কলকাতা, ৩০ অক্টোবর:- কোভিডের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকলে আগামী ডিসেম্বর মাসেই হতে চলেছে রাজ্যের শতাধিক পুরসভায় নির্বাচন। এবার স্পষ্ট ভাবে সেই ইঙ্গিত দিলেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। শুক্রবার কলকাতা পুরনিগমের বিজয়া সম্মিলনীতে যোগ দিয়ে ফিরহাদ বলেন, ‘গত বছর যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েও কোভিডের জন্যই পুরভোট করতে পারেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশন। পুজোর পর কোভিড সংক্রমণ সামান্য বেড়েছে, দৈনিক দুইশোর ওপরে যাচ্ছে। তবে অধিকাংশই উপসর্গহীন ও তীব্রতা প্রায় নেই। তাই যদি সবাই মাস্ক পরে, আরটিপিসিআর পরীক্ষা দিয়ে শনাক্ত করে তবে সংক্রমণ ফের একশোর নিচে চলে যাবে। আর সংক্রমণ কম থাকলে শিগগিরই আমাদের বকেয়া পুরভোটটা হয়ে যাবে।’ নবান্ন সূত্রেও জানা গিয়েছে রাজ্য সরকার ৩ দফায় পুরনির্বাচন করার কথা ভাবছে। নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্য সরকার ১৯ ডিসেম্বর, কলকাতা, হাওড়া ও বিধাননগরে পুরনিগমে ভোট করাতে চাইছে। তারপরের দুই দফায় রাজ্যের বাকি পুরসভাগুলিতে ভোট করানো হতে পারে। এর মধ্যে একটি দফায় ভোট করানো হতে পারে হুগলি ও উত্তর ২৪ পরগনা জেল; আর শিল্পাঞ্চল এলাকার সঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও দুই বর্ধমান জেলার মধ্যে থাকা পুরসভাগুলিতে। পরের দফায় বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও উত্তরবঙ্গের পুরসভাগুলিতে ভোট করানো হতে পারে।
গোটা প্রক্রিয়া ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই মিটিয়ে ফেলার তোড়জোড় চলছে। তবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩ দফায় ভোট গ্রহণ নিয়ে তাঁদের রাজ্যের প্রস্তাবে আপত্তি না থাকলেও তাঁরা চাইছেন আগামী বছরের শুরুতে জানুয়ারি মাসে ভোট করাতে। কেননা আগামী নভেম্বর মাস থেকে এক মাসব্যাপী ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ হবে দেশজুড়ে। সেই প্রক্রিয়া শেষ হতে হতে ডিসেম্বর মাস পড়ে যাবে। নতুন বছরের শুরুর দিকেই নতুন ভোটার তালিকা সামনে চলে আসবে। সেই তালিকা ধরেই পুরভোট করাতে চাইছে কমিশন। শুক্রবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর যে কোভিড পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় নতুন করে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭৩। রাজ্যের ক্ষেত্রে তা ৯৮২। গত কয়েকদিন ধরেই কলকাতার সংক্রমণ হার প্রায় একইরকম রয়েছে। রাজ্যের ক্ষেত্রেও তাই। তাই এই হারেই যদি সংক্রমণের হার কম থাকে ও ভ্যাক্সিন নেওয়ার প্রক্রিয়ায় যদি বাড়তি জোর দেওয়া হয় তাহলে ডিসেম্বর হোক কী জানুয়ারি পুরভোট করানো নিয়ে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে ফের যদি সংক্রমণ মাথাচাড়া দেয় সেক্ষেত্রে পুরনির্বাচন করানো নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠে যাবে।