এই মুহূর্তে জেলা

মহারাষ্ট্র থেকে মার্কিন মুলুক, পুরস্কারের জয়যাত্রা অব্যাহত চুঁচুড়ার অভিজ্ঞানের।


হুগলি, ২৫ ফেব্রুয়ারি:- মহারাষ্ট্রের জলগাঁও শহর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়া। চুঁচুড়ার কিশোর অভিজ্ঞানের জয়যাত্রা অব্যাহত। আধুনিক ভারতের সুশ্রুত নামে পরিচিত পন্ডিত মধুসূদন গুপ্তর জীবনীর ওপরে তথ্যচিত্র বানিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়া শহরে আমন্ত্রণ পেল হুগলি কলিজিয়েট স্কুলের এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অভিজ্ঞান কিশোর দাস। আগামী ২৫শে ফেব্রুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ষষ্ঠ ফিলাডেলফিয়া যুব চলচ্চিত্র উৎসব দেখানো হবে এবং পুরস্কৃত করা হবে তাঁর এই তথ্যচিত্রটিকে। একই সঙ্গে তাকে আমন্ত্রণ জানান হয়েছে ফিল্ম মেকার্স প্যানেলে বক্তব্য রাখার জন্য। কিন্তু আসন্ন মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সশরীরে উপস্থিত থাকতে পারবেনা সে। ইতিমধ্যে চুঁচুড়ার এই কিশোর ছাত্রের তথ্যচিত্রটি ন’টিরও অধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত ও পুরস্কৃত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক আয়োজিত ৭ম আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান চলচ্চিত্র উৎসব, দ্বাদশ জাতীয় বিজ্ঞান চলচ্চিত্র উৎসব প্রভৃতি। সম্প্রতি গত সপ্তাহে,

ভারতীয় চিত্রসাধনা আয়োজিত মহারাষ্ট্রের ২য় দেবগিরি লঘু চলচ্চিত্র উৎসবে ডকুমেন্টারি বিভাগে ২য় পুরস্কার অর্জন করে চুঁচুড়ার কিশোরের এই তথ্যচিত্রটি। মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকার কারণে মহারাষ্ট্রে যেতে পারিনি অভিজ্ঞান। তাঁর হয়ে পুরস্কারটি গ্রহণ করেন সংস্থার যুগ্ম অধিকর্তা অনুপ দেশপান্ডে। পুরস্কার তুলে দেন উত্তর মহারাষ্ট্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শান্তনু রোদে। সংস্থার পক্ষ থেকে অভিজ্ঞানের এই তথ্যচিত্রটির ভূয়সী প্রশংসা করা হয়। আধুনিক ভারতের সুশ্রুত নামে পরিচিত এবং শল্যচিকিৎসার পথিকৃৎ পন্ডিত মধুসূদন গুপ্তর জীবনীর ওপর নির্মিত এই তথ্যচিত্রটি অভিজ্ঞান তৈরি করে ২০২১ সালে করোনা মহামারী পাদুর্ভাবের মধ্যেই। ১৮৩৬ সালে ১০ই জানুয়ারি কলকাতা মেডিকেল কলেজে প্রথম শব ব্যবচ্ছেদ করেন তৎকালীন হুগলির বৈদ্যবাটির বাসিন্দা ও আয়ুর্বেদ চিকিৎসক মধুসূদন গুপ্ত। সময়ের অন্তরালে ক্রমশ হারিয়ে যায় এই যুগান্তকারী ঐতিহাসিক ঘটনা।

চুঁচুড়ার নারকেল বাগানের দশম শ্রেণির অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র অভিজ্ঞান পন্ডিত গুপ্তর এই ঐতিহাসিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৈরি করে তথ্যচিত্রটি। সে জানায়, আধুনিক শল্যচিকিৎসা বিজ্ঞানে পন্ডিত গুপ্তর অসামান্য অবদান সাধারণ মানুষ প্রায় ভুলেই গেছেন। তাঁর এই যুগান্তকারী অবদানকে আমার ভাবনায় ফুটিয়ে তুলে যে পুরস্কৃত হচ্ছি, তার জন্য আমি গর্বিত। অভিজ্ঞান, রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের কাছে পন্ডিত গুপ্তর স্মৃতিতে এক বৃহৎ হাসপাতাল নির্মাণেরও আবেদন জানায়। তার এই স্বীকৃতিতে বেজায় খুশি তার পরিবারের সদস্যসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষককেরা। স্কুলের ভূগোলের শিক্ষক নিতাই ঘোষ জানান, অভিজ্ঞানের জন্য আমাদের স্কুলের সুনাম, দেশের গন্ডি ছেড়ে বিদেশেও সমাদৃত হচ্ছে।