এই মুহূর্তে কলকাতা

কমিশনের কড়া নজরদারিতে প্রায় ঘটনাবিহীন তৃতীয় দফা,আশাতিত সাফল্যের আশা বিজেপির

কলকাতা , ৬ এপ্রিল:-নির্বাচন কমিশনের কড়া নজরদারিতে বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া তৃতীয় দফার ভোটও শান্তিপূর্ণ ভাবেই শেষ হল।ভোট গ্রহণ শেষে সন্ধ্যায় মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান ভোট ঘিরে বড় কোন অশান্তির খবর মেলেনি। সামান্য যে দুএকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা যেখানে ঘটেছে নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।তৃতীয় দফার নির্বাচনে সকাল ৭ টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে গড়ে ৭৭.৬৮%।এর মধ্যে সবথেকে বেশি ভোট পড়েছে হুগলিতে। সেখানে ভোটের হার ৭৯.৩৬%। হাওড়ায় ভোট পড়েছে ৭৭.৯৩%।দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভোট পড়েছে ৭৬.৬৮%।ভোট গ্রহণ চলেছে সন্ধ্যা সাড়ে ছটা পর্যন্ত কাজেই দিনের শেষে ভোটের হার আরও কিছুটা বাড়বে তা নিশ্চিত।দিনের শুরুতে অবশ্য বিভিন্ন জেলা থেকে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর আসতে শুরু করে নির্বাচন কমিশনের কাছে। এদিন আরামবাগ খানাকুল গোঘাট উলুবেড়িয়া উত্তর বিষ্ণুপুর সহ বহু এলাকায় বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটে। এই সব ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মোট ১১ জন কে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এছাড়াও উলুবেড়িয়া উত্তরে তিনটি ইভিএম ও চারটি ভি ভি প্যাট বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় একজন সেক্টর অফিসার ও একজন এস আই ও তিন হোম গার্ড কে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ওই ঘটনায় আরো দুই সেক্টর অফিসার কে ভোটের কাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন। একইসঙ্গে ভিডিও করে ওই ইভিএম ও ভি ভি প্যাট গুলিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেগুলি পুনরায় নির্বাচনে ব্যাবহার করা হবে না বলেও জানায় কমিশন। গোঘাটে তৃণমূল সভাপতির মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত চলছে বলেও জানায় কমিশন। এছাড়াও এদিন কমিশনের পক্ষ থেকে আরিচা প্তক জানান দীর্ঘদিন ধরে একই বিধানসভা কেন্দ্রে 8 রিটার্নিং অফিসার থাকার ফলে তাদেরকেও সরানো হয়েছে। এতদিন এই নিয়ম কলকাতায় লাগু ছিলনা। এ বার ই প্রথম এই নিয়ম চালু হলো কলকাতায়।রাজ্যে তৃতীয় দফার নির্বাচনে আশাতীত সাফল্য আসবে বলে বিজেপি দাবি করেছে। কলকাতায় এদিন এক সাংবাদিক বৈঠকে দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, গত দু’দফার মত আজকের তৃতীয় দফার ভোটেও বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে।

তবে মানুষের মধ্যে যে উৎসাহ ও ভোট দেওয়ার আগ্রহ দেখা গেছে, তা শাসকদলের সব সন্ত্রাসকে ব্যর্থ করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্যে এতদিন ভোটে হিংসা এবং জোর করে ভোট করানোর পদ্ধতি ছিল। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসও সেই পদ্ধতিতেই ভোট করেছে। তবে মানুষ আজ ভয় ও সন্ত্রাসকে উপেক্ষা করে যেভাবে ভোট দিয়েছেন, তাতে গণতন্ত্রের জয় হয়েছে। জয়প্রকাশ বাবু এজন্য সাধারণ মানুষকে অভিনন্দন জানিয়েছে। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুজাতা মন্ডলের উপর আক্রমণের জন্য জয়প্রকাশ বাবু তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকেই দায়ী করেন। তিনি বলেন গত কয়েক দিন ধরে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী দলীয় কর্মীদের নির্বাচনে অশান্তি করার প্ররোচনা দিয়েছেন। আজকের ঘটনা তারই বহিঃপ্রকাশ। এরজন্য বিজেপিকে দায়ী করে কোন লাভ হবেনা।তৃতীয় দফা নির্বাচনে সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করাতে কমিশন ব্যর্থ বলে অভিযোগ করেছেন সংযুক্ত মোর্চার পক্ষ থেকে রবিন দেব। কলকাতায় মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক এর দপ্তরে আরিজ আফতাবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সংযুক্ত মোর্চার এক প্রতিনিধিদল। সাক্ষাতের পর সিপিআইএম নেতা রবিন দেব দাবি জানান যারা কমিশনে হয়ে কাজ করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন, অর্থাৎ যে সকল অফিসার বা কেন্দ্রীয় বাহিনী আজকের নির্বাচনের জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল যাদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ আনা হয় সংযুক্ত মোর্চার পক্ষ থেকে।