এই মুহূর্তে জেলা

পুজোর মুখে বিনা নোটিশে তিন ব্যক্তিগত আপ্ত সহায়কে বরখাস্ত করলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়।

হুগলি, ৫ অক্টোবর:- পুজোর আগে বিনা নোটিশেই তিন তিনজন পার্সোনাল এসিস্টেন্ট কে বরখাস্ত করলেন হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চ্যাটার্জি। হটাৎ নেওয়া এই সিদ্ধান্ত জানাজানি হতেই রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলা বিজেপির অন্দরে। এটা দল ছাড়ার ইঙ্গিত, ধারণা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের। ঠিক কি কারণে এই অপসারণ জানেন না কেউই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই তিন জন হলেন এক মহিলা এবং দুই যুবক। যারা কিনা প্রার্থী হওয়ার অনেক আগে থেকেই লকেট চ্যাটার্জির ছায়াসঙ্গী ছিলেন। সাংসদের দিল্লির অধিকাংশ কাজ সামলাতেন এয়ারপোর্ট এলাকার বাসিন্দা এক যুবক। হুগলি সংসদীয় এলাকার যাবতীয় কাজের দায়িত্ত্ব ছিল নিউ ব্যারাকপুর এলাকার এক যুবকের উপর। আর ওই মহিলা পিএ মূলত সবসময় সাংসদের সঙ্গেই থাকতেন। সাংসদের হটাৎ এই সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে এক পিএ জানিয়েছেন, কি হয়েছে কিছুই জানিনা। কলেজ শেষ করেই রাজনীতিতে এসেছি। উনি যখন মহিলা মোর্চার নেত্রী ছিলেন তখন থেকেই সিঙ্গে ছিলাম। তার পর লোকসভা নির্বাচনে এক সঙ্গে কাজ করছি। খুব চাপ ছিল, বাড়ি যাওয়ার অবকাশ মিলত না।

সামান্য মাইনে পেতাম তবুও অফিসে থেকে রান্না করে খেয়েছি। দিন রাত পরিশ্রম করেছি। নিজের পয়সায় তেল ভোরে বাইক চালিয়ে কাজ করেছি। তার এই প্রতিদান পেলাম। তাঁর অভিযোগ, লকডাউনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক কাজ করেছি। তখন কেউ ছিলোনা, সবাই সংক্রমণের ভয়ে বাড়িতেই থাকতো। আমি একাধিকবার বাজার করা থেকে শুরু করে যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সাংসদের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছি। তখন তাঁর দাদা সুশান্ত চ্যাটার্জি কেও দেখা যায়নি। হটাৎ গত বিধানসভা নির্বাচনের আগেই সুশান্ত বাবু তৃণমূলে থেকে এসে সাংসদের নির্বাচনী এজেন্ট হয়ে যান। একই ঘটনা ঘটেছিল লোকসভা নির্বাচনের আগেও। তখনও তিনি হঠাতই এসে নির্বাচনী এজেন্ট হয়েছিলেন। এদিকে তিনি আবার দক্ষিণেশ্বর এলাকায় তৃণমূল নেতা মদন মিত্রের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত। তবে লোকসভা নির্বাচনের পর সুশান্ত বাবুকে আর দেখা যায়নি। তবে এবারই ব্যতিক্রম, বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকেই সুশান্ত বাবুর প্রভাব নজরে পড়তে থাকে।

দেখা যায় সাংসদের কাছে সুশান্ত বাবুর কথাই শেষ কথা হয়ে যেতে থাকে। সংসদের অবর্তমানে তিনিই যাবতীয় সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেন। এমনকি সুশান্ত বাবুর বিরুদ্ধে দলীয় নেতৃত্ত্ব কর্মী সমর্থক থেকে সরকারি কর্মী আমলা সকলের সঙ্গেই চরম দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠতে থাকে। তখন তাঁর এই ঔদ্ধত্য কে মেনে নেয় নি অনেকেই। সকলেরই অভিযোগ, অন্যান্য সময় নয়, শুধু মাত্র নির্বাচনের সময়ই কেনও আসেন সুশান্ত বাবু। আর এসেই উনি নির্বাচনী এজেন্টও হয়ে যান, আশ্চর্য্য। এই নিয়ে দুবার এই ঘটনা ঘটেছে। ফলে দলীয় কর্মী সমর্থকদের মধ্যে অনিশ্চয়তা আবহ সৃষ্টি হয়। তবে কি কারণে এই চরম সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, তা জানানো হোক দাবি তাঁদের। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা সাংসদ এবার হয়তো দল বদল করবেন। তাই প্রস্তুতি সেরে রাখছেন। কারণ বিধানসভা নির্বাচনে ধরাশায়ী হওয়ার পর হুগলি কেন্দ্রে বিজেপির জয় যে অসম্ভব তা বুঝেছেন সাংসদ। তাই তাঁর কাছে বিজেপি কর্মীদের কদর নেই, তুলনায় তৃণমূল থেকে আসা দাদা সুশান্তর কদর যথেষ্ঠই। যদিও এই প্রসঙ্গে সাংসদের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।