সুদীপ দাস, ২৯ জানুয়ারি:- গঙ্গা ভাঙন তো ছিল-ই। যার জেরে হুগলীর বলাগড় ব্লকের চর খয়রামারি, চর কৃষ্ণবাটির বহু এলাকা মানচিত্রে থাকলেও ইতিমধ্যেই বাস্তব থেকে উধাও হয়েছে। এবারে এই ব্লকের কুন্তি নদীর পারে ভয়াবহ ফাটল দেখা দেওয়ায় আতঙ্কে সাধারন মানুষ। বলাগড় বিধানসভার ডুমুরদহ-নিত্যানন্দপুর-২ এর শেরপুর, রামনগর এবং চন্দ্রহাটি-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কুন্তিঘাট নয়াসরাই বি.বি কলোনী এলাকায় কুন্তি নদীর পারে বিগত মাস দেড়েক ধরে ভয়াবহ ফাটল দেখা দিতে শুরু করেছে। বিশেষ করে বি.বি কলোনীর একতল, দ্বিতল বাড়িও ফাটলের কবলে পরেছে। ইতিমধ্যেই প্রান বাঁচাতে একাধিক পরিবার গৃহ ত্যাগ করেছেন। আর বাধ্য হয়ে এখনও যারা রয়েছেন তাঁরা রিতীমত আতঙ্কে দিন গুনছেন।
নদীর পার থেকে প্রায় ৩০ফুট দূরে থাকা ঢালাই রাস্তা এঁফোড়-ওফোঁড় হয়েছে। বেশ কয়েকটি বাড়ির কংক্রিটের পাকা দেওয়ালের মাঝে এক থেকে দুই ইঞ্চি ফাঁক হয়ে গেছে। অনেকেই নিজেদের পাকা বাড়ি বাঁচাতে কাঁচা বাশের ঠেকনায় ভরসা করছেন। ঘরের মেঝে দু’টুকরো হয়ে একপাশ বসতে শুরু করেছে। বিবি কলোনীর প্রায় ৩০টি বাড়ি ইতিমধ্যে ক্ষতির মুখে পরেছে। ৫ দশকের বেশী সময় ধরে এই এলাকায় বসবাস করছেন বহু মানুষ। ২০০০সালের বন্যায় একবার এই এলাকা জলমগ্ন হয়েছিল। কিন্তু তারপর আর সেভাবে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে পরেনি এই এলাকা। কিন্তু হঠাৎ করেই কুন্তি নদীর পারের এই ভয়াবহ ফাটল কি শীঘ্র ধসের ইঙ্গিত? সে প্রশ্নেই ঘুম ছুটেছে এলাকাবাসীর। কিন্তু হঠাৎ করেই কেন এধরনের ফাটল! এলাকাবাসীদের অনেকেই জানায় গঙ্গার ওপারে মাটি কাটা ও বালি তোলা চলে।
আর এই বি.বি কলোনী এলাকা থেকেই কিছুটা দূরে কুন্তির সাথে গঙ্গার সংযোগ। তাই এক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে গঙ্গায় মাটি কাটার ফলেও হয়তো এমনটা হতে পারে! তবে সেটা বিশেষজ্ঞরাই বলতে পারবেন বলে স্থানীয়দের দাবী। আপাতত আশু সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এলাকাবাসীরা সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে বিষয়টি জানিয়েছে এলাকাবাসীরা। কুন্তি নদীর পারে ফাটলের কথা স্বীকার করে নেন বলাগড় পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত্ত কর্মাধ্যক্ষ কাশীনাথ হালদার। তবে এজন্য তিনি গঙ্গা থেকে বালি তোলা কিংবা মাটি কাটার কথা উড়িয়ে দিয়ে বলেন বলাগড়ের বেহুলায় দেড় দশক আগে তৈরী হওয়া লক গেট থেকে বহুবার জল ছাড়া হয়েছে। যার জেরে কুন্তির দু’পারের মাটি সরে গেছে। আর এখন শুষ্ক সময়ে প্রাকৃতিক নিয়মে সরে যাওয়া মাটির ফাঁক পূরন করতেই অন্যত্র ফাঁটল দেখা দিচ্ছে। তবে আমরা বিষয়টি সর্বত্র জানিয়েছি। যথাসম্ভব ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।