এই মুহূর্তে কলকাতা

বাণিজ্য সম্মেলন এবার নভেম্বরে প্রচারে সাড়া দেশ ঘুরবেন মুখ্যমন্ত্রী।

কলকাতা, ১৫ মার্চ:- রাজ্যে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানই তাঁর সরকারের পাখির চোখ বলে একাধিকবার জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই একাধিক নীতি নিয়েছে রাজ্য। আয়োজন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্মেলনের। রাজ্য সরকারের এই প্রচেষ্টার সুফল বুধবার শিল্পমহলের সামনে তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।বুধবার নবান্নে শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী সেখানে রাজ্যে বিপুল বিনিয়োগ ও কর্ম সংস্থানের কথা জানান এর মধ্যে রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নতির কথা পরিসংখ্যান দিয়ে তুলে ধরেন। ওই শিল্পে আগামীদিনে ৪১ লক্ষ মানুষের কর্ম সংস্থান হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। একইসঙ্গে চলতি বছরের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন এর দিনক্ষণ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যে বিনিয়োগ টানতে এবার বাণিজ্য সম্মেলনের প্রচারে দেশের সব প্রান্তে তিনি নিজেই যাবেন বলে জানিয়েছেন। বুধবার নবান্নের সভাঘরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রমোশন বোর্ডের বৈঠক ছিল। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ক্ষেত্রে ১ লক্ষ ১৪ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে।এরপরেই তিনি জানান, আগামীদিনে ওই ক্ষেত্রে ৪১ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে বলে কেন্দ্রীয় সরকার তথ্য দিয়েছে। তিনি জানান, আগামী ২১ নভেম্বর থেকে রাজ্যে শুরু হবে তিনদিনের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন।

নবান্নে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য সম্মেলন নিয়ে আমরা পাঁচটা বৈঠক করতে চাই। বাংলার কথা জানাতে চাই। কারণ বাংলার প্রচার খুব নেগেটিভ হয়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, বৈঠক হবে মুম্বই, চেন্নাই,বেঙ্গালুরু ও রাজস্থানে। এছাড়া দিল্লির বৈঠকটা অমিত মিত্রকে ভার্চুয়ালি করার দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি। বিভিন্ন বণিকসভা এবং শিল্পপতিরাও এতে অংশ নেবে শিল্পের জন্য জোর করে জমি অধিগ্রহণ নয়। রাজ্যে যে সমস্ত চাষের অযোগ্য জমি পড়ে রয়েছে শিল্পের জন্য সেগুলি অধিগ্রহণের চেষ্টা করতে হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। শিল্পের জন্য ৮ হাজার একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে বলেও এদিন বৈঠকে আলোচিত হয়। মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেনকলকাতায় তৈরি হতে চলেছে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার। আগামী ২১ মার্চ সংশ্লিষ্ট বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গে মৌ স্বাক্ষর করবে রাজ্য সরকার। ১৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারটি তৈরি করতে। ৩৫ হাজার বর্গ ফুটের ওই ট্রেড সেন্টারে আনুমানিক ৩৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। তিনি জানান, শিল্পে উঠে আসছে বাংলা। অ্যামাজন, ফ্লিপকার্ট এসেছে। প্রচুর কর্মসংস্থান হয়েছে। গঠন করা হয়েছে শতাধিক মৎস সমবায়।

স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে ১৩ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। তাতে বিপুল সংখ্যক কর্মসংস্থান হয়েছে। খিদিরপুর টিপার্ক তৈরির কথা জানান আজ। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পীকে বিপুল অঙ্কের ঋণ দেওয়ার কথা আজ বলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান তাতে বড় অংকের কর্মসংস্থান হবে। রাজ্যে মিষ্টি জলের মাছের উৎপাদন বাড়াতে নতুন নীতি নিয়ে আসা হচ্ছে। মুখ্য সচিব হরি কৃষ্ণ দ্বিবেদী জানিয়েছেন রাজ্য সরকারের হাতে থাকা ৭৫ হাজার একর জলাশয়আগ্রহী বেসরকারি সংস্থাকে মাছ চাষের জন্য লিজে দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে একই সঙ্গে আধুনিক মৎস্য চাষের প্রসার ঘটানো হবে। নয়াচরে মেগা ফিসারী হাব তৈরি করার কাজও দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। এখানে ৬০০০ একরের বেশি জমি সমীক্ষার কাজ শেষ। মধ্যেই ১০৫ টি মৎস্যজীবীদের সমবায় গঠন করে প্রশিক্ষণের কাজ চলছে। সরকারি বেসরকারি যৌথ অনুষ্ঠানে দায়িত্বে সেখানে একটি মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ ভাব তৈরি করা হবে। যেখানে ১২৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। ইথানল নীতিতৈরির পরে রাজ্যে নটি সংস্থা ইথানল উৎপাদনের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করেছে বলে মুখ্য সচিব জানিয়েছেন। এই ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত মোট বিনিয়োগ ১৮৬০ কোটি টাকা।