এই মুহূর্তে জেলা

যাদের বাঘ ভেবেছ তারা কিন্তু বেড়াল ,২০২১ এ রেজাল্টের পর তারা ইঁদুর হয়ে যাবে – কল্যাণ বন্দোপাধ্যায়।

হাওড়া , ৭ ফেব্রুয়ারি:- হাওড়ার ডুমুরজলায় বিজেপির পাল্টা সভা করল তৃণমূল। রবিবার দুপুরে তৃণমূলের সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন অরূপ রায়, ভাস্কর ভট্টাচার্য, কল্যাণ বন্দোপাধ্যায়, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় সহ দলের বিধায়করা। এদিন সভার প্রধান বক্তা অরূপ রায় বলেন, “নেতারা পাল্টি খায়। কর্মীরা পাল্টায় না। ওইজন্য নিজেকে দলের একজন কর্মী মনে করি। তাই পাল্টি খাওয়ার সম্ভাবনা নেই।” রবিবার দুপুরে হাওড়ার ডুমুরজলায় এক বিশাল জনসভায় বক্তব্য রাখেন হাওড়া সদরের তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী অরূপ রায়। তিনি বলেন, “আমাদের সিবিআই, ইডির ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, মমতার সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং শেষদিন পর্যন্ত থাকব।” এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে অরূপ রায় আরও বলেন, “আজকের জনসভায় এই ভিড়টা শোকেস। গোডাউনটা এখনও দেখাইনি। যেদিন মমতা আসবেন সেদিন হাওড়ায় আর হাঁটাচলার জায়গা থাকবে না। যারা বাংলার সংস্কৃতি কিছুই জানে না, যারা কবিগুরু, নজরুল, বিদ্যাসাগরকে চেনে না, তারা বাংলা দখলের স্বপ্ন দেখছে। প্রলোভন দেখিয়ে কিছু লোককে নিয়ে গেছে। আমি বলি, রাবণ খলনায়ক হলেও তাকে মানুষ পুজো করে। কিন্তু ঘরশত্রু বিভীষণকে কেউ পুজো করেনা। সুতরাং যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে নেত্রীর সঙ্গে, দলের সঙ্গে তারা শিক্ষা পাবে আগামী নির্বাচনে। জন্ম থেকে মৃত্যু নানা প্রকল্প। স্বাস্থ্যসাথী ঐতিহাসিক প্রকল্প। তাই মানুষ যেভাবে আমাদের সমর্থন করেছেন, একইভাবে করবেন। ২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় এসে দেশের জন্য কিছুই করেনি।

রান্নার গ্যাস, পেট্রল, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। আজ প্রায় ৭০ হাজার মানুষের ভীড় হয়েছে। আগামী দিনে এখানে মমতার সভা হবে বিশাল করে। গোটা ডুমুরজলা সেদিন কোলাপ্স হয়ে যাবে।” এদিন বিধায়ক গুলশন মল্লিক বক্তব্য পেশের আগে গঙ্গাজল ছড়িয়ে মঞ্চ শুদ্ধ করে নেন। তিনি বলেন, দল ছেড়ে গেছে যে মীরজাফররা গামছা পরিয়ে তাদের বিদায় দিন। বিধায়ক জটু লাহিড়ী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেইমান ও মীরজাফর বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, আজকে ককন্ট্রাক্টরদের বিক্ষোভের জন্য দায়ী রথীন চক্রবর্তী। হাওড়া পুরসভাকে সমস্যায় ফেলে চলে গিয়েছে। এদিন সাংসদ কল্যাণ বন্দোপাধ্যায় বলেন, খেলা হবে। লড়াইয়ের মাঠে খেলা হবে। যাদের তুমি বাঘ ভেবেছ তারা কিন্তু বেড়াল। আর যখন ২০২১এ রেজাল্ট বেরবে তারা ইঁদুর হয়ে যাবে। বিজেপিকে বলুন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দিদি দিচ্ছে, নিয়ে নে৷ স্বাস্থ্যটা আগে ঠিক কর। নাহলে খেলব কার সঙ্গে। আমি কথা দিয়ে যাচ্ছি, চ্যালেঞ্জ, রাজীব তুমি ডোমজুড়ে প্রার্থী হও। পালিয়ে যেও না। ও বিজেপির প্রার্থী হলে এমন হারান হারাব, ২০০২১ এর পর থেকে যেন দু’বছর ধরে যেন ঘুমোতে না পারে। কাঁথির মেজোবাবু, হাইব্রিড বিজেপি সারদার ছ’কোটি টাকা নিলে সেটা কোথায় ? হলদিয়া ডক লুটে নিলে। দল এককাট্টা হয়ে গেছে শুভেন্দু, রাজীব দল ছেড়ে যাওয়ার জন্য। দলের ছেলেরা দেখতে চাইছিল, আর ক’টা মীরজাফর আছে। এখন একেবারে পরিষ্কার।

২০২১ এ যদি সম্ভব হয়, কাউন্টিংয়ের দিন মোদীজী, অমিতজিরা বাংলায় থাকুন। এদিন সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, হাওড়ায় ১৬টি আসনেই জিতব। খেলা হবে। একশ গোলে জিতব। এদিনের জনসভায় শেষ বক্তা ছিলেন দেবাংশু ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, গদ্দার বেইমানদের পায়ে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছে আপনাদের আজকের ভীড়। ওরা সবাই জোট বেঁধেছে এক মহিলাকে সরাতে হবে। কিন্তু একটা কথা জানি, সবাইকে দাঁড়িপাল্লার একদিকে রেখে ওই হাওয়াই চটি রাখলে সেটার ওজন বেশি হবে। আর কিছু লাগবে না। এটা বিধির বিধান, নবান্নের ১৪ তলায় দিদিই আবার আসবে। এতদিন ধরে সব ভোগ করে ভোটের সময় এসে মনে হল, আমি তো কিছু পাইনি৷ এই মুহূর্তে ভোট হলে ২২২টা সিটে জিতব। ফ্লোটিং ভোটারদের নিজেদের দিকে টানতে ওরাও ২০০ পাবে বলে রটাচ্ছে। উন্নয়ন নিয়ে কোনও বক্তব্য নেই, তাই ধর্ম ঢোকাও। ওরা আসলে আমাদের দিদির মধ্যে শ্রীরামকে দেখতে পায় মনে হয়, তাই বলে মনে হয়। ডোমজুড়ের যিনি গেছেন তিনি তো বিজেপির ৫৯ নম্বর মুখ্যমন্ত্রী। এই মঞ্চে যারা আছে, সবাই রাজধানীর একটা করে বগি। ইঞ্জিন একটাই মমতা। ইঞ্জিন যেখানে যাবে, বগি সব সেখানেই যাবে। আর বিজেপির সবাই ইঞ্জিন। এটা একটা ধর্মযুদ্ধে নেমেছি আমরা।