কলকাতা , ১২ নভেম্বর:- রাজ্য সরকারের যুক্তি ও নিত্যযাত্রীদের দাবি মেনে যাত্রা শুরু করার দ্বিতীয় দিনেই বাড়তি ট্রেন চালানোর ব্যাপারে সম্মতি দিল রেল। একদিনের ব্যস্ত সময় ১০০ শতাংশ ট্রেনই চালানো হবে বলে স্থির করা হয়েছে। দীর্ঘ সাড়ে সাত মাস পর গতকাল লোকাল ট্রেন পরিষেবা ফের শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যাত্রীদের ভিড় উপচে পড়ে শিয়ালদা ও হাওড়ার বিভিন্ন শাখায়। বিপদ বুঝে বৃহস্পতিবার ফের রাজ্য সরকার ও রেলের প্রতিনিধিরা বৈঠকে বসে। অফিস টাইমে ট্রেনের সংখ্যা বাড়াতে সহ উভয় পক্ষই। সূত্রের খবর, অফিস টাইমে প্রায় ১০০ শতাংশ লোকাল ট্রেন চলতে পারে। রেল প্রতিনিধিরা জানান, মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে বিষয়টি নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবনাচিন্তা করে রাজ্যের আর্জি মেনে অফিস টাইমে ১০০ শতাংশ লোকাল চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবারের মতো বৃহস্পতিবারও ৬৯৬টি লোকাল ট্রেন চলছে। আর অফিস টাইমে চলছেচলছে ৭৫% লোকাল। নবান্নে এদিনের বৈঠক শেষে, রেল-রাজ্য যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে করে অফিস টাইমে ১০০ শতাংশ লোকাল ট্রেন চালানোর কথা ঘোষণা করে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে বুধবার থেকে রাজ্যে লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু হয়। সকাল থেকেই বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় দেখা যায়। টিকিট কাউন্টারের সামনে দেখা গিয়েছে লম্বা লাইন। সকাল থেকেই শিয়ালদা স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। শিয়ালদা থেকে নৈহাটি, ব্যারাকপুর, রানাঘাট, কৃষ্ণনগর যাওয়ার লোকাল ট্রেন ছেড়েছে। বারাসত, হাসনাবাদ লাইনেও শুরু হয়েছে পরিষেবা। শিয়ালদা দক্ষিণ শাখাতেও পরিষেবা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি বজবজ, ডায়মন্ড হারবার, লক্ষ্মীকান্তপুরের দিকে ট্রেন ছেড়েছে শিয়ালদা থেকে। দমদম, নিউ গড়িয়ার মতো মেট্রো সংলগ্ন স্টেশনগুলিতেও রাখা হয়েছে বিশেষ নজরদারি। ট্রেন থেকে নেমে যারা মেট্রো ধরার জন্য আসবেন, সেই সব গেটেও ভিড় নিয়ন্ত্রণে তৎপর রয়েছে রেল পুলিশ।
মঙ্গলবার অন্তিম প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন পূর্ব রেল ও জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা। রেল ও রাজ্য প্রশাসনের আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, মাস্ক ছাড়া কোনওভাবেই যাত্রীদের স্টেশনের ভিতরে প্রবেশ করা যাবে না। স্টেশনে ঢোকার আগে প্রত্যেকের থার্মাল স্ক্রিনিং করা হবে। তাপমাত্রা বেশি থাকলে আইশোলেশন রুমে সেই যাত্রীকে রাখা হবে। প্রয়োজনে তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্স করে হাসপাতালেও পাঠানো হতে পারে। করোনা সংক্রমণ রুখতে মঙ্গলবারই জরুরি গাইডলাইন জারি করেছে নবান্ন। গাইড লাইন অনুযায়ী, যাত্রীদের মাস্ক বা ফেসকভার বাধ্যতামূলক, স্যানিটাইজ করা, প্রতিটি প্ল্যাটফর্মের শৌচাগার পরিষ্কার রাখার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি যাত্রী সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে মোতায়েন করা হবে জিআরপি ও রাজ্যপুলিশ, ট্রেনের সময়সূচি প্রচার করতে হবে আরও বেশি করে। একইসঙ্গে জিআরপি ও রাজ্যপুলিশকে সাহায্য করার জন্য সঙ্গে থাকবে আরপিএফের নিরাপত্তাকর্মীরাও। তবে যেভাবে ভিড় হচ্ছে তাতে করে করোনা সংক্রমণ রোখাটাই এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ রেল ও রাজ্যের কাছে। তার জন্য কোভিড নিয়ম মেনে যাবতীয় ব্যবস্থা করা হচ্ছে।