এই মুহূর্তে কলকাতা

বীরভূমে ভোটের আগে ফের কমিশনের নজরবন্দি অনুব্রত।

কলকাতা , ২৭ এপ্রিল:- ভোটের আগে ফের নিজের জেলায় নজরবন্দি অনুব্রত মণ্ডল।বৃহস্পতিবার অষ্টম তথা শেষ দফায় বীরভূমে ভোট। তার আগে মঙ্গলবার এক নির্দেশিকা জারি করে সেদিন বিকাল ৫টা থেকে শুরু করে ভোট শেষ হওয়ার প্রায় ১২ ঘণ্টা পর অর্থাত্ ৩০ তারিখ সকাল ৭টা পর্যন্ত তঋণূল কংগ্রেসের বিতর্কিত বীরভূম জেলা সভাপতিকে নজরবন্দি করে রাখার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কিছুদিন আগেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যেই জানিয়েছিলেন প্রতিটি নির্বাচনের সময় অনুব্রত মণ্ডলকে নজরবন্দি করা কার্যত বেআইনি। এবারইও যদি কমিশন সেই পথে হাঁটে তাহলে অনুব্রত মণ্ডলও যেন আদালতের দ্বারস্থ হন। এখন তাই প্রশ্ন উঠছে এদিন কমিশন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার বিরুদ্ধে অনুব্রতবাবু আদালতমুখী হবেন কী না। তবে তাঁর বা দলের তরফে এব্যপারে স্পষ্ট কোন ইঙ্গিত মেলেনি।

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগেও অনুব্রতকে নজরবন্দি করেছিল কমিশন। কমিশন সূত্রের দাবি, ভোটের আগে লাগাতার উস্কানি মূলক মন্তব্যের জন্য কুখ্য়াত অনুব্রতকে নজরে রাখার পিছনে কমিশনের একমাত্র উদ্দেশ্য বীরভূমের ভোটকে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ রাখা। তবে তাতে সঙ্গত কারণেই খুশি নয় তৃণমূল শিবির।কিছুদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বোলপুরে দলের কর্মিসভা করতে গিয়ে এই ঘটনা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করেছিলেন। সেদিন তিনি সাফ জানিয়েছিলেন, এভাবে কাউকে নজরবন্দি করা যায় না। এখন ভোট এলেই কমিশন অনুব্রত মণ্ডলকে নজরবন্দি করে রাখছে। এটা সম্পূর্ণ ভাবে বেআইনি। রাজ্যের আর কোনও নেতাকে বা বিরোধী দলেরও কোনও নেতাকে এভাবে নজরবন্দি করা হয় না। তাই এবারেও যদি কমিশন সেই পথে হাঁটে তাহলে অনুব্রত যেন আদালতের দ্বারস্থ হন সেই বার্তাই সেদিন প্রকাশ্যে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কার্যত মুখ্যমন্ত্রীর সেই দাবিকে অনেক আইনজীবিও সমর্থন করেন। এভাবে নির্দিষ্ট একজন নেতাকে বার বার ভোটের সময় নজরবন্দি করাটা কতখানি সংবিধানসম্মত তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এখন দেখার বিষয় মুখ্যমন্ত্রীর সেই পরামর্শ মেনে অন্যব্রতবাবু কমিশনের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন কী হন না।

ঘটনাচক্রে এদিনই কলকাতার নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের কার্যালয়ে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল অনুব্রতবাবু। কেননা সিবিআই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছিল। তাঁদের কাছে তথ্য এসেছিল যে গরু পাচারকাণ্ডে অনুব্রত মণ্ডল জড়িত। সেই সুবাদেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছিল সিবিআই। কিন্তু এদিন অনুব্রতবাবু সিবিআইকে জানিয়ে দেন, তাঁর শরীর ভাল নেই। রয়েছে কিডনির সমস্যাও। তার মধ্যে করোনার বাড়বাড়ন্ত। তাই বাড়ির বাইরে বের হতে ভয় পাচ্ছেন তিনি। তাই এখনই সিবিআই দফতরে হাজির দেওয়া সম্ভব নয় তাঁর পক্ষে। তবে তিনি আইন মেনে চলেন। তাই হাজিরা তিনি দেবেনই। অসুস্থতার কারণে ২ সপ্তাহ তাঁকে সময় দেওয়া হোক। যদিও বোলপুরে কর্মীসভা করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতিকে প্রকাশ্যে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘নির্বাচনের আগে সিবিআইয়ের দুটো লোক গিয়ে কেষ্টকে বলছে দেখা করতে। কেন যাবে? ২৯-এ ওদের ওখানে ভোট। আমি বলে দিয়েছি একদম যাবি না। স্ট্রেট বলবি, ইলেকশন প্রসিডিউর ওভার হবে। তার পর যাব।’ তাই অনুব্রতবাবুর এদিন পদক্ষেপ নেত্রীর নির্দেশের জেরেই কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।