এই মুহূর্তে জেলা

দেশে এখন এজেন্সি রাজ চলছে, প্রতিবাদের কন্ঠ দমানো যাবেনা। মন্তব্য ডা: শশী পাঁজার।

হাওড়া, ২৪ মার্চ:- দেশে এখন এজেন্সি রাজ চলছে। স্বৈরাচারী সরকার চলছে। কখনও বিভিন্ন এজেন্সিকে ব্যবহার করে আবার কখনও স্বৈরতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত নিয়ে চলছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার যদি মনে করে এভাবে বিরোধীদের দমিয়ে রাখা যাবে তাহলে তারা ভুল ভাবছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় হাওড়া পুরসভার এক অনুষ্ঠানে এসে এভাবেই কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন রাজ্যের মন্ত্রী ডা: শশী পাঁজা। তিনি বলেন, শাসক দল লোকসভা এবং রাজ্যসভায় এতোই হইচই করছে যে হাউস চলছে না। বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর মিলছে না। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বিরোধী জোট তৈরির চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, দেশে এখন এজেন্সি রাজ চলছে। তৃণমূল কংগ্রেস সহ বিভিন্ন বিরোধী দলকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনকি সংবাদমাধ্যমও ব্যতিক্রম নয়। এক ধরনের একনায়কতন্ত্র চলছে। তবে মানুষের কন্ঠ রোধ করা যাবে না। তৃণমূল কংগ্রেস এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছে এবং যেভাবে দলনেত্রী নির্দেশ দেবেন সেভাবেই এর মোকাবিলা করা হবে। এই নিয়ে কংগ্রেসকে তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থন করবে কিনা এই প্রশ্নে তিনি বলেন এটা দল ঠিক করবে। তবে যেভাবে বিরোধী দলের ওপর আক্রমণ নেমে আসছে তা মানুষকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ করা হবে। কিছুদিন আগে সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী।

উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের সঙ্গেও তার বৈঠক হয়। কিভাবে বিজেপির আক্রমণ রুখে দেওয়া যায় তা নিয়ে দেশজুড়ে চেষ্টা চলছে। ডা: শশী পাঁজা এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আরও বলেন, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে হবে। মানুষ চাইবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা থাকুক এবং ভারতবর্ষ এগিয়ে যাক। ওরা জবাব দিতে পারছে না বলেই লোকসভা রাজ্যসভা চলছে না। ব্যাপারটা ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শাসকদলই এত চিৎকার করছে যে পার্লামেন্ট চলতে দেওয়া যাচ্ছে না। যে ১ লক্ষ কোটির উপর দেউলিয়া হয়েছে, এলআইসি এবং এসবিআইয়ে সাধারণ মানুষের গচ্ছিত টাকার ভবিষ্যত কি সেই নিয়ে অনেক প্রশ্ন। গণতন্ত্র সবচেয়ে নিম্নস্তরে নেমেছে। ভয়ানক পরিস্থিতির দিকেই যাচ্ছে। বহুবার বলা হয়েছে দেশের অবস্থা একনায়কতন্ত্র বা প্রেসিডেন্সিয়াল ফর্ম। এখানে মানুষের অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। এরকম পরিবেশ তৈরি হচ্ছিল। এটা আজ হয়েছে। এই ব্যাপারটা তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধীতা করে।

কে পাওয়ারে আসবে, কে ক্ষমতা দখল করবে তা সাধারণ মানুষ ঠিক করে। সুতরাং ২০২৪ সালে ক্ষমতায় কে আসবে মানুষই ঠিক করবে। বিজেপির বিরোধী দলের ওপর আক্রমণ চলছে, তাদের বিরুদ্ধে এজেন্সি চালানো হচ্ছে এর বিরুদ্ধে বেশ কিছু বছর ধরে প্রতিবাদ চলছে। প্রতিবাদের কন্ঠ দমানো যাবেনা। যদি মনে করে এজেন্সির মাধ্যমে দমানোর চেষ্টা করা হয় তাহলে সেটা ভুল ধারণা। প্রসঙ্গত, শুক্রবার সন্ধ্যায় হাওড়া পুরসভার উদ্যোগে বিশেষভাবে সক্ষম বাচ্চাদের জন্য চিকিৎসাকেন্দ্র সক্ষমের শুভ সূচনা করেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা। মহেন্দ্র ভট্টাচার্য রোডের দালাল পুকুর এলাকায় তৈরি হয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। অনুষ্ঠানে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায় ও হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমন্ডলীর চেয়ারম্যান ডা: সুজয় চক্রবর্তী। উদ্বোধন হওয়া সেন্টারটিতে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি, আইকিউ অ্যাসেসমেন্ট, স্পিচ এন্ড ল্যাংগুয়েজ ইভালুয়াশন সহ একাধিক সুবিধা থাকবে। এদিন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘সক্ষম’ নামে পবিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য পরিষেবা কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। এখানে স্পিচ থেরাপি, ফিজিও থেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি, কাউন্সিলিং করান হবে এক ছাদের নিচে।

হাওড়া পৌরনিগমের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে এই পরিষেবা কেন্দ্র। স্বল্প মূল্যে এখানে দেওয়া হবে পরিষেবা। সব চিকিৎসা বাবদ সর্বাধিক খরচ সাড়ে ৩০০ টাকা। এই ধরনের শিশুদের বাবা মাকে বিভিন্ন জায়গায় ছুটতে হয় চিকিৎসার জন্য। অনেক ক্ষেত্রে বাইরে চিকিৎসা করাতে অনেক খরচ সাপেক্ষ হয়ে পড়ে। স্বাস্থ্য দপ্তর, পিজি হাসপাতালের সাহায্যে মানুষের কাছে উৎকৃষ্ট পরিষেবা খুব কম খরচে সাধারণ মানুষের কাছে পৌছে দেওয়া হবে। এখানে চিকিৎসক ছাড়াও সকল ক্ষেত্রের স্পেশালিস্টরা থাকবেন। প্রাথমিকভাবে বুধবার এবং রবিবার এই কেন্দ্র খোলা থাকবে। মঙ্গলবার বন্ধ থাকবে। আগামী দিন এটাকে নিয়মিত করা হবে। আগামী দিনে এখানে একই সঙ্গে স্কুল তৈরি করার পরিকল্পনাও আছে।