এই মুহূর্তে কলকাতা

পরিবহনে কর ছাড় বেড়ে আরও ছয় মাস , পাঁচ বছরে দেড় কোটি নতুন চাকরির আশ্বাস।

কলকাতা, ৭ জুলাই:- রাজ্য সরকার ২০২১-২২ অর্থ বছরের জন্য সাত কোটি টাকার ঘাটতি বাজেট পেশ করেছে। অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রর অনুপস্থিতির কারণে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় আজ রাজ্য বিধানসভায় তৃতীয় তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের এই প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করেন। বাজেটে নতুন কিছু প্রকল্প ঘোষণা করার পাশাপাশি পুরনো প্রকল্পে বরাদ্দ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে বর্তমান অতিমারী জনিত পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের অপর আর্থিক চাপ কমাতে রাজ্য বাজেটে বেশ কিছু কর এবং শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা রয়েছে। বাজেটে আগামী পাঁচ বছরে দেড় কোটি নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করার কথা বলা হয়েছে। দেশজুড়ে আর্থিক মন্দার প্রভাব সত্ত্বেও এরাজ্যে সাফল্যের সঙ্গে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে চলেছে বলে রাজ্য বাজেটে উল্লেখ করা হয়েছে। পরিষদীয় মন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় জ্বালানির দাম এবং কোভিড বিধিনিষেধের কারণে বিপর্যস্ত পরিবহন ক্ষেত্রকে চাঙ্গা করতে আগামী ৩১ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত পথকর এবং অতিরিক্ত কর মুকুব করার কথা ঘোষণা করেছেন।

তিনি জানান চলতি বছরের পয়লা জানুয়ারি থেকে ৩০ শে জুন পর্যন্ত ওই কর ছাড় চালু ছিল। পরিস্থিতির পরিবর্তন না হওয়ার কারণে পুনরায় আগামী ছয় মাসের জন্য তা বাড়ানো হলো। পরিষদীয় মন্ত্রী বলেন অতিমারীর কারণে গোটা দেশের পাশাপাশি এ রাজ্য অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা অনেক কমেছে। আবাসন নির্মাণ ক্ষেত্র বিশেষ ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জমি-বাড়ি ও ফ্ল্যাট কেনা বেচার ক্ষেত্রে দলিলের রেজিস্ট্রেশনের ওপর প্রদেয় স্ট্যাম্প ডিউটিতে ২ শতাংশ ছাড় মিলবে। এছাড়াও সব ধরণের দলিল রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে বাজারদরের তুলনায় ১০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে। ৩০ অক্টোবরের মধ্যে দলিল নথিভুক্তি সম্পূর্ণ করলে এই সুবিধা পাওয়া যাবে। পরিষদীয় মন্ত্রী বলেন, বিগত বিধানসভা নির্বাচনের আগে চলতি আর্থিক বছরের প্রথম চার মাসের জন্য পেশ করা অন্তর্বর্তী বাজেটে স্বাস্থ্য শিক্ষার সামাজিক সুরক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ২৬ টি নতুন প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছিল। বর্তমান বাজেটেও সামাজিক সুরক্ষা খাতে বাড়তি অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে।

রাজ্যের গৃহস্থ মহিলাদের আর্থিক ভাবে স্বল করে তুলতে পরিষদীয় মন্ত্রী তাঁর বাজেট বক্তৃতায় লক্ষীর ভাণ্ডার নামে একটি প্রকল্পের প্রস্তাব রেখেছেন। ওই প্রকল্পে তপশিলি জাতি ও উপজাতির ভুক্ত মহিলাদের মাসিক এক হাজার টাকা করে এবং সাধারণ শ্রেণীর মহিলাদের মাসে ৫০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তার কথা বলা হয়েছে। ওই প্রকল্পের টাকা সরাসরি উপভোক্তাদের ব্যাংক একাউন্টে পৌছে দেওয়া হবে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁর বাজেট ভাষণে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির তীব্র সমালোচনা করেন। পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন শুধুমাত্র কর ও শুল্ক আদায় বাড়াতে ভারত সরকারের গৃহীত পেট্রোলিয়াম নীতি সাধারণ মানুষকে চরম দুঃখ-দুর্দশায় ফেলছে। তবে অতি মারি পরিস্থিতি এবং আম্ফান এবং ইয়াস প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলা করে রাজ্য সরকার রাজকোষ ঘাটতি সহ বিভিন্ন আর্থিক সমস্যার দক্ষভাবে মোকাবিলা করেছে বলে বাজেটে দাবি করা হয়েছে। যেখানে ২০২০-২১ আর্থিক বছরে দেশের গড় অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ৭ দশমিক ৭শতাংশ কমেছে সেখানে এরাজ্যে তা ১ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।