এই মুহূর্তে কলকাতা

রাজ্যের গ্রিভান্স সেলের সঙ্গে কেন্দ্রের প্রকল্পের সংযুক্তিকরণ চাইল মোদি সরকার।

কলকাতা, ১৮ অক্টোবর:- রাজ্যের বাসিন্দাদের কাছ থেকে তাঁদের অভাব-অভিযোগ শুনে তা দ্রুত নিষ্পত্তি করার জন্য অনেক আগেই মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে গ্রিভান্স সেল চালু করা হয়েছে। এবার তার সঙ্গে কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সংযুক্তিকরণ চাইল মোদি সরকার।কেন্দ্রীয় সরকারের ‘সেন্ট্রালাইজড পাবলিক গ্রিভান্স রিড্রেস অ্যান্ড মনিটরিং সিস্টেম’ সংযুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সিএমও গ্রিভান্স সেলের সঙ্গে। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্র সরকার রাজ্যকে যে চিঠি পাঠিয়েছে তার কিছুটা অংশ নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, এই সংযুক্তিকরণের মাধ্যমে প্রশাসনকে মানুষের দুয়ারে নিয়ে যেতে উদ্যোগী হতে চাইছে কেন্দ্র। ‘এক দেশ এক পোর্টাল’ নীতিকে আরও সুদৃঢ় ভাবে তুলে ধরা যাবে এই নীতির জন্য। দেশের মানুষের সমস্যা, অভাব-অভিযোগগুলি জেনে সমাধান করা অনেক সহজ হবে। যদিও নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সংযুক্তিকরণের প্রস্তাবে সায় না দেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি রাজ্যের তরফে। তবে এই বিষয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই সংযুক্তিকরণ কী শুধুই পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে চেয়েছে মোদি সরকার নাকি এর পিছনে রাজনীতির অঙ্কও আছে? রাজনীতির বিশেষজ্ঞদের ধারনা, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।

দেশজুড়ে নানা কারণে মোদি সরকার ও বিজেপির জনপ্রিয়তা নীচের দিকে নেমে চলেছে। এমনকি বাংলার ১৮টি আসনও যে আর বিজেপি ধরে রাখতে পারবে না সেটাও ক্রমশ পরিষ্কার হচ্ছে। এই অবস্থায় মোদি সরকার চাইছে মমতার সরকারের সাফল্যে ভাগ বসিয়ে কিছুটা হলেও ভেসে থাকতে। আর সেটা বুঝেই মমতার সরকারও এখন কেন্দ্রের প্রস্তাব নিয়ে তড়িঘড়ি কোনও সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে না। মমতার চালু করা ‘দুয়ারে সরকার’ ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছে দেশের আমজনতার পাশাপাশি নানা বিশেষজ্ঞ মহলের। মমতার চালু করা এই কর্মসূচির কার্যত ভূয়সী প্রশংসা করেছেন সেই সব বিশেষজ্ঞরা। কর্মসূচির প্রশংসা এসেছে বিদেশের দরবার থেকেও। কিন্তু দুর্ভাগ্য গোটা দেশে এই ধরনের কোনও কর্মসূচি চালু করার পথে হাঁটা দেয়নি মোদি সরকার। ফলে আমজনতার সঙ্গে মোদি সরকারের সরাসরি সংযোগসাধনের কোনও রাস্তা নেই। এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতেই এবার বাংলার মানুষদের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের দ্বারস্থ হয়েছে মোদি সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চালু করা সিএমও গ্রিভান্স সেল মানুষের অভাব অভিযোগ জেনে তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই সুখ্যাতি ও প্রশংসা পেয়ে চলেছে। এখনও পর্যন্ত সেখানে জমা পড়া অভিযোগের সংখ্যা প্রায় ১১ লক্ষ ২৭ হাজার ৭৬৩টি। এর মধ্যে ১১ লক্ষ ২৫ হাজার ৯৯৯টি অভিযোগের নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। সমস্যার নিরিখে সমাধানের হার ৯৯.৮৪ শতাংশ। এই পরিসংখ্যানই নজর কেড়েছে মোদি সরকারের।