কলকাতা, ১ নভেম্বর:- গুজরাটের মোরবিতে সেতু বিপর্যেয়র ঘটনার পর এরাজ্যে তাদের অধীনে থাকা সমস্ত সেতুর অবস্থা নতুন করে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিল পূর্ত দফতর।পাশাপাশি একডজন সেতু দ্রুত সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী পুলক রায় মঙ্গলবার নবান্নে দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে রাজ্যের সেতু গুলির অবস্থা পর্যালোচনা করতে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, পূর্ত দফতরের অধীনে থাকা প্রায় ২হাজার ১০৯টি সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। গোটা নভেম্বর মাস জুড়ে এই স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ চলবে। সেতুর কতটা ভার-বহন ক্ষমতা রয়েছে তাও খতিয়ে দেখা হবে। কোনোও সেতুর হাল খারাপ বলে মনে হলে সঙ্গে সঙ্গে সেইসেতু বন্ধ করে যানবাহন অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। শুধু তাই নয়, দ্রুত মেরামত করা হবে বাংলার প্রায় ১২টি সেতু। জানা গিয়েছে, সাধারণ মানুষের সুরক্ষার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ১৯৪১ সালে তৈরি হওয়া করোনেশন ব্রিজের টেন্ডার ইতিমধ্যে ডাকা হয়েছে।নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই এই করোনেশন ব্রিজের মেরামতির কাজ শুরু করতে চায় পূর্ত দফতর।
পশ্চিম মেদিনীপুরের কংসাবতী নদীর উপর বীরেন্দ্র শাসমল ব্রিজের মেরামতির কাজ শুরু করতে চলেছে পূর্ত দফতর। আপাতত ব্রিজগুলির বহন ক্ষমতার রিপোর্ট আসার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে পূর্ত দফতর। জেলাগুলির ডিস্ট্রিক্ট ইঞ্জিনিয়ার, চিফ ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে বৈঠক করে রাজ্যের পূর্ত দফতর, সেই বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে পূর্ত দফতর সূত্রের খবর। রবিবার গুজরাটের মোরবিতে ভেঙে পড়েছিল কেবল সেতু। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে প্রায় ১৩৬ জন। এখনও চলছে উদ্ধারকাজ। আর চূড়ান্ত এই বিপর্যয় ঘটেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি’র সফরের মাঝেই। গুজরাটের ঘটনা থেকেই সতর্ক হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। মাচ্ছু নদীর ওপরে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় উঠে এসেছে একাধিক অভিযোগ। ভোটের আগে নজর কাড়া, নববর্ষের আগে তড়িঘড়ি করা, ফিট সার্টিফিকেট না পাওয়া, ১২ মাসের কাজ ৭ মাসেই শেষ করা, ঠিকা পাওয়া কোম্পানি, ব্ল্যাকে টিকিট বিক্রি, মাত্রাতিরিক্ত জনকে একসঙ্গে ঝুলন্ত সেতুতে উঠতে দেওয়া- অভিযোগ একাধিক। বিরোধীদের দাবি, দুর্নীতি হয়েছে। আম আদমি পার্টি সরব হয়েছে সিবিআই তদন্তের দাবিতে। এই রাজ্যের বিজেপি বিরোধী সমস্ত রাজনৈতিক দল সরব হয়েছে ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকারের বিরুদ্ধে। তবে গুজরাটের দুর্ঘটনার পরে বিশেষ সতর্ক হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার।