এই মুহূর্তে জেলা

ধান কাটার মরশুমে ন্যাড়া পোড়া রুখতে চাষীদের নিয়ে সচেতনতা শিবির আরামবাগে।

মহেশ্বর চক্রবর্তী, ৫ নভেম্বর:- নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও হুগলি জেলার চাষের জমিতে অবাধে চলতে দেখা যায় ন্যাড়া পোড়ানো। স্বাভাবিক ভাবেই তাই উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে কৃষি ও পরিবেশবিদরা। এই ধান কাটার মরশুমে ন্যাড়া পোড়ানো বন্ধ করতে তৎপর হয়ে ওঠে প্রশাসনে। জেলার বিভিন্ন জায়গায় ব্লক প্রশাসনের কৃষি আধিকারিকরা চাষীদের নিয়ে ন্যাড়া পড়ানো বন্ধ করার জন্য সচেতনতা মুলক বৈঠক করছে। সেই মতো হুগলির আরামবাগের হাটবসন্তপুর সমবায়ে এলাকার চাষীদের নিয়ে আলোচনা সভা তথা বৈঠক হয়। এই বৈঠকে একদিকে যেমন চাষীরা উপস্থিত ছিলেন তেমনি ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে কৃষি আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আগের বছরে জেলার সর্বত্র অবাধে চলতে দেখা যায় চাষের জমিতে ন্যাড়া পোড়ানো। এর ফলে পরিবেশ দূষণ যেমন মাত্রা ছাড়ায় তেমনই নষ্ট হয়ে যায় জমিতে থাকা উদ্ভিদের খাদ্য উপাদান। এই ঘটনায় রীতিমত উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে কৃষি ও পরিবেশবিদরা। শীত পড়তে না পড়তেই দূষণের ধোঁয়াসায় ঢাকা পড়ে গিয়েছে দেশের রাজধানী শহর দিল্লী।

কলকাতাতেও বেড়ে চলেছে দূষণের মাত্রা। দূষণ জনিত এমন পরিস্থিতি থেকে নিস্কৃতি পাবার জন্য কৃষি দফতর ও পরিবেশবিদরা জমিতে ন্যাড়া পোড়ানো থেকে চাষীদের বিরত হবার কথা বারে বারে বলে চলেছেন। এদিন হাটবসন্তপুরে প্রায় ৫০ জন চাষীদের নিয়ে বৈঠকে জমি ন্যাড়া পোড়ানো বন্ধ করার জন্য বিশেষ বার্তা দেওয়া হয়। পাশাপাশি ন্যাড়া পোড়ানো যে বেআইনি তা নিয়ে জনগনকে সচেতন করা হয়। এই বিষয়ে আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির পুর্ত কর্মাধ্যক্ষ জগন্নাথ দাস বলেন, চাষীদের সচেতন করার জন্য ন্যাড়া পোড়ানো বন্ধ নিয়ে বৈঠক হয়। জমিতে ন্যাড়া পোড়ালে দুই ভাবে ক্ষতি হয়। প্রধানত জমির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যায় এবং দ্বিতীয়ত জমির মধ্যে চাষীদের বন্ধু পোকা মরে যায়। চাষীদের জমির ফসলের উৎপাদন কমে যায়। তাছাড়া পরিবেশ দুষিত হয়ে মানব সমাজের ক্ষতি করে। তাই ন্যাড়া পোড়ানো বন্ধ করা প্রয়োজন। অন্যদিকে আরামবাগ ব্লকের একজন কৃষি আধিকারিক জানান, ন্যাড়া পোড়ানো বন্ধের জন্য চাষীদের বার্তা দেওয়া হয়।

অন্যদিকে বলরামপুর এলাকার চাষী পবিত্র ঘোষ জানান, শীতের সময় ধান কাটা হয়। বর্তমানে মাঠে মেশিনে ধান কাটা হওয়ায় খড় মাঠেই পড়ে থাকে।তাই অনেক চাষী সেই খড়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। কিন্তু আদতে ক্ষতি হয় চাষীদেরই।কিন্তু ওই অবশিষ্ট খড় গুলি বাড়ি নিয়েও যাওয়া যাবে না। তাহলে খড়গুলো নিয়ে কি হবে। সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট গাইড লাইন যদি কৃষি দপ্তর দেয় তাহলে চাষীরা তা মেনে নেবে এবং চাষীরা উপকৃত হবে। সব মিলিয়ে আবহাওয়া ও পরিবেশ দফতরের কর্তারা মনে করছেন এমনটা যদি বাংলার বুকে চলতে থাকে তাহলে দিল্লির মত এই বাংলার গ্রামীন এলাকাতেও দূষণের ধোঁয়াসায় ঢাকা পড়াটা শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র।তাই চাষী এলাকার মানুষকে সচেতন হতে হবে এবং ন্যাড়া পোড়ানো বন্ধ করতে হবে।