এই মুহূর্তে জেলা

দুয়ারে সরকারের জমানাতেই , ১০ বছর ধরে বহু শুকতলা ক্ষয়েও কর্তব্যরত স্বামীর মৃত্যুর পর নায্য চাকরি থেকে বঞ্চিত

সুদীপ দাস , ২৪ জানুয়ারি:- জনপরিষেবা কে আরও সহজলভ্য করতে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষনা মতো শুরু হয়েছে “দুয়ারে সরকার” কর্মসুচী। কিন্তু বছর ঘুরলেও খোদ দিদির দপ্তরের চৌকাঠ পেরলো না একটি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল! ফলে ১০ বছর ধরে বহু শুকতলা ক্ষয়েও কর্তব্যরত স্বামীর মৃত্যুর পর ন্যার্য চাকরি থেকে বঞ্চিত মিলি। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে করজোড়ে আর্জি অবিলম্বে চাকরিটার ব্যাবস্থা করুন; না হলে সন্তানদের সাথে নিয়েই মৃত্যুর পথ বেছে নিতে হবে। মিলির স্বামী তুহিন রায় হাওড়ার ব্যাটরা থানা এলাকায় পুলিশ কর্মী হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ২০১১ সালের ১১ই জানুয়ারী ব্যাটরা থানা এলাকায় কর্তব্যরত অবস্থাতেই লরির ধাক্কায় মৃত্যু হয় তৎকালীয় ৩৫ বছরের তুহিনের। কর্তব্যরত অবস্থায় সরকারী কর্মীর মৃত্যু হলে মৃতের পরিবারের কারোর চাকরী পেতে বেশীদিন সময় লাগার কথা নয়।

কিন্তু মিলির ক্ষেত্রে তা কোনদিনই মেলেনি। পুলিশের ৪র্থ শ্রেনীতে চাকরীর আবেদন জানান স্বামীহারা মিলিদেবী। কিন্তু টানা ১ দশক ধরে নিজের ন্যার্য চাকরীর জন্য হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের এম মন্ত্রীর কাছে চাকররীর আবেদন করে নোংরা প্রস্তাবও মিলেছে বলে মিলিদেবীর দাবী। চাকরীর জন্য একবার কালিঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে গিয়েও নিরাপত্তাকর্মীদের ক্ষোভে মুখে পরেন তিনি। গত বছর জানুয়ারি মাসে নবান্নের চারতলায় হোম পুলিশের দপ্তর জানিয়েছিলো ১৩ তলায় মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে ফাইল রয়েছে। সেখান থেকে তাঁদের দপ্তরে ফাইল আসেনি। তারপর থেকে বহুবার হোম পুলিশের দপ্তরে গিয়ে একথাই শুনেছেন তিনি। চলতি মাসে গিলেই একই কথা বলা হয়েছে মিলিদেবীকে। ১৩তলা থেকে চারতলায় ফাইল নামতে যে একমাসের বেশী সময় লাগে তা তিনি দুস্বপ্নেও কোনদিন ভাবেননি।

বর্তমানে রায় দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে অঙ্কিতা দশম শ্রেনীর ছাত্রী। আর ছোট ছেলে অয়ন ৭ম শ্রেনীতে পরে। স্বামীর বেতনের সামান্য অংশ পেয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি ছেলেমেয়েদের পড়াশুনা করানো আর সম্ভব হয়ে উঠছে না। তাই রাজ্য সরকারের কাছে মিলিদেবীর করজোড়ে নিবেদন অবিলম্বে চাকরীটা না হলে দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে আমাকে আত্মহত্যার পথই বাছতে হবে। এখন একটু বড় হয়ে পরিবারে অর্থনৈতিক সমস্যার কথা বুঝতে পেরেছে। চুঁচুড়ার বাসিন্দা মিলিদেবীর দুই ছেলে মেয়েও। মেয়ে অঙ্কিতা বলে মায়ের চাকরিটা না হলে হলে আমার পড়াশুনা হয়তো বন্ধ করে দিতে হবে। আমরা পড়তে খুব ভালো লাগে। আমি পড়াশুনা করতে চাই!