এই মুহূর্তে কলকাতা

শিয়ালদা পর্যন্ত সুরুঙ্গ খোঁড়া শেষ করল উর্বী , তৈরি হল ইতিহাস।

কলকাতা , ৯ অক্টোবর:- কলকাতার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের মুকুটে যোগ হল নতুন পালক। শুক্রবার হাওড়া-ময়দান থেকে শিয়ালদা পর্যন্ত সুরঙ্গ খোঁড়ার কাজ সেষ করল টানেল বোরিং মেশিন উর্বী। এদিন শিয়ালদহে নির্মিয়মান স্টেশনে মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে সুড়ঙ্গ খননকারী যন্ত্র উর্বী। এর ফলে সুড়ঙ্গপথে জুড়ে গেল হাওড়া ময়দানের সঙ্গে ফুলবাগান। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে ধর্মতলা থেকে শিয়ালদহের দিকে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু হয়। কিন্তু গত বছর অগস্টের পরেই সেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সুড়ঙ্গে বিপর্যয়ের কারণেই এই কাজ বন্ধ করতে হয়। অবশ্য হাইকোর্টের নির্দেশের পরে চলতি বছর জানুয়ারি মাসে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ ফের শুরু হয়। নতুন করে কাজ শুরু করে উর্বী ও চণ্ডী। কিন্তু অগস্ট মাসে অকেজো হয়ে যায় চণ্ডী।

যদিও উর্বী নিজের কাজ চালিয়ে যায়। এমনকি অগস্ট মাসের পর থেকে দুটি মেশিনের কাজ সে একাই করে। এরপর শিয়ালদহ থেকে বৌবাজার পর্যন্ত চণ্ডীর অসমাপ্ত কাজ এবার উর্বী শেষ করবে বলে জানা গিয়েছে মেট্রো সূত্রে। গত কয়েক দশকে অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে প্রকল্পের কাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এদিন শেষ করলেন ইঞ্জিনিয়াররা। কখনো রাজনৈতিক স্বার্থ, কখনো ব্যক্তিগত প্রত্যাশা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই প্রকল্পের। যার ফলে বার বার থমকে গিয়েছে প্রকল্প। গত সেপ্টেম্বরে বউবাজার বিপর্যয়ের পর প্রকল্পের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে পড়ে যায়। আদালতের জট কাটিয়ে ফের এগোতে শুরু করে উর্বী। অবশেষে এই পর্বে শেষ হল তার যাত্রা। গত রবিবার শিয়ালদহ ফ্লাইওভারের নীচ দিয়ে সুড়ঙ্গ খোড়ার কাজ করে উর্বী। তার জেরে ৩ দিন বন্ধ ছিল বিদ্যাপতি সেতু।

তার পরই মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয় শুক্রবার শেষ হবে এই পর্বে সুড়ঙ্গ খোড়ার কাজ। মাহেন্দ্রক্ষণের সাক্ষী থাকতে এদিন নির্মিয়মান স্টেশনে হাজির ছিলেন কেএমআরসিএল ও ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থার কর্মীরা। মহাসমারহে উর্বীকে স্বাগত জানান তাঁরা। সুড়ঙ্গের কাজ শেষ হতেই মাটির নীচে ওড়ানো হয় জাতীয় পতাকা। কেএমআরসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, বউবাজারে টানেল বোরিং মেশিন চণ্ডী আটকে পড়ায় উর্বীকে দিয়েই শিয়ালদহ – বউবাজার পর্যন্ত অপর সুড়ঙ্গ খোড়ার কাজ করা হবে। তার পর এক বিশাল গহ্বর তৈরি করে তুলে ফেলা হবে যন্ত্রদুটিকে। ইতিমধ্যে বউবাজারে তৈরি করা হয়েছে সেই গহ্বর। এদিন উর্বী শিয়ালদহে পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গেই পাতালপথে জুড়ে গেল ফুলবাগানের সঙ্গে হাওড়া ময়দান। যার মোট দূরত্ব প্রায় ১০.৩ কিলোমিটার।