এই মুহূর্তে কলকাতা

ইয়াস বিপর্যয় সাড়ে একুশ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতির হিসাব নিয়ে নবান্ন ছাড়ল কেন্দ্রীয় দল

কলকাতা, ৯ জুন:- ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শনে রাজ্যে আসা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার সম্পদহানির হিসাব তুলে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি দেখতে রাজ্য সফরে আসা কেন্দ্রের পাঠানো আন্তঃমন্ত্রক প্রতিনিধিদের হাতে একুশ হাজার পাঁচশ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির হিসাব কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দিল নবান্ন। গত তিন দিন ধরে ইয়াস বিধ্বস্থ বিভিন্ন জেসা সফরের পর দিল্লি ফেরার আগে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বুধবার নবান্নে প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কেন্দ্রীয় দলের সাত সদস্যের সঙ্গে ইয়াস জনিত পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন অর্থ সচিব মনোজ পন্থ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা সচিব দুষ্মন্ত নারিয়াল। ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি নিয়েও সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হয়। রাজ্যেপর বিভিন্ন দপ্তর আলাদা আলাদা করে সম্পদহানির রিপোর্ট প্রস্তুত করেছে। সেই সংক্রান্ত একটি হিসাবও তাদের কাছে পেশ করা হয়। নবান্ন সূত্রে খবর কেন্দ্রীবিপর্যয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা মেনে নিয়েছেন ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে রাজ্যের যথেষ্ট ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে।

নিজেরা বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা তা বুঝতে পেরেছেন। তবে ক্ষয়ক্ষতির ওই হিসাব বিস্তারিতভাবে লিখিত আকারে জমা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা রাজ্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন। তা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে রাজ্য প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় আন্ত মন্ত্রক দলের প্রধান এসকে শাহী জানিয়েছেন রাজ্য সরকারের ওই রিপোর্ট পাওয়ার পর তারা নিজেদের পর্যবেক্ষণসহ তা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এর কাছে জমা দেবেন। সেই রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই রাজ্যকে অর্থ সাহায্যের পরিমাণ স্থির করবে কেন্দ্রীয় সরকার। গত সোমবার থেকে তিনদিন লাগাতার ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে প্রভাবিত বিভিন্ন জেলা ঘুরে সাত সদস্যের ওই আন্তঃমন্ত্রক প্রতিনিধিদল এদিন দিল্লি ফিরে গেছে। সোম ও মঙ্গলবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরের ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত এলাকাগুলির অবস্থা সরেজমিনে খতিয়ে দেখার পর এদিনও সাত সদস্যের ওই দলের প্রতিনিধিরা কলকাতা সংলগ্ন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজ বজ ও পুজালি এলাকায় যান।

ঘূর্ণিঝড় এবং ভরা কোটাল এর প্রভাবে ওইসব এলাকাতেও যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরপরে বিকেলে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা নবান্নে রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। উল্লেখ্য, রবিবার রাতে কলকাতায় এসে পৌঁছান ৭ সদস্যের ওই কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। সোমবারও ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন তাঁরা। মূলত দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখে রিপোর্ট সংগ্রহ করেন তাঁরা। সোমবার থেকে তিন দিনের সফরে তাঁরা ঘুরে দেখছেন পাথরপ্রতিমা, গোসাবা সহ ইয়াস বিধ্বস্ত এলাকগুলি। সেখানে কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করবেন আধিকারিকরা। সেই রিপোর্ট তুলে দেওয়া হবে কেন্দ্রের হাতে। এই কেন্দ্রীয় দলের নেতৃত্বে রয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের যুগ্ম সচিব।এই দলে রয়েছেন কৃষি মন্ত্রক ও খাদ্য মন্ত্রকের প্রতিনিধিরাও। বুধবার তাঁরা দিল্লি ফিরে যাবেন। ইতিমধ্যে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। শেষমেশ কত টাকা পাওয়া যায় সেদিকেই নজর।