এই মুহূর্তে কলকাতা

নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণেশ্বর মেট্রো প্রকল্প চালু হতে পারে আগামী মাসেই।

কলকাতা, ২৯ জানুয়ারি:- নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণেশ্বর মেট্রো প্রকল্প আগামী মাসেই চালু হতে পারে। রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ার আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ওই প্রকল্পের উদ্বোধন করতে পারেন বলে রেল সূত্রে জানা গেছে।ওই মেট্রো প্রকল্প চালু হলে উত্তর ও দক্ষিণ শহরতলির মধ্যে যোগাযোগ আরও মসৃণ হবে। ইতিমধ্যেই আরভিএনএল ও কলকাতা মেট্রো রেলের আধিকারিকরা দু’দফায় ওি রুটের বিভিন্ন স্টেশন পরিদর্শন সেরে ফেলেছেন। মেট্রোর ট্রায়াল রান চলছে জোরকদমে। জেনারেল ম্যানেজার মনোজ যোশী সহ সমস্ত বিভাগের আধিকারিকদের নিয়ে সম্প্রতি দক্ষিণেশ্বর ও বরানগর মেট্রো স্টেশন পরিদর্শন করেন ।তার পরেই এই রুটে দ্রুত মেট্রো চলাচলের ব্যপারে ততপরতা শুরু হয়েছে বলে রেল সূত্রে খবর। একাধিকবার আরভিএনএল প্রতিনিধিরা পরীক্ষা করেছেন স্টেশন, ট্র‍্যাক। নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণেশ্বর অবধি ট্রলিতে পরিদর্শন সেরেছেন মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার সহ আধিকারিকরা। সব ঠিকঠাক থাকলে, ১০ ফ্রেব্রুয়ারি যাত্রী পরিষেবা চালু হয়ে যেতে পারে দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশন।

নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণেশ্বরের মধ্যে চলছে জোর কদমে কাজ। দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশন নির্মাণের সব কাজ শেষ। বরানগর মেট্রো স্টেশন সাজানোর কাজ শেষ। জোরকদমে চলছে বরানগর মেট্রো স্টেশন এলাকায় বাকি সাজানোর কাজ। প্রতিদিন কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখছেন, আর ভি এন এল ও মেট্রো রেলের আধিকারিকরা। দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশন দেখতে হয়েছে অনেকটা মন্দিরের আদলেই। দূর থেকে দেখলে মনে হবে আপনি দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে প্রবেশ করছেন। এই মেট্রো স্টেশনে পৌছনোর জন্যে যেমন আলাদা রাস্তা আছে। তেমনি ডানকুনি-শিয়ালদহ শাখায় দক্ষিণেশ্বর স্টেশন থেকেও মেট্রো চড়ার জন্য রাস্তা থাকছে। বরানগর স্টেশন অবশ্য হচ্ছে বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ের ওপরে। ডানলপ থেকে সহজেই এখানে পৌছে যাওয়া যাবে। নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণেশ্বরের মধ্যে থাকছে মাত্র একটি স্টেশন। নোয়াপাড়া ও দক্ষিণেশ্বরের মধ্যে দুরত্ব হচ্ছে মাত্র ৪.১ কিলোমিটার। নির্মাণের কাজ শেষ হয়ে গেছে।

এখন জোর কদমে চলেছে সিগন্যাল-টেলিকমিউনিকেনর কাজ। এই কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় সি আর এসের কাছে আবেদন জানানো হতে চলেছে। স্টেশন ভবন নির্মাণ কাজ শেষ। এসক্যালেটর বসানো হয়ে গেছে৷ প্ল্যাটফর্ম বোর্ড বসে গিয়েছে। চলছে এটিভিএম পরীক্ষার কাজ। টিকিট কাউন্টার মেশিন বসানোর কাজ চলছে জোর কদমে। স্টেশনে বিভিন্ন আত্মিক ম্যুরাল বসানো হয়েছে। বিশেষ বিশেষ দিনে ভীড়ের কথা মাথায় রেখেই, স্টেশন প্রশস্ত করা হয়েছে। তবে বরানগর অংশে কাজ কিছু বাকি আছে এখনও। বিশেষ করে ট্র‍্যাক বসানোর কাজ শেষ হলেও, তা চার্জ করে বারবার পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে এই নতুন পথে মেট্রো চলাচলের সময় কিছু সমস্যাও আছে৷ যেহেতু দক্ষিণেশ্বরে কারশেড করার জন্যে কোনও জায়গা পাওয়া যায়নি, তাই নোয়াপাড়া কারশেড থেকে ট্রেন এলেই তবেই মিলবে মেট্রো৷ নোয়াপাড়া থেকে যাত্রী ভর্তি মেট্রো এসে দাঁড়াবে প্ল্যাটফর্মে। সেখানে যাত্রী নামানোর পরে আবার সেটি যাবে বরানগরের দিকে। সেখান থেকে আবার ক্রসওভার থেকে লাইন বদল করে আসবে দক্ষিণেশ্বরের অন্য প্ল্যাটফর্মে। ফলে ট্রেন ঢোকা ও বেরনো এখানে বেশ সময় সাপেক্ষ।

বিশেষ বিশেষ দিনে প্রচন্ড ভীড় হলে পরিস্থিতি সামলানো আরও কঠিন হয়ে পড়বে। তবে মেট্রোর দাবি, নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্ত ব্যবস্থা থাকবে। প্রথমে লক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল কালী পুজোয় চালু করে দেওয়া হবে এই মেট্রো স্টেশন। কিন্তু ইউরোপ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ টিপিডাব্লুএস মেশিন, ফ্ল্যাপ গেট না এসে পৌছনোর কারণে সমস্যা তৈরি হয়। মেট্রো আশাবাদী এগুলি এসে গেলে শীঘ্রই কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটিকে দিয়ে পরীক্ষা করানো হবে। মেট্রো রেল সূত্রে খবর আগামী ১ তারিখ ফের স্টেশন পরিদর্শন করবেন জেনারেল ম্যানেজার মনোজ যোশী। আগামী ৩ তারিখ সি আর এস পরিদর্শন করতে চলেছেন। সব ঠিক থাকলে তার এক সপ্তাহ পরে প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্প উদ্বোধন করতে পারেন। আপাতত শীঘ্রই যাত্রা শুরুর জন্যে অপেক্ষা করছে কলকাতার নয়া মেট্রো স্টেশন।