি গাপ্পি মাছ ছাড়া হয়। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ডেঙ্গুকে ভয় পেতেই হবে। তবে সতর্ক ও সচেতন থাকলে ডেঙ্গু মোকাবিলা করা যায়। জ্বর হলেই হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে। সব হাসপাতালে ফিভার ক্লিনিক খোলা হয়েছে। জেলা হাসপাতালে প্লেটলেট প্রস্তুত রাখা আছে। প্রতিদিন দুশো জনের পরীক্ষা হচ্ছে গরে পাঁচ জন ডেঙ্গু পজিটিভ এর খোঁজ মিলছে।