এই মুহূর্তে কলকাতা

আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে একাধিক কর্মসূচি নিয়ে রাজ্যে পা রাখতে পারেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

কলকাতা , ৩০ জানুয়ারি:- দিল্লি বিস্ফোরণের জেরে বাতিল হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রাজ্য সফর। যার ফলে খানিকটা মুষড়ে পরেছেন রাজ্যের বিজেপি নেতা কর্মীরা। কিন্তু খবর আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে একাধিক কর্মসূচি নিয়ে রাজ্যে পা রাখতে পারেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর মূলত সরকারি হলেও দু-একটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও তাঁকে দেখা যেতে পারে বলে দাবি বিজেপি সূত্রের। কয়েক সপ্তাহ আগেই কলকাতায় ঘুরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সপ্তাহ দুয়েকের ব্যবধানে ফের ভোটমূখী বাংলায় প্রধানমন্ত্রীর ফের আগমন সম্ভাবনা রাজ্য বিজেপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে নতুন উত্সাহের সঞ্চার করেছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়ায় এক সরকারি কর্মসূচিতে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। ওই দিন টাউনশিপ বন্দরের হেলিপ্যাড ময়দানে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হচ্ছে। মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার পর ওই দিনের কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়। জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী হলদিয়ায় যে সমস্ত প্রকল্পগুলির উদ্বোধন করবেন তার মধ্যে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের পরিবেশবান্ধব জ্বালানি পেট্রোল তৈরির প্রকল্প বিএস-৬, ভারত পেট্রোলিয়ামের ইমপোর্ট এলপিজি টার্মিনাল সহ আরও একগুচ্ছ প্রকল্প রয়েছে। আপাতত নতুন কোন অনুষ্ঠান এই সূচিতে যুক্ত নাহলেও সেদিন কলকাতায় মেট্রোরেলের একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব চাইছে ভোটমূখী বঙ্গে বাংলায় প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে দলের কোনও কর্মসূচি করিয়ে নিতে চাইছেন।

নোয়াপাড়া-দক্ষিন্বেশ্বর মেট্রো প্রকল্ল্পের কাজ শেষের পথে। এদিকে আগামী মাসের প্রথমেই রাজ্যে বিধানসভার ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ওই প্রকল্পের উদ্বোধনে সমস্যা হতে পারে বলে রেল কর্তারা মনে করছেন। তাই প্রধানমন্ত্রী মোদীর আসন্ন সফরের সময়ই তাঁর হাতে দক্ষিণেশ্বর মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধন করে ফেলতে চায় কর্তৃপক্ষ ।যদিও শনিবার রাত পর্যন্ত যদিও এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।প্রধানমন্ত্রী আদৌ সময় দিতে পারবেন কিনা তার এপরেই গোটা বিষয়টা নির্ভর করছে বলে অভিমত প্রশাসনিক মহলের। গত ২৩ জানুয়ারি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে কলকাতায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যোগ দিয়েছিলেন একাধিক কর্মসূচিতে। তার মধ্যে অন্যতম ছিল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অনুষ্ঠানে যোগদান। সেই অনুষ্ঠানেই সেদিন একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। একই সঙ্গে সেদিনের ওই অনুষ্ঠানেই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে’জয় শ্রীরাম’ শ্লোগান দিয়ে অপমান করা হয় বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে। বঙ্গ বিজেপির পরিকল্পনা ছিল প্রধানমন্ত্রীর সেদিনের সেই অনুষ্ঠান ও তাঁর বক্তব্যকে তুলে ধরে বাংলায় প্রচারে নামবেন তাঁরা।

কিন্তু মমতাকে অপমান করার ঘটনায় কার্যত দলের মুখ পোড়ায় বিজেপি বাধ্য হয় অনুষ্ঠানটিকে ধামাচাপা দিয়ে দিতে। এই শূন্যস্থান পূরণ করতে বিজেপি চাইছিল এমন কোনও অনুষ্ঠান যেখানে ফের আসবেন প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর বক্তব্য যা নিয়ে ভোট বাংলায় প্রচারে নামতে পারবে বিজেপি। সেই সুযোগই কার্যত হাজির করে দিল হলদিয়ার ভারত পেট্রোলিয়ামের এক অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানেই যোগ দিতে ৭ তারিখ বাংলায় আসছেন মোদি। সেই হিসাবে ১৫ দিনের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বাংলায় আসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে যে নোয়াপাড়া-দক্ষিণেশ্বর মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধন করা হবে তা গতসপ্তাহেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল, যা সামনে এসেছে গতকালই। ঠিক হয়েছিল দিল্লি থেকেই এই মেট্রো প্রকল্পের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু যখন জানা গিয়েছে যে প্রধানমন্ত্রী ৭ তারিখ রাজ্যে আসছেন তখনই তাঁকে দক্ষিণেশ্বরে নিয়ে এসে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করতে চাইছে বিজেপি। এখনও পর্যন্ত যেটুকু জানা গিয়েছে যে, দিল্লি থেকে কলকাতায় এসে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে হলদিয়ায় যাবেন প্রধানমন্ত্রী। ফিরবেনও একই পথে।

বিজেপি চাইছে ফেরার পথেই প্রধানমন্ত্রী আসুন দক্ষিণেশ্বরে। করুন মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধন। সেই সঙ্গে পুজো দিন মন্দিরে। এর পাশাপাশি বঙ্গ বিজেপি চাইছে সেইদিন কলকাতায় থেকে পরের দিন দলের কোনও কর্মসূচিতে যোগ দিন প্রধানমন্ত্রী। যদিও বঙ্গ বিজেপির সেই ইচ্ছা পূরণ হবে কিনা তা এখনই বলা শক্ত। তবে মোদিকে দক্ষিণেশ্বরে নিয়ে এসে মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধন করানোর বিষয়টি রেলমন্ত্রক দেখছে বলেই জানা গিয়েছে। রাজ্য বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, যেহেতু ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্যে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার কর্মসূচি থাকছে তাই প্রধানমন্ত্রী দলের কোনও কর্মসূচিতে যোগ দিতে রাজী হলে নাড্ডা আরও ২-১দিন বাড়তি এই রাজ্যে থেকে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে ৩-৪ দিনের সফরে বাংলায় এসে নাড্ডা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেই হয়তো দিল্লি ফিরে যাবেন।